আবরার হত্যা নিয়ে রাজনীতি চান না বাবা - দৈনিকশিক্ষা

আবরার হত্যা নিয়ে রাজনীতি চান না বাবা

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি |

বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদের হত্যাকাণ্ড নিয়ে কোনো মহল বা কেউ রাজনীতি করুক, তা চান না নিহতের বাবা বরকতুল্লাহ। আর আবরারের মা রোকেয়া খাতুন চান, আর কোনো মায়ের বুক যেন এভাবে খালি না হয়। উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠানগুলোতে চান নিরাপত্তা। সন্তানের হত্যাকারীদের শাস্তি চান ছেলেহারা এই মা-বাবা। আবরার হত্যাকাণ্ড ও এ নিয়ে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে গ্রামের বাড়ি রায়ডাঙ্গায় বসে এই প্রতিবেদকের কথা হয় ওই বাবা-মায়ের সঙ্গে।

আবরারের বাবা বরকতুল্লাহ বলেন, আবরার আমার সন্তান, তার মৃত্যুতে আমরা সবাই ব্যথিত। তবে তার হত্যাকাণ্ডকে রাজনৈতিক রং দেয়ার চেষ্টা হচ্ছে। কেউ এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে রাজনীতি করুক, এটা আমরা চাই না। আমাদের চাওয়া একটাই- খুনিদের গ্রেফতার ও সুষ্ঠু বিচারের মাধ্যমে সাজা নিশ্চিত করা হোক। আবরারের বাবা বরকতুল্লাহ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুনিদের সঠিক বিচার হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন। এ জন্য আমরা তাকে ধন্যবাদ জানাই।

আববার শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়ানো প্রশ্নে তিনি বলেন, আবরারকে কেন হত্যা করা হয়েছে, তা আমরা জানি না। হত্যার পর বিষয়টি ভিন্ন খাতে নিয়ে এটিকে ধামাচাপা দিতে শিবির বলে তাকে রাজনৈতিক রং দেয়া হচ্ছে। বিষয়টি আদৌ ঠিক নয়।

আবরার হত্যাকাণ্ডের পর বুয়েটসহ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র আন্দোলন নিয়ে তিনি বলেন, ছাত্ররা যেসব যৌক্তিক আন্দোলন করছে, তা বাস্তবায়ন হওয়া প্রয়োজন। দেশের সেরা বিদ্যাপীঠগুলো যদি নিরাপদ না হয়, সেখানে কেউ সন্তানকে পড়তে পাঠাতে চাইবে না। তাই সব উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা আগে নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি হলগুলোতে লেখাপড়ার পরিবেশ যাতে নিশ্চিত হয়, সে বিষয়ে নজর দেয়া দরকার।

জাতিসংঘের বিবৃতি ও তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়ে তিনি বলেন, স্বাধীন তদন্ত কমিটি করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া দরকার। দ্রুত বিচার শেষ দেখতে চাই। একজন খুনিও যেন পার না পায়। অমিত সাহা গ্রেফতারের খবরে নিজের সন্তুষ্টির কথা জানান তিনি।

স্কুলশিক্ষিকা মা রোকেয়া খাতুন বলেন, আমি তো চাইছিলাম ছেলে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়ে মানুষের মতো মানুষ হোক। আমি যদি চাইতাম ছেলে লাখ লাখ টাকা উপার্জন করুক, তাহলে তো বেটাকে মেডিকেলে পড়াতাম। আমি শুধু চাইছিলাম, বেটা সৎ মানুষ হয়ে আমার বুকে ফিরে আসুক। কান্নাজড়িত কণ্ঠে এই মা বলেন, আমার সন্তানকে যারা মেরেছে তাদের শাস্তি চাই। যারা আমার বেটাকে মেরেছে তাদের বহিষ্কার করা হোক। যেখানে আমার বেটা পড়তে পারল না, সেখানে খুনিরা তো পড়তে পারে না।

আবরারের মা বলেন, আমার ছেলের জন্য সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেরা আন্দোলন করছে। আমি চাই আমার মতো আর কোনো মায়ের বুক যেন খালি না হয়। সব বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজের ছেলেরা এখন আমার ছেলে। আমি বলব, এসব ছেলের ওপর যেন কোনো অত্যাচার-নির্যাতন আর না হয়। এসব ছেলের উচ্চশিক্ষার জন্য নিরাপদ ক্যাম্পাস চাই, নিরাপত্তা চাই।

আমি চাই, দেশবাসী যেন আমার ছেলের জন্য দোয়া করে। আমার আরেকটা ছেলে আছে, সেই ছেলের জন্য আমি নিরাপত্তা চাই। আবরারকে বড় ডিগ্রি নেওয়ার জন্য বুয়েটে পাঠিয়েছিলাম। আমার ছোট ছেলেকে (সাব্বির) দিয়ে যেন মনের আশা পূরণ করতে পারি, ও যেন উচ্চশিক্ষায় আদর্শ মানুষের মতো মানুষ হয়, আপনারা সেই দোয়া করবেন।

পরিবারের সঙ্গে স্থানীয় এমপির সাক্ষাৎ : গতকাল বিকেলে কুষ্টিয়া-৪ আসনের এমপি সেলিম আলতাফ জর্জ নিহত আবরার ফাহাদের বাড়ি গিয়ে তার মা-বাবার সঙ্গে দেখা করেন। তিনি সেখানে ২০ মিনিটের মতো অবস্থান করে পরিবারকে সমবেদনা ও সান্ত্বনা জানান। খুনিদের কঠোর শাস্তি হবে বলেও পরিবারকে আশ্বস্ত করেন তিনি। এ ছাড়া জেলা বিএনপির সভাপতি মেহেদী আহমেদ রুমী, সাধারণ সম্পাদক সোহরাব উদ্দিন ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামীমউল হাসান অপু পরিবারটির সঙ্গে দেখা করে সমবেদনা জানান।

শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় - dainik shiksha অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ মে’র পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ মে’র পরীক্ষা স্থগিত হিটস্ট্রোকে সাতক্ষীরায় শিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে সাতক্ষীরায় শিক্ষকের মৃত্যু হিটস্ট্রোকের লক্ষণ ও করণীয় - dainik shiksha হিটস্ট্রোকের লক্ষণ ও করণীয় দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে চাকরিতে আবেদনের বয়স ৩৫ করতে শিক্ষামন্ত্রীর সুপারিশ - dainik shiksha চাকরিতে আবেদনের বয়স ৩৫ করতে শিক্ষামন্ত্রীর সুপারিশ শিক্ষিকার উত্যক্তকারীকে ধরতে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ - dainik shiksha শিক্ষিকার উত্যক্তকারীকে ধরতে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ সর্বজনীন পেনশনে অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষক সমিতির কর্মসূচি - dainik shiksha সর্বজনীন পেনশনে অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষক সমিতির কর্মসূচি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0035951137542725