ডিবি পুলিশ পরিচয়ে প্রথমে আটক, পরে মুক্তিপণ দাবি। টাকা আদায়ের পর আবারও গ্রেফতারের ভয় দেখিয়ে টাকা দাবি। শুধু- অপহরণ নয়, চুরি-ছিনতাই থেকে শুরু করে নানা অপরাধকর্মে জড়িত তারা। এরকম একটি চক্রকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
চক্রের সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন কথিত এক যুবলীগ নেতা, বিদেশি ডিগ্রিধারী ব্যক্তি ও মাদরাসা থেকে পাস করা শিক্ষার্থীও।
২০ ডিসেম্বর ধারের ৫০০ টাকা ফেরত দেয়ার নাম করে মিরপুর সরকারি বাংলা কলেজের শিক্ষার্থী রায়হান বিন আব্দুল্লাহকে ডেকে নেন তারই বন্ধু জালাল উদ্দিন। যাওয়ার পর তাকে আটক করা হয়। হঠাৎ সেখানে হাজির হন ৪ জন অপরিচিত ব্যক্তি। যারা নিজেদেরকে ডিবি পুলিশ পরিচয় দেন। মোবাইল ফোনে জোরপূর্বক ইয়াবা ট্যাবলেটসহ রায়হানের ছবি তোলা হয়। মিরপুরের দক্ষিণ পাইকপারার একটি বাসাকে ব্যবহার করা হয় নির্যাতন সেল হিসেবে।
অপহৃত রায়হান বিন আব্দুল্লাহ বলেন, "বাসার ভেতরে আসার পর আমাকে আটকে ফেলে। এর পর তিন জন লোক এসে আমাকে টর্চার করে এবং ছবিগুলো তোলে।"
রায়হানের বাবার মুঠোফোনে কল দিয়ে তার কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করা হয়। রায়হানের বাবা মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, "তারা বলছিল এর (রায়হানের) ভবিষ্যত যেন নষ্ট না হয় এজন্য একটা সমঝোতায় আসেন। আমি বললাম সমঝোতা কি? তারা তখন বললো পাঁচ লাখ টাকা দিতে হবে।"
ভুয়া ডিবি পরিচয়ে চাঁদাবাজি করা এই অপহরণ চক্রের ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে জালাল উদ্দিন হাটহাজারি মাদরাসা থেকে মেশকাত পাস করা। রোমিও আমেরিকা থেকে নিয়েছেন ইন্টেরিওর ডিজাইনের ওপর ডিগ্রি। চক্রের আরেক সদস্য ইমরানুল হোসেন নিজেকে পরিচয় দিয়েছেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সদস্য হিসেবে। ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকারও করেছেন তারা।
পুলিশ বলছে এই চক্রের সদস্যরা ছোট খাটো চুরি ছিনতাই থেকে শুরু করে অপহরণ সবই করে থাকে। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা উত্তর বিভাগ এর উপ-পুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান জানান, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মানুষের কাছে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেয় তারা এবং তারা সবশেষ অপহরণে লিপ্ত হয়।
এরকম কতগুলো ঘটনায় জড়িত তা জানতে চক্রের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।