আত্মহনন রোধে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতাবোধ জাগ্রত করুন - দৈনিকশিক্ষা

আত্মহনন রোধে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতাবোধ জাগ্রত করুন

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

২০১৯ সালের এসএসসি পরীক্ষার ফল ৬ মে প্রকাশিত হয়েছে। ১০টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত এসএসসি ও সমমানের এই পরীক্ষায় ২১ লাখ ২৭ হাজার ৮১৫ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছিল।

তাদের মধ্যে ১৭ লাখ ৪৯ হাজার ১৬৫ জন পাস করেছে। অকৃতকার্য শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩ লাখ ৭৮ হাজার ৬৫০ জন। প্রকাশিত ফলে অকৃতকার্য হয়ে এ পর্যন্ত কয়েকজন শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।  বুধবার (১৫ মে) দৈনিক যুগান্তরের প্রকাশিত নিবন্ধে এতথ্য জানা যায়। নিবন্ধনটি লিখেছেন মুহাম্মাদ রিয়াজ উদ্দিন

এ ছাড়াও একাধিক শিক্ষার্থী বিভিন্ন উপায়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছে বলে জানা গেছে।

ঢাকার ধামরাই উপজেলার ফারজানা আক্তার নামের এক শিক্ষার্থী ওড়না প্যাঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে। ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার মধুপুর নয়াদিঘী এম রফিক আলিম মাদরাসা থেকে দাখিল পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়ে সাহাব উদ্দিন, টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার আথাইল শিমুল উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী জিপিএ-৫ না পাওয়ায় আসফিয়া মুন্না নিপা, গাইবান্ধার পলাশবাড়ি কাশিয়াবাড়ি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পার্বতী রানি, লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ রাব্বানিয়া কামিল মাদ্রাসার সুরাইয়া আক্তার, বরিশালের মুলাদী উপজেলার শ্রীমতি মাতৃমঙ্গল বালিকা বিদ্যালয়ের হেপি আক্তার, নড়াইল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী ইলা খানম গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা এবং ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার রাকিবুল ইসলাম ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।

এ ছাড়াও কয়েকটি জেলায় অকৃতকার্য কিংবা কাঙ্ক্ষিত ফল না পেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে শিক্ষার্থীরা।

অকালে ঝরে পড়া এসব তরুণ-তরুণী জীবনের গুরুত্ব বুঝতে পারেনি বলেই আত্মহত্যার মতো একটি নিন্দনীয় কাজের মাধ্যমে নিজের জীবন শেষ করে দিয়েছে।

এসব শিক্ষার্থীকে জীবনের গুরুত্ব বোঝানোর দায়দায়িত্ব আসলে কাদের ওপর বর্তায়? দশটি বছর যে প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করেছে, লেখাপড়ার মাধ্যমে যে জ্ঞান অর্জন করেছে; তার যথাযথ মূল্যায়ন হলে নিশ্চয়ই এ ধরনের দুঃখজনক ঘটনা ঘটত না।

শিক্ষার্থীদের বলছি- পরীক্ষায় অকৃতকার্য হলেই কি জীবন শেষ করে দিতে হবে? অকৃতকার্য হওয়া মানেই কি জীবনে আর কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই? দশটি বছর শ্রেণীকক্ষে শিক্ষক পাঠদান করেছেন, অভিভাবকরা কষ্ট করেছেন; এসব কি তাহলে বৃথা? এসব বিষয় ভাবতে হবে গভীরভাবে।

পৃথিবীতে এমন অনেক মানুষ আছেন, যারা প্রাতিষ্ঠানিক পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েও স্বীয় প্রচেষ্টায় জীবনে সাফল্যের উচ্চ সিঁড়িতে পৌঁছেছেন। ব্যক্তিজীবনে তারা সফলতা অর্জন করে সবার কাছে জনপ্রিয় হয়েছেন।

অনেক লেখক, রাজনীতিবিদ, শিল্পী পরীক্ষায় সফলতা না পেলেও জীবনযুদ্ধে সফলতা পেয়ে আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন।

সফল উদ্যোক্তা, রাজনীতিবিদ, শিল্পী, লেখক, বিজ্ঞানী- সবাইকেই ব্যর্থতার কঠিন পথ পাড়ি দিয়ে সফল হতে হয়েছে।

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন, বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন, মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস, চীনের ব্যবসায়ী আলিবাবার প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মা, বিজ্ঞানী টমাস আলভা এডিসন এরা কেউই একদিনে নামকরা ব্যক্তিতে পরিণত হননি। ব্যর্থতার ঘাত-প্রতিঘাতের পর সফলতার মুখ দেখেছেন। পৃথিবীজুড়ে আজ তাদের সাফল্যের গল্প।

দেশের তরুণ জনগোষ্ঠীকে জীবনের যথার্থতা সম্পর্কে সচেতন করার দায়িত্ব আমাদের ওপরও বর্তায়। ব্রিটিশ রাজীনীতিবিদ উইনস্টন চার্চিলের ভাষায় বলতে হয়- ‘ব্যর্থতা মানেই সব শেষ নয়; ব্যর্থতার পরও এগিয়ে যাওয়ার সাহস রাখতে হবে।’

চার্চিলও ব্যক্তি জীবনে অনেক ব্যর্থতার পর সফলতা অর্জন করেছেন। সফল ব্যক্তিদের জীবনী পাঠ করে শিক্ষার্থীরা জীবন সম্পর্কে আরও সচেতন হয়ে উঠুক, এটাই প্রত্যাশা।

শিক্ষার্থী, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট

 

সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান - dainik shiksha সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! - dainik shiksha শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! হিটস্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু লিখিততে প্রক্সি দিয়ে পার, মৌখিক পরীক্ষায় এসে ধরা - dainik shiksha লিখিততে প্রক্সি দিয়ে পার, মৌখিক পরীক্ষায় এসে ধরা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষক কেনো বদলি চান - dainik shiksha শিক্ষক কেনো বদলি চান ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে - dainik shiksha ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0045268535614014