গত ১৮ নভেম্বর থেকে প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি সমাপনী পরীক্ষা শুরু হয়েছে। ৩০ লাখ ৯৬ হাজার ৩৩১ শিক্ষার্থী এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে । পরীক্ষার প্রথমদিনে ইংরেজি পরীক্ষায় গোটা দেশে অনুপস্থিত ছিল ১ লাখ ৬০ হাজার ১৬৮ জন পরীক্ষার্থী। গত বছরও প্রথমদিনে ৩০ লাখ ৯৬ হাজার ৭৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৩৮৩ জন অনুপস্থিত ছিল। প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীদের অনুপস্থিতির কারণ এবং এই পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে সম্প্রতি কথা বলেছেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম।
প্রথমত, আমার কাছে এটা খুবই অপ্রয়োজনীয় একটা পরীক্ষা মনে হয়। শিশুদের কাছে এটা একটা বোঝার মতো। এই পরীক্ষা নিয়ে কার স্বার্থ যে রক্ষা হচ্ছে কে জানে। তবে একমাত্র নোটবুক আর টিউশন বাণিজ্য যারা করছে তাদের ছাড়া কারও স্বার্থ রক্ষা হওয়ার কথা নয়। শিশুরা তোতা পাখির মতো পড়া মুখস্থ করে পরীক্ষার হলে বসছে। এ ধরনের পরীক্ষার কোনো অর্থ নেই। আদর্শিকভাবে আমি এই পরীক্ষার ঘোর বিরোধী।
প্রতি বছরই প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় শিক্ষার্থীরা অনুপস্থিত থাকছে। এর অনেক কারণও আছে। গ্রাম আর শহরে পড়াশোনার মধ্যে বিস্তর পার্থক্য রয়েছে। গ্রামে দক্ষ প্রাইমারী শিক্ষকেরও ঘাটতি আছে। একটা অসম শিক্ষা পদ্ধতির মধ্যে শিশুরা বেড়ে উঠছে। এরকম একটা পাবলিক পরীক্ষায় অংশ নিতে গিয়ে শিশুরা ভয় পাচ্ছে। প্রতি বছরই পরীক্ষার আগে অনেক শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ে। এই কারণেও অনেকে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে না। সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী অনেক শিশু আবার বাড়িতেও কাজ করে। এসব মিলিয়েই প্রতি বছর পরীক্ষার্থীদের একটা বড় অংশ পরীক্ষায় অনুপস্থিত থাকছে। আমি চাইবো, আগামী বছর থেকেই যেন কোমলমতি শিশুদের এ ধরনের পাবলিক পরীক্ষা থেকে মুক্ত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।