আইডিয়াল স্কুলে গভর্নিং বডির সিদ্ধান্ত ছাড়াই ফি ধার্য, অভিভাবকদের অসন্তোষ - দৈনিকশিক্ষা

আইডিয়াল স্কুলে গভর্নিং বডির সিদ্ধান্ত ছাড়াই ফি ধার্য, অভিভাবকদের অসন্তোষ

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক: শিক্ষার্থী প্রতি দুই থেকে তিন হাজার টাকার বিভিন্ন ভাতা ও চার্জ চাপিয়ে দিয়েছে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ। গত ২৯ মার্চ সহকারী প্রধান শিক্ষক মনিরুল হাসান স্বাক্ষরিত এক নোটিশে প্রায় সব শিক্ষার্থীদের কাছে বিভিন্ন অঙ্কের ফি ও টাকা ধার্য করা হয়। গত জানুয়ারিতে নতুন ভর্তি ও পূণভর্তির সময় যেসব ভাতা ও চার্জ নেয়া হয়েছিল সেগুলির অধিকাংশই নতুন করে ধার্য করা হয়েছে। শিক্ষাবর্ষ শুরুর তিনমাসের মধ্যে হঠাৎ এ ধরণের ব্যয় ধার্য করায় তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছে প্রতিষ্ঠানটির তিন ক্যাম্পাসের প্রায় ২৮ হাজার শিক্ষার্থীর অভিভাবকের মধ্যে। এ বিষয়ে গভর্নিং বডির চেয়ারম্যানকেও কোনো কিছু জানানো হয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সম্প্রতি প্রথম শ্রেণীর ‘ছাত্র-ছাত্রীদের বেতন ও অন্য ফি আদায়ের বিবরণ’ শীর্ষক এক নোটিশে দেখা গেছে, বার্ষিকী ২০০ টাকা, আর্থিক সাহায্য ২০০ টাকা, রিপোর্ট কার্ড ৩০০ টাকা, বিদায় অনুষ্ঠান ১০০ টাকা ও জাতীয় অনুষ্ঠান ২০০ টাকা ধরা হয়েছে। আর ডায়েরি, সিলেবাস ও ওয়াসা পৌরকর, জেনারেটর, আইডিকার্ড ও অন্য ৯৫০ টাকা। সবমিলিয়ে মোট এক হাজার ৯৫০ টাকা। মাসিক বেতনের বাইরে এই টাকা অতিরিক্ত হিসেবে আদায় করা হচ্ছে বলে অভিভাবকরা জানিয়েছেন।

আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের তিনটি শাখা (ক্যাম্পাস) রয়েছে। এর প্রধান ক্যাম্পাস মতিঝিলে। আর রামপুরা বনশ্রী ও মুগদা সড়কের পাশে দুটি শাখা ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এই তিন ক্যাম্পাসে প্রথম শ্রেণী থেকে একাদশ শ্রেণী পর্যন্ত প্রায় ২৮ হাজার শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে।

এ বিষয়ে ‘আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ গার্ডিয়ান সোসাইটির’ সভাপতি ও রামপুরা বনশ্রী শাখার এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক কেএম সাইফুর রহমান (খোকন) বলেন, শিক্ষাবর্ষের শুরুতে ভর্তির সময় নানা অজুহাতে আট থেকে দশ হাজার টাকা ভর্তি ফি নিয়ে থাকে। এরপর দু’তিন মাস পরই এভাবে শিক্ষার্থী প্রতি দুই থেকে তিন হাজার টাকা ধার্য করা ‘অমানবিক’। তিনি শিক্ষার নামে এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে এই ধরণের ‘বাণিজ্য’ বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।

প্রতিষ্ঠানটির দু’জন শিক্ষক ও গভর্নিং বডির সাবেক দু’জন সদস্যের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় ২৮ হাজার শিক্ষার্থীর কাছ থেকে জনপ্রতি অন্তত দুই হাজার টাকা করে আদায় হলে মোট প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা আদায় হয়। বেতনভাতার অতিরিক্ত হিসেবে বছরে দু’তিনবার এভাবে অভিভাবকদের ‘জিম্মি’ করে টাকা আদায় করা হয়।

একাধিক শিক্ষক ও অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গভর্নিং বডির ‘সম্মতির’ ভিত্তিতেই এভাবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হয়। তা ব্যয় দেখানো হয়, গভর্নিং বডির বিভিন্ন সভার ‘সম্মানী’, ‘আপ্যায়ন’ ও বিভিন্ন ‘কেনাকাটার’ নামে। শিক্ষকরাও নানা ‘অজুহাত’ দেখিয়ে এই টাকার ‘ভাগ নিয়ে থাকেন। নির্বাচিত গভর্নিং বডির মেয়াদ শেষ হওয়ায় বর্তমানে ‘অ্যাডহক’ প্রতিষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে। 

প্রতিষ্ঠানটির গভর্ণিং বডির সাবেক সদস্য গোলাম আশরাফ তালুকদার বলেন, ‘বর্তমানে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রশাসনিক কাঠামো ভেঙে পড়েছে। প্রশাসনিক পুরো কার্যক্রম জামায়াতপন্থী লোকজনের নিয়ন্ত্রণে। তারা যা খুশি তাই করছেন।’

অভিযোগগুলির বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ইমাম হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার সেলফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি ধরেনি।

মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ‘বাড়তি চার্জ ও ফি আদায়ের বিষয়টি আমার নলেজে নেই। আমি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেবো।’

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) পরিচালক (মাধ্যমিক) অধ্যাপক সৈয়দ জাফর আলী বলেছেন, ‘স্কুলগুলি শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই তাদের যাবতীয় ফি নিয়ে থাকে। বছরের তিনমাসের মাথায় নতুন করে কোনো ফি আদায়ের সুযোগ নেই। মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের বিরুদ্ধে এ ধরণের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

১৮তম প্রিলির ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৯৮১ - dainik shiksha ১৮তম প্রিলির ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৯৮১ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ৫ হাজার ৪৫৬ - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ৫ হাজার ৪৫৬ সাড়ে ৪ মাসে ১৮৮ শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, বিশেষজ্ঞরা যেসব বিষয়কে দায়ী করছেন - dainik shiksha সাড়ে ৪ মাসে ১৮৮ শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, বিশেষজ্ঞরা যেসব বিষয়কে দায়ী করছেন শতভাগ ফেল স্কুল-মাদরাসার বিরুদ্ধে ব্যবস্থার উদ্যোগ - dainik shiksha শতভাগ ফেল স্কুল-মাদরাসার বিরুদ্ধে ব্যবস্থার উদ্যোগ দুর্নীতির অভিযোগে বরখাস্ত শিক্ষা কর্মকর্তা - dainik shiksha দুর্নীতির অভিযোগে বরখাস্ত শিক্ষা কর্মকর্তা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে শ্রীপুরে গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর ভাইয়ের প্রার্থিতা বাতিল - dainik shiksha শ্রীপুরে গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর ভাইয়ের প্রার্থিতা বাতিল এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বিএনপি-জামায়াত মানুষের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ করে দেয় : প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha বিএনপি-জামায়াত মানুষের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ করে দেয় : প্রধানমন্ত্রী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0048599243164062