নড়াইল সদরের শাহাবাদ ইউনিয়নের আলোকদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান চলছে খোলা আকাশের নিচে। বিদ্যালয়টির জরাজীর্ণ অবস্থা, প্রয়োজনীয় ক্লাস কক্ষ এবং বেঞ্চের অভাবে পুরাতন ও স্বনামধন্য এ বিদ্যালয়ে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।
মাঝে মাঝে স্কুলের বারান্দায় ও লাইব্রেরিতেও ক্লাস নিতে হয়। ৫০ বছরের প্রতিষ্ঠিত এ বিদ্যালয়টিতে সরকারিভাবে কোনো ভবন নির্মিত হয়নি। পায়নি প্রয়োজনীয় কোনো বরাদ্দ।
শিক্ষার্থীদের বেতন, স্থানীয় ব্যক্তি, ইউনিয়ন পরিষদ ও শিক্ষকদের অনুদান ও চাঁদায় বিদ্যালয়ের ভবনসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬৭ সালে সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে আলোকদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত এ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ২৫০ জন।
বিদ্যালয়টির এসএসসি এবং জেএসসি পরীক্ষার ফল ঈর্ষণীয়। ২০১৭ সালে আইসিটি ব্যবহার বিষয়ে নড়াইল জেলার শ্রেষ্ঠ বিদ্যালয় হিসাবে পুরস্কারও পেয়েছে।
বিদ্যালয়ে তিনতলাবিশিষ্ট পাকা ও টিনসেড দুটি ভবন রয়েছে। তিনতলা ভবনে ছয়টি কক্ষ রয়েছে। এর মধ্যে চারটি ক্লাস কক্ষ, একটি কম্পিউটার ল্যাব এবং একটি লাইব্রেরি। এছাড়া টিনসেডে দুটি ক্লাস কক্ষ এবং শিক্ষক মিলনায়তন।
তিনতলা ভবনটি দেশ স্বাধীনের পর স্থানীয়ভাবে নির্মাণ করা হয়। এ ভবনটি এখন জরাজীর্ণ। দোতলার ছাদের রডে মরিচা পড়ে গেছে। কয়েক জায়গায় রডে মরিচা পড়ে ছাদ ছিদ্র হয়ে গেছে। বৃষ্টি হলে পানি পড়ে।
নবম শ্রেণির ছাত্র মো. আওসান হাবিব ও ৮ম শ্রেণির ছাত্র মুরসালিন ইসলাম জানায়, বেঞ্চের অভাবে খোলা আকাশের নিচে ক্লাস হয়। যে কারণে স্যারদের কথা খাতায় লিখতে কষ্ট হয়। অনেক সময় লাইব্রেরি এবং বারান্দায়ও ক্লাস চলে।
স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী নুসরাত জামান রিুতু জানান, কক্ষের অভাবে অনেক সময় ঠিক মতো ক্লাস হয় না। বৃষ্টি হলে টিনসেড কক্ষ দিয়ে পানি পড়ে। তখন বই-খাতা ভিজে যায়। ফলে ক্লাস বন্ধ হয়ে যায়।
বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মুরারি গোলদার বলেন, গেলো দুই বছর ধরে বিভিন্ন সময় খোলা আকাশের নিচে, লাইব্রেরি রুমে আবার কখনো বারান্দায় ক্লাস নিতে হয়েছে। দুটি কক্ষে ৫০টি বেঞ্চ হলে আপাতত এ সমস্যার সমাধান হতো বলে জানান তিনি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আনোয়ার হোসেন মল্লিক বলেন, বিভিন্ন সময় সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন-নিবেদন করার পরও কোনো ভবন নির্মিত হয়নি।
বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মো. ইমরান হোসেন জানান, ইউনিয়ন পরিষদ, স্থানীয়রা এবং শিক্ষকরা চাঁদা তুলে বিভিন্ন সময় নতুন বেঞ্চ তৈরি এবং মেরামত করে থাকে।
প্রতি বছরের মতো এবারও স্থানীয়ভাবে অর্থ সংগ্রহ করে বিদ্যালয়ের আসবাবপত্র কেনার চেষ্টা চলছে।