ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য প্রার্থীদের তদবিরদৌড় - দৈনিকশিক্ষা

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য প্রার্থীদের তদবিরদৌড়

ইবি প্রতিনিধি |

আগামী ২০ আগস্ট শেষ হচ্ছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য (ভিসি) ও কোষাধ্যক্ষের মেয়াদ। এই দুই পদ পেতে এরই মধ্যে শুরু হয়েছে দৌড়ঝাঁপ। বন্ধ ক্যাম্পাসেও শিক্ষকরা ব্যস্ত পরবর্তী ভিসি নিয়ে। বিভক্ত হয়ে পড়েছেন শিক্ষক-কর্মকর্তারা। করোনায় ক্যাম্পাস বন্ধ এবং সম্মুখ যোগাযোগ না থাকায় চলছে ভার্চুয়াল যোগাযোগ। এ লড়াইয়ে রয়েছেন শিক্ষার্থীরাও।

পদ দুটি পেতে চেষ্টা চালাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ডজন শিক্ষক। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, স্থানীয় সংসদ সদস্য, মন্ত্রী, এমনকি ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন তাঁরা। চলছে পক্ষ-বিপক্ষে কাদা ছোড়াছুড়ি।

ড. আসকারী দ্বিতীয়বার ভিসি হওয়ার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন। কোষাধ্যক্ষ  ড. সেলিম তোহার নাম গতবারই ভিসি প্রার্থীর তালিকার শীর্ষে ছিল। শেষ সময়ে পদ পরিবর্তন করে ড. আসকারীকে কোষাধ্যক্ষ পদ থেকে উপাচার্য এবং ড. সেলিম তোহাকে উপাচার্যের পরিবর্তে কোষাধ্যক্ষ করা হয়। এবারও ভিসি হওয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন তোহা। সেই সঙ্গে দুই মেয়াদে উপ-উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করা অধ্যাপক ড. শাহীনুর রহমান এবার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন এই পদে আসার জন্য।

তাঁদের মেয়াদে অনেক সফলতা থাকলেও সেগুলো অনেকটা ম্লান হয়েছে প্রশাসনের কাছের বিতর্কিত শিক্ষকদের কর্মকাণ্ডে। বারবার শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্য, দরপত্রে অনিয়ম, যৌন হয়রানি, অর্থ আত্মসাতের ঘটনা ঘটলেও শিক্ষকরা প্রশাসনের কাছের মানুষ হওয়ায় পার পেয়েছেন। তদন্ত কমিটিতে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে বিচার।

এ ছাড়া ভিসি পদে চেষ্টা করছেন সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. নাসিম বানু, বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইবারের ভিসি ড. আব্দুস সাত্তার।

এর মধ্যে সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক কামাল উদ্দিনকে ২০১২ সালে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে অপসারণ করে সরকার। প্রথম নারী উপাচার্য হতে চাওয়া অধ্যাপক নাসিম বানুর বিরুদ্ধে নিজ বিভাগে অনিয়মিত ক্লাস, ঢাকায় অবস্থানের অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া তিনি অনেক দিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ সেলের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। যৌন নির্যাতন তদন্ত ও প্রতিরোধে এ সেলের ভূমিকা হতাশাজনক।

এদিকে ঢাকা, জগন্নাথ ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও ইসলামী বিশ্ববিদালয়ের উপাচার্য পদের জন্য চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে। ইবির সাবেক কোষাধ্যক্ষ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্টের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আফজাল হোসেন এবারও উপাচার্য পদে চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে। অধ্যাপক আফজাল ২০১২ সালে ইবির কোষাধ্যক্ষ থাকাকালে বিভিন্ন অনিয়মের দায়ে সরকার কর্তৃক অপসারিত হয়েছিলেন। ইবির সাবেক শিক্ষক ও বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মনিরুজ্জামান উপাচার্য পদ প্রত্যাশী বলে জানা গেছে।

এ ছাড়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক শাহ আজম শান্তনু ইবির উপাচার্য পদের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরো এক শিক্ষক পি এম শরিফুল ইসলাম শফিকও উপাচার্য পদ প্রত্যাশী। তিনি কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন বলে জানা গেছে।

এদিকে উপাচার্য পদ নিয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মকর্তারা এখন দ্বিখণ্ডিত। একপক্ষ উপাচার্য ড. হারুন-উর-রশিদ আসকারীকে দ্বিতীয় মেয়াদে চান। অন্য পক্ষ তাঁর বিরুদ্ধে দরপত্র বাণিজ্য, অনিয়ম-দুর্নীতির প্রশ্রয়ের অভিযোগ এনে অপসারণ দাবি করে মানববন্ধন করেছেন। তাঁরা দাবি করেন, শিক্ষার্থীদেরও ব্যবহার করেছে প্রশাসন। তাঁদের দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পক্ষ-বিপক্ষে স্ট্যাটাস দেওয়া, বিভিন্ন পোস্টে কমেন্ট করানোসহ তাঁদের পোস্ট শেয়ার করার অভিযোগ ভিসিপক্ষের দিকে।

এ ছাড়া কোষাধ্যক্ষ হওয়ার দৌড়ে আছেন ইবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. কাজী আখতার হোসেন, অর্থনীতির অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন, বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আরফিন, জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন আনোয়ারুল হক স্বপন, সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক সাইদুর রহমান, আইন বিভাগের অধ্যাপক শাহজাহান মণ্ডল প্রমুখ।

এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা - dainik shiksha শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0037369728088379