মাগুরায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শিখনফল মূল্যায়নে অ্যাসাইনমেন্ট জমা নেয়াকে সুযোগ হিসেবে নিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিভিন্ন ফি বাবদ অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।
করোনার প্রাদুর্ভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও ওই সময়ের টিফিন ফি, মাসিক বেতন, পরীক্ষা ফি থেকে শুরু করে যাবতীয় খাতের টাকা একসঙ্গে পরিশোধ করতে বাধ্য হচ্ছে বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ।
এছাড়াও অ্যাসাইনমেন্ট বাবদ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোনো অর্থ আদায় করা যাবে না; শিক্ষা অধিদফতর এমন নির্দেশনা থাকলেও প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা তা মানছেন না।
এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রণজিত কুমার মজুমদার বলেন, শিক্ষা অধিদফতর থেকে পরিষ্কার করে বলে দেয়া হয়েছে যে- ‘অ্যাসাইনমেন্ট বাবদ কারও কাছ থেকে কোনো অর্থ আদায় করা যাবে না।’ কিন্তু, কোনো প্রতিষ্ঠানের প্রধান এমন কাজ করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণেরও নির্দেশনাও দেয়া হয়নি।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, মাগুরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা এক হাজার ২৬৫ জন।
মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরের নির্দেশনা অনুযায়ী ৭ নভেম্বর বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তিনটি বিষয়ের ওপর অ্যাসাইনমেন্ট জমা নেয়া হয়।
এর আগে শিক্ষার্থীদের যাবতীয় বকেয়া পরিশোধের জন্য বিদ্যালয় থেকে নোটিশ দেয়া হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে বিদ্যালয়টি ইতোমধ্যেই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিফিন ফি, পরীক্ষার ফি, বিগত মাসের বেতনসহ বিভিন্ন খাতের অনুকূলে প্রায় ২৯ লাখ টাকা আদায় করেছে।
একই অভিযোগ মহম্মদপুর উপজেলার ডুমুরশিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ আরও অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেও। তবে আরও এক ধাপ এগিয়ে সদর উপজেলার তিতারখাঁ পাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়।
প্রতিষ্ঠানটি অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে নতুন বাণিজ্য ফেঁদে বসেছেন। বিদ্যালয়ের সাড়ে ৪শ’ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে অন্য ফি গ্রহণের পাশাপাশি অ্যাসাইসেন্ট ফি বাবদ প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকেই আদায় করছে ২শ’ টাকা করে।
বদর উদ্দিন মণ্ডল নামে একজন অভিভাবক জানান, তার দুটি ছেলে লেখাপড়া করে। অটোরিকশা চালিয়ে সন্তানদের খরচ জোগাড় করতে হয় তার।
এখন শিক্ষকরা টাকা চাইলে না দেয়ার তো কোনো উপায় নেই। একই বিদ্যালয়ের অভিভাবক জবেদা বেগম জানান, টাকা না দিলে সন্তানদের ক্ষতি হতে পারে সেই ভয়ে দিতে হচ্ছে।
এসব অভিযোগ নিয়ে উল্লিখিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বললে তারা টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
তবে পরীক্ষার ফি কিংবা বেতন নেয়া যাবে না শিক্ষা অধিদফতর থেকে এমন কোনো পরিপত্র না পাওয়ার কথা জানান তারা। মাগুরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জিয়াউল হাসান বলেন, বন্ধ থাকলেও বিদ্যালয়ের অনেক খরচ।
সেগুলো শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে না নিলে চলা সম্ভব নয়। তবে টিফিন বাবদ নেয়া ফি ফেরত দেয়া হবে।