একটি পরিবারের সদস্য সংখ্যা ২১ জন। তাদের মধ্যে ৫ ভাই-বোন সোজা হয়ে দাঁড়াতেই পারেন না। আদিম মানুষের মতোই সামনের দিকে ঝুঁকে মুখটা উপরের দিকে তুলে চার হাত-পায়ে ভর দিয়ে চলাফেরা করেন তারা। তাদের মেরুদণ্ডে, হাঁটুতে, পায়ে বা কোমরে কোনো গুরুতর সমস্যা নেই। তবুও সোজা হয়ে দাঁড়াতেই পারেন না!
জানা যায়, আগে এই ৫ ভাই-বোনের কথা কেউ জানতো না। ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দে বিবিসির একটি তথ্যচিত্রের মাধ্যমে জানা যায় তাদের কথা। তখন থেকে ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত মস্তিষ্কের স্ক্যান, রক্তের নমুনা—কিছুই বাদ যায়নি। তবুও তেমন কোন সমস্যা ধরতে পারেননি চিকিৎসকরা।
সূত্র জানায়, দক্ষিণ তুরস্কের হাতায় প্রদেশের একটি গ্রামে বসবাস করেন তারা। প্রথম এ পরিবারের খোঁজ পান তুরস্কের বিজ্ঞানী উনের ট্যান। ট্যান এই ৫ ভাই-বোনকে দীর্ঘদিন পর্যবেক্ষণ করেন। তিনি মনে করেন, এর পেছনে রয়েছে বিপরীত বিবর্তন। ওই বিজ্ঞানীর নামানুসারে এ পরিস্থিতির নামকরণ করা হয় ‘উনের ট্যান সিন্ড্রোম’।
তবে ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে ব্রিটিশ বিজ্ঞানীদের একটি গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়, বিপরীত বিবর্তনের ফলে নয়, ‘সেরিবেলার হাইপোপ্লাসিয়া’ নামের বিরল জিনগত সমস্যার কারণে সোজা হয়ে হাঁটতে পারেন না তারা। বিজ্ঞানীরা জানান, এ রোগে শরীরের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। ফলে সোজা হয়ে দাঁড়ানো একেবারে অসম্ভব হয়ে পড়ে।
কিন্তু বিজ্ঞানীরা যা-ই বলুন না কেন, স্থানীয় মানুষ এখনো তাদের দেখলে তাড়া করে, পাথর ছোড়ে, হাসি-ঠাট্টা ও কটূক্তির মাধ্যমে উত্ত্যক্ত করে। তাই তারা বাড়ির বাইরে তেমন একটা বের হন না। দিনের বেশিরভাগ সময় লোকচক্ষুর আড়ালেই কাটে তাদের সময়।
