আবাসিক সুবিধা নেই দুই–তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থীর - দৈনিকশিক্ষা

আবাসিক সুবিধা নেই দুই–তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থীর

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

হবিগঞ্জে বাড়ি সাকিব হাসানের, পড়েন রাজধানীর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে। স্নাতক (সম্মান) পরীক্ষা শেষ করে এখন ফলের অপেক্ষায় তিনি। আগামী মাসে তাঁর স্নাতকোত্তরের ক্লাস হওয়ার কথা। ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের এই শিক্ষার্থী শুরু থেকেই পুরান ঢাকার কয়েকটি জায়গায় ভাড়া বাসায় (মেস) থেকে পড়াশোনা করছেন। এখন থাকেন লক্ষ্মীবাজারের বানিয়ানগর এলাকায়।

সাকিব হাসান জানান, মেসে থাকতে তাঁর থাকা-খাওয়াসহ মাসে খরচ হয় পাঁচ হাজার টাকার মতো। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের জন্য আবাসিক হল না থাকায় বাধ্য হয়েই তিনি মেসে থাকেন। এতে পড়াশোনার খরচও বেশি হচ্ছে। হলে থাকতে পারলে সেই খরচ অর্ধেক কমে যেত। 

২০০৫ সালে কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের জন্য কোনো পূর্ণাঙ্গ আবাসিক হল নেই। শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের দখলে থাকা একটি পুরোনো বাড়িতে হাতে গোনা কয়েকজন শিক্ষার্থী থাকেন। আর দীর্ঘদিন ধরে কাজ চলার পর ছাত্রীদের জন্য নতুন একটি আবাসিক হল নির্মিত হলেও এখনো ছাত্রীরা সেখানে উঠতে পারেননি। এতে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রায় ১৩ হাজার ছাত্রছাত্রীর প্রায় সবাই থাকেন নিজস্ব ব্যবস্থাপনায়। যাঁদের অধিকাংশই থাকেন ভাড়াবাড়িতে।

ইউজিসির সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদনে (৪৭তম) শিক্ষার্থীদের আবাসনব্যবস্থাসহ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়শিক্ষার নানা তথ্য উঠে এসেছে। বর্তমানে সারা দেশে পাবলিক ও বেসরকারি মিলিয়ে ১৫৮টি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ৫০টি পাবলিক ও ১০৮টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে কয়েকটি এখনো পুরোদমে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করেনি। এ ছাড়া জাতীয়, উন্মুক্ত ও ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ে সরাসরি শিক্ষার্থী নেই; এগুলোতে অধিভুক্ত কলেজ ও মাদ্রাসার মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম চলে।

বাকি ৪৩টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৩২টি আবাসিক হল ও ডরমিটরি রয়েছে। এগুলোতে থাকার সুবিধা আছে ১ লাখ ৫ হাজার ৭৮৭ জনের। আর এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী পড়েন ৩ লাখ ১৪ হাজার ৯৩০ জন। আবাসিক সুবিধা পাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৬৩ হাজারের বেশি ছাত্র ও ৪২ হাজারের বেশি ছাত্রী।

গত ৩০ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দেওয়া ইউজিসির বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন ৩৯ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী। এর মধ্যে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৩টি হল ও ডরমিটরিতে আবাসিক সুবিধা পান ৪৩ শতাংশ শিক্ষার্থী। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এ হার ২৩ শতাংশ এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যা ১৯ শতাংশ। আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে পরিচিত জাহাঙ্গীরনগর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক সুবিধা পান ৮১ শতাংশের মতো শিক্ষার্থী। তবে আবাসিক সুবিধায় সবচেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ও পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক সুবিধাই নেই। এ ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে রয়েছে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বলছেন, পর্যাপ্ত আবাসিক সুবিধা না থাকায় শিক্ষার্থীদের নানামুখী অসুবিধা হচ্ছে। ছাত্রীরা বেশি অসুবিধায় পড়েন।

এ বিষয়ে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী সম্প্রতি বলেন, শিক্ষার্থীদের আসনসংকট দূর করতে আরও হল নির্মাণ করতে হবে। এ জন্য উচ্চশিক্ষায় বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।

গবেষণায় এগিয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়

ইউজিসির তথ্য বলছে, তুলনামূলকভাবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর চেয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণা বেশি হয়। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ২০২০ সালে গবেষণা ব্যয় ছিল প্রায় ৭৩ কোটি টাকা।

অন্যদিকে দেশের ১০৮টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ২৭টি গবেষণা খাতে কোনো অর্থ ব্যয় করেনি।

পাবলিকে শিক্ষার্থী বাড়ছে, কমছে বেসরকারিতে

দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমছে। ২০২০ সালে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী ছিল ৩ লাখ ২৮ হাজার ৬৮৯ জন, যা আগের বছর ছিল প্রায় সাড়ে তিন লাখ। ২০১৮ সালে শিক্ষার্থী আরও বেশি ছিল (৩ লাখ ৬১ হাজারের বেশি)। অথচ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বেড়েছে।

অন্যদিকে বর্তমানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মিলিয়ে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২০ সালে মোট শিক্ষার্থী ছিল ৪৬ লাখের বেশি। যা আগের বছরের চেয়ে বেড়েছে।

সূত্র : প্রথম আলো

ষষ্ঠ-নবম শ্রেণিতে ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সূচি - dainik shiksha ষষ্ঠ-নবম শ্রেণিতে ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সূচি শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ অষ্টম পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষায় সরকারকে সহযোগিতা করবে ইউএনএফপিএ - dainik shiksha অষ্টম পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষায় সরকারকে সহযোগিতা করবে ইউএনএফপিএ ইসরায়েলকে বোমা পাঠানো বন্ধ রাখছে যুক্তরাষ্ট্র - dainik shiksha ইসরায়েলকে বোমা পাঠানো বন্ধ রাখছে যুক্তরাষ্ট্র ভুইফোঁড় শিক্ষক সমিতি নেতাদের এমপিও বাতিল হতে পারে - dainik shiksha ভুইফোঁড় শিক্ষক সমিতি নেতাদের এমপিও বাতিল হতে পারে শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের জাপান টিকিট ৩০ লাখ! - dainik shiksha ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের জাপান টিকিট ৩০ লাখ! জাল সনদধারী শিক্ষকের এমপিও বাতিল - dainik shiksha জাল সনদধারী শিক্ষকের এমপিও বাতিল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0064008235931396