ইচ্ছামতো আবেদন ফি বাড়াচ্ছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় - দৈনিকশিক্ষা

ভর্তি পরীক্ষাইচ্ছামতো আবেদন ফি বাড়াচ্ছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়

সাইফ সুজন |

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক শ্রেণীতে ভর্তিতে ইউনিটপ্রতি আবেদন ফি ৮০০ টাকা। যদিও ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে ইউনিটপ্রতি ফি ছিল ৭০০ টাকা। এ হিসাবে এক শিক্ষাবর্ষের ব্যবধানে ভর্তি আবেদন ফি বাড়ানো হয়েছে ১০০ টাকা।

ভর্তি আবেদন ফি বেড়েছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়েও (শাবিপ্রবি)। ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে শাবিপ্রবির স্নাতক শ্রেণীতে ভর্তি আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ‘এ’ ইউনিটে ৮০০ ও ‘বি-২’ ইউনিটে ৯০০ টাকা। যদিও ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে এ ফি ছিল ‘এ’ ইউনিটে ৭৫০ ও ‘বি-২’ ইউনিটে ৮৫০ টাকা। অর্থাৎ ইউনিটপ্রতি আবেদন ফি ৫০ টাকা বেড়েছে। অথচ শাবিপ্রবি কর্তৃপক্ষের ঘোষণা অনুযায়ী, এ বছর তো বটেই, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত ভর্তি আবেদন ফি বৃদ্ধির কথা নয়।

জানা যায়, শাবিপ্রবিতে ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক শ্রেণীতে ভর্তির আবেদন ফি ছিল ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। এর পর থেকে ক্রমান্বয়ে ফি বাড়াতে থাকে বিশ্ববিদ্যালয়টি। ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে হঠাৎ ভর্তি আবেদন ফি ৩৩ শতাংশ বাড়িয়ে ১০০০-১২০০ টাকা করা হলে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের মুখে ‘এ’ ইউনিটে আবেদন ফি ১০০০ থেকে কমিয়ে ৮০০ টাকা ও বি-২ ইউনিটে ১২০০ থেকে কমিয়ে ৯০০ টাকা করা হয়। ওই সময় পরবর্তী পাঁচ বছর আর ফি বাড়ানো হবে না বলে জানানো হয়। 

শুধু নোবিপ্রবি ও শাবিপ্রবি নয়, আগামী শিক্ষাবর্ষে ভর্তি আবেদন ফি বাড়িয়েছে বেশকিছু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। নির্দিষ্ট নিয়মনীতি না থাকায় খেয়াল-খুশিমতো ফি আদায় করছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। এতে শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারকে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়ের চাপে পড়তে হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে এক ধরনের নৈরাজ্য চলছে। ভর্তি পরীক্ষাকে আয়ের খাত বানিয়ে ফেলেছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। এটি মোটেই উচিত নয়। আলাদা করে পরীক্ষা নেয়ায় একজন শিক্ষার্থীকে বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরম তুলতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যেও আবার আলাদা ইউনিট। কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় অযৌক্তিক ফি আদায় করছে, যা একজন শিক্ষার্থী ও তার পরিবারের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে।

আবেদন ফি বৃদ্ধি নিয়ে জানতে চাইলে শাবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ  বলেন,  মূল্যস্ফীতির কারণে ফরমের দাম বাড়ানো হয়েছে। বছরে বছরে সবকিছুর দাম বাড়ছে, সে তুলনায় ৫০ টাকা কিছুই না।

আবেদন ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে সম্প্রতি শাবিপ্রবিতে বিক্ষোভ করেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের নেতাকর্মীরা। সংগঠনের শাবিপ্রবি শাখার সম্পাদক নাযিরুল আযম বলেন, মূল্যস্ফীতির কারণে ফরমের দাম বাড়ানো সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ এটা হতে পারে না। খরচ শিক্ষার্থীদের ওপর না চাপিয়ে প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তুকি বাড়াতে পারে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যয় জোগান দেয়ার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। এ দায় শিক্ষার্থীদের ওপর চাপিয়ে দেয়া অন্যায়।

ভর্তি আবেদন ফি বৃদ্ধির তালিকায় রয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ও। ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়টির পাঁচ অনুষদের ৩৩টি বিভাগে ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হয় আটটি ইউনিটের মাধ্যমে। ইউনিটপ্রতি ফি নেয়া হয়েছিল ৫০০ টাকা। এবার ৮ ইউনিটের পরিবর্তে ৪টি ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হবে। এ বছর ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ইউনিট বাবদ ২০০ ও বিভাগপ্রতি ১০০ টাকা। এ হিসাবে ‘এ’ ইউনিটে ৭০০ টাকা, ‘বি’ ইউনিটে ১৬০০ টাকা, ‘সি’ ইউনিটে ৮০০ ও ‘ডি’ ইউনিটে ১৩০০ টাকা ভর্তি ফরমের মূল্য ধার্য করা হয়েছে।

গত শিক্ষাবর্ষে ৫০০ টাকা করে ৮ ইউনিটের মোট আবেদন ফি ছিল ৪ হাজার টাকা। এ বছর ৪ ইউনিটের মোট ফি হয়েছে ৪ হাজার ৪০০ টাকা। ইউনিটের সংখ্যা কমিয়ে কৌশলে আবেদন ফি বাড়িয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। কৌশলে ফি বাড়িয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ও। গত বছর ইউনিটপ্রতি ভর্তি আবেদন ফি ছিল ৫০৫ টাকা। এবার শিক্ষার্থীদের গুনতে হচ্ছে ৬০৫ টাকা। প্রাথমিক আবেদনের জন্য ১০০ টাকা করে ফি নেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে বাছাইকৃত ভর্তিচ্ছুদের কাছ থেকে পুনরায় ৫০৫ টাকা আদায় করা হবে।

জানতে চাইলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, গত বছরগুলোয় আবেদনের ন্যূনতম যোগ্যতা থাকলেই ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারত শিক্ষার্থীরা। কিন্তু এ শিক্ষাবর্ষ থেকে নতুন পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। শুরুতে শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক আবেদন করেছে, যেখানে ১০০ টাকা ফি ধরা হয়েছে। পরবর্তীতে যাচাই-বাছাই করে একটি চূড়ান্ত তালিকা দেয়া হয়েছে, শুধু তারাই ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করার জন্যই অতিরিক্ত এ টাকা নেয়া হয়েছে।

 

সৌজন্যে: বণিক বার্তা

শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের মানদণ্ড কী? - dainik shiksha শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের মানদণ্ড কী? প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ অবসর-কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার কড়া তাগিদ - dainik shiksha অবসর-কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার কড়া তাগিদ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে সুপ্রিম কোর্টের ফতোয়ার রায় পাঠ্যপুস্তকে নিতে হবে - dainik shiksha সুপ্রিম কোর্টের ফতোয়ার রায় পাঠ্যপুস্তকে নিতে হবে সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি - dainik shiksha সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0035438537597656