আধুনিক শিক্ষা ও নৈতিকতা - দৈনিকশিক্ষা

আধুনিক শিক্ষা ও নৈতিকতা

নূরে আলম সিদ্দিকী নূর |

আমরা প্রাইমারি স্কুলে পড়েছি- শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। এই কথাটি আমরা মুখস্থ করেছি, পরীক্ষায় প্রশ্নের উত্তরেও লিখেছি। এই শিক্ষা নিয়ে কেউ ডাক্তার হয়েছেন, কেউ ইঞ্জিনিয়ার, কেউবা হয়েছেন বুদ্ধিজীবী, আবার কেউ শিক্ষকও হয়েছেন। 

যুগের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বর্তমান সময়ে আমরা অনেকটা এগিয়ে গেছি। যদিও একসময় এদেশের মানুষ না খেয়ে মরেছে; কিন্তু এখন কম বাড়িতেই ভাতের অভাব আছে। শিক্ষা, খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসা, বাসস্থান ও বিনোদনেরও অভাব নেই। এখন আমাদের নতুন প্রজন্মের অনেকে মরে ফেনসিডিলের অভাবে, ইয়াবার অভাবে! আর এসব মাদকের অভাবে যারা মরছে, তাদের অধিকাংশই উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তান।

যারা এসব সেবন করছে, তারাও কিন্তু শিক্ষিত পরিবারের সন্তান। তাদের বাড়িতে সন্তানকে মানুষ করার জন্য দিনে দু’বেলা প্রাইভেট টিউটর রাখা হয়। আমাদের দেশে প্রতি বছর হাজার হাজার শিক্ষার্থী এ প্লাস পেয়ে বের হচ্ছে। সরকার কোমলমতি শিশুদের নৈতিক শিক্ষায় উন্নত করার উদ্দেশ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নৈতিক শিক্ষা বিষয়ে লাখ লাখ বই সরবরাহ করছে। এ বইগুলো ছাত্রছাত্রীরা পড়ছে। পড়ে পরীক্ষায় এ প্লাসও পাচ্ছে। বইগুলো পড়ে আমাদের সন্তানদের তো নৈতিক শিক্ষায় উন্নত হওয়ার কথা, আলোর পথে পা বাড়ানোর কথা। শিক্ষা দিয়ে জাতির মেরুদণ্ড সোজা করার কথা। কিন্তু ঘটছেটা কী? মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিক পড়া শেষ করে যাদের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে যাওয়ার কথা, তাদের অনেকে এখন মাদকাসক্ত, সংশোধনাগার বা জেলখানায়!

প্রশ্ন উঠতে পারে, নামি-দামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিজ্ঞ শিক্ষক, নৈতিক শিক্ষার বই, দু’বেলা প্রাইভেট টিউটর, সন্তানের জন্য মায়ের নাওয়া-খাওয়া বন্ধ করা- এত কিছুর পরও কেন আমাদের সন্তানরা আলোর পথ দেখছে না? এবার একটু ভাবুন তো, আপনি যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আপনার সন্তানকে ভর্তি করিয়েছেন তা কি মানসম্মত? সেখানে পড়ার পরিবেশ কেমন? শিক্ষকদের নৈতিক চরিত্র কেমন? আপনার সন্তান কার সঙ্গে চলাফেরা করে, সে বিষয়ে আপনি বা আপনার শিক্ষক নিয়মিত খোঁজখবর নেন কিনা।

এবার আসি অন্যদিকে। যে প্রতিষ্ঠানে একজন শিক্ষক নেশা করেন, মাদক ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত, সেই প্রতিষ্ঠান মাদকমুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু? সেই শিক্ষক দিয়ে নৈতিক শিক্ষার বই পড়ানো হলে তা আপনার সন্তানের জীবনে কতখানি কাজে লাগবে? এ প্রসঙ্গে বলে রাখি- আমি সব শিক্ষকের কথা বলছি না। বলছি তাদের কথা, যাদের সঙ্গে মাদকের সম্পর্কটা দৃঢ়। যে শিক্ষক ওই প্রতিষ্ঠানে চাকরি নেয়ার সময় ডোনেশন নামক ১০-১৫ লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে মেধা তালিকায় প্রথমে থাকা নিরীহ মানুষটিকে পরাস্ত করে গর্বের সঙ্গে শিক্ষকতা করছেন, সেই শিক্ষক দিয়ে ওই প্রতিষ্ঠানে আপনি আপনার সন্তানের জন্য কতটুকু নৈতিক শিক্ষা আশা করবেন?

আগামীতে সোনার বাংলা গড়তে হলে আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি নৈতিক চরিত্রে বলীয়ান শিক্ষকের দ্বারা অর্জিত জ্ঞানকে কাজে লাগাতে হবে। আর এটিই এখন আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এজন্য প্রয়োজন চিন্তার পরিবর্তন, নৈতিক চিন্তার উন্নয়ন ও বাস্তবায়ন। আসুন, আমরা সবাই মিলে আমাদের প্রিয় জন্মভূমিতে আমাদের নতুন প্রজন্মকে আলোর পথ দেখাই। সেই আলোতে বাংলাদেশ হোক আলোকিত।

লেখক : সংগঠক ও মানবাধিকার কর্মী

সূত্র: যুগান্তর

শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল - dainik shiksha ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন - dainik shiksha চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0033900737762451