আফগানিস্তানের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তালেবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি। তবে নারীদের শিক্ষা প্রশ্নে দৃঢ় কোনো প্রতিশ্রুতি তিনি দেননি। সব আফগান শিশুকে স্কুলে যাওয়ার অনুমতি দিতে তালেবানের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। গতকাল সোমবার এক অনুষ্ঠানে নারীশিক্ষার প্রসঙ্গ এড়িয়ে গেছেন মুত্তাকি। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে।
কাবুলে পশ্চিমা সমর্থিত সাবেক সরকারের পতন এবং তালেবানের ক্ষমতা দখলের প্রায় দুই মাস পর নতুন সরকার অন্য দেশের সঙ্গে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে। চরম অর্থনৈতিক সংকট থেকে আফগানিস্তানকে বাঁচাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা চাইছে তারা।
দোহা ইনস্টিটিউট ফর গ্র্যাজুয়েট স্টাডিজে ‘সেন্টার ফর কনফ্লিক্ট অ্যান্ড হিউম্যানিটারিয়ান স্টাডিজ’ আয়োজিত অনুষ্ঠানে মুত্তাকি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে আমাদের সঙ্গে পারস্পরিক সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্কের সূচনা করা উচিত। এর মধ্য দিয়ে আমরা নিরাপত্তাহীন পরিস্থিতি কাটাতে পারব এবং একই সময়ে বিশ্বসম্প্রদায়ের সঙ্গে ইতিবাচকভাবে যুক্ত হতে পারব।’
আমির খান মুত্তাকি আরও বলেন, তালেবান সরকার সতর্কভাবে এগোচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যে সংস্কারগুলো ২০ বছরে বাস্তবায়ন করতে পারেনি, সেগুলো কয়েক সপ্তাহ বয়সী তালেবান সরকারের কাছ থেকে আশা করা ঠিক হবে না। ‘তাদের অনেক অর্থসম্পদ আছে, আন্তর্জাতিকভাবে দৃঢ় সমর্থন আছে। অথচ একই সময়ে আপনারা আমাদের দুই মাসেই সংস্কার আনতে বলছেন?’ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি প্রশ্ন ছুড়ে দেন আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
নারীশিক্ষা প্রশ্নে নিজেদের অবস্থানের কারণে শুরু থেকেই সমালোচনার মুখে রয়েছে তালেবান সরকার। আফগানিস্তানে পশ্চিমাদের ২০ বছরের সংশ্লিষ্টতার ইতিবাচক অর্জন নারীশিক্ষা নিশ্চিত করা বলে মনে করা হয়ে থাকে। আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর গত মাসে তারা ঘোষণা দেয়, ষষ্ঠ গ্রেড-পরবর্তী স্কুলে শুধু ছেলেরাই পড়ার সুযোগ পাবে। এমন সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর নারীশিক্ষা নিশ্চিতের জন্য তালেবানকে চাপ দিচ্ছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। তবে নারী শিক্ষার্থীদের উচ্চবিদ্যালয়ে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দিতে এখনো রাজি হচ্ছে না তালেবান। সোমবার মুত্তাকিও প্রসঙ্গটি এড়িয়ে গেছেন।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, নারীর অধিকার নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি লঙ্ঘন করেছে তালেবান। নারীদের কাজ করার অনুমতি না দিলে অর্থনীতির চাকা সচল করার কোনো সুযোগ নেই।