আনন্দ মোহন কলেজ ছাত্র সংসদ মামলায় অকার্যকর - Dainikshiksha

আনন্দ মোহন কলেজ ছাত্র সংসদ মামলায় অকার্যকর

মীর গোলাম মোস্তফা |

আনন্দ মোহন কলেজ ছাত্র সংসদের (আমোকসু) সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছে ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দের ১২ আগস্ট। তার পর গত ১৪ বছরে আর নির্বাচন হয়নি ময়মনসিংহের ঐতিহ্যবাহী এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। 

২০০৪ খ্রিষ্টাব্দে আমোকসু নির্বাচনে জয়ী হয়েছিল বাংলাদেশ ছাত্রলীগের মুকুল-লিটু পরিষদ। তাদের বিরুদ্ধে তখন মামলা দিয়ে গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হয়। তার পর তৎকালীন ছাত্র সংসদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে শুরু করেন ছাত্রদলের কয়েক নেতা। এভাবে নির্বাচিত ছাত্র সংসদ অকার্যকর হয়ে পড়ে এবং অনির্বাচিতদের হাতে সংসদের নেতৃত্ব চলে যায়।

উপমহাদেশের প্রথম র‌্যাংলার, শিক্ষাবিদ ও সমাজ সংস্কারক আনন্দ মোহন বসু এ কলেজের প্রতিষ্ঠাতা। ১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দে আনন্দ মোহন কলেজ যাত্রা শুরু করে। ১৯৬৩-৬৪ শিক্ষাবর্ষে এটি বেসরকারি থেকে সরকারি কলেজে রূপান্তর হয়। প্রায় ৩২ হাজার শিক্ষার্থী এ কলেজে লেখাপড়া করেন। উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে এখানে বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক- এই তিনটি বিষয়ে ছাত্রছাত্রী ভর্তি করা হয়। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয় ২০টি বিষয়ে।

২০০৪ খ্রিষ্টাব্দে আমোকসু নির্বাচনে বিজয়ী সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন লিটু জানান, নির্বাচনের পর সেপ্টেম্বর মাসে চারদলীয় জোট সরকারের পুলিশ পাহারায় সংসদ নেতাদের শপথ অনুষ্ঠান হয়। এর পর নিয়মিত সংসদ পরিচালনার জন্য কলেজের অধ্যক্ষ বা পদাধিকারবলে ছাত্র সংসদের সভাপতির কাছে সাধারণ সম্পাদক প্রস্তাব পেশ করেন।

এর পর অনাকাঙ্ক্ষিত তর্ক-বিতর্ক শুরু হয় এবং এক পর্যায়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ এ ঘটনায় থানায় চাঁদাবাজির মামলা করে। সেপ্টেম্বর মাসেই নবনির্বাচিত সহসভাপতি মুকুল সরকার ও সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন লিটুকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হয়। প্রায় দেড় বছর পর ২৯টি মামলা নিয়ে হাইকোর্টের মাধ্যমে জামিনে মুক্তি পান তারা। তখন আর সংসদ পরিচালনার কোনো সুযোগ ছিল না। 

সাবেক জিএস লিটু বলেন, অনিয়মিত ও অছাত্র এবং সন্ত্রাসী ছেলেদের দিয়ে কমিটি গঠনের কারণেই ছাত্র রাজনীতিতে আজ এমন ধস নেমেছে। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তাই ছাত্র সংসদ নির্বাচন ও ছাত্র রাজনীতির চর্চা জরুরি হয়ে উঠেছে। 

আনন্দ মোহন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মাহমুদুল হাসান সবুজ বলেন, এ কলেজে নতুন করে ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হয়েছে ২০১৬ সালের ১ ডিসেম্বর। এর পর ছাত্র সংসদ নির্বাচনের জন্য আন্দোলন ও মানববন্ধন করা হয়। কলেজ কর্তৃপক্ষ তখন নির্বাচনের আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। আর বর্তমান অধ্যক্ষের সঙ্গে এ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। তিনি বলেন, ছাত্র সংসদ নিয়মিত হলে সাধারণ শিক্ষা পাঠ্যক্রমের সহপাঠ্যক্রম, খেলাধুলা, সাংস্কৃৃতিক কার্যক্রম, কলেজের যাতায়াত ব্যবস্থাসহ সার্বিক উন্নয়ন হবে।

কলেজ শাখার বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি আশজাদুল বোরহান তাহসিন বলেন, বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাদের নিয়ে আমোকসু নির্বাচনের দাবিতে আগের অধ্যক্ষের সঙ্গে আলোচনা ও কর্মসূচি পালিত হয়েছে, কিন্তু নির্বাচন দেওয়া হয়নি। এতে রাজনৈতিক নেতৃত্বই নষ্ট হতে বসেছে। 

কয়েক মাস আগে এ কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র ভৌমিক। গণতান্ত্রিক মানসিকতা তৈরির জন্য সক্রিয় ছাত্র সংসদের অপরিহার্যতা স্বীকার করে তিনিজানান, নির্বাচন হবে কি হবে না, তা নির্ভর করছে সরকারি সিদ্ধান্তের ওপর। এ ক্ষেত্রে কলেজের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বা পরিবেশ কেমন থাকবে, তাও গুরুত্বপূর্ণ।

সুত্র: সমকাল

অভিযুক্ত শিক্ষা সাংবাদিকদের পক্ষে জোর তদবির - dainik shiksha অভিযুক্ত শিক্ষা সাংবাদিকদের পক্ষে জোর তদবির কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে যৌ*ন হয়*রানি: ঢাবি শিক্ষক নাদির জুনাইদকে অব্যাহতি - dainik shiksha যৌ*ন হয়*রানি: ঢাবি শিক্ষক নাদির জুনাইদকে অব্যাহতি নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩তম জন্মজয়ন্তী আজ - dainik shiksha বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩তম জন্মজয়ন্তী আজ তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি - dainik shiksha তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0029881000518799