ইয়াবা ব্যবসা: চবি ছাত্রের কোটি টাকা - Dainikshiksha

ইয়াবা ব্যবসা: চবি ছাত্রের কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক |

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) লোক প্রশাসন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র রবিউল আলম (২৪) এখন কোটিপতি। কোনো চাকরি কিংবা বৈধ ব্যবসা না করেও তার ব্যাংক ব্যালেন্স কোটি টাকা। ৫০ হাজার পিস ইয়াবাসহ রবিউল ধরা পড়ার পর এ চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। বন্দরনগরীর শাহ আমানত সেতু এলাকা থেকে ২৫ মার্চ একটি পাজেরোসহ রবিউলকে গ্রেফতারের পর তার অর্থের উৎস অনুসন্ধান শুরু করে নগর গোয়েন্দা পুলিশ। এতে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার নাজিরপাড়ার সিদ্দিক আহমেদের ছেলে রবিউলের কোটিপতি হওয়ার নেপথ্য কাহিনী বেরিয়ে পড়ে।


পুলিশ জানায়, শুধু রবিউল নয়, তার বড়ভাই ফরিদুল আলম, বাবা ছিদ্দিক আহমদ ও ভাবি রায়হানা আকতার সবাই ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তাদের প্রত্যেকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক লেনদেনের চিত্র পাওয়া গেছে। শাহ আমানত সেতু এলাকা থেকে ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার’র স্টিকার ও ভিআইপি ফ্ল্যাগস্ট্যান্ড যুক্ত পাজেরো (নম্বর চট্ট-মেট্রো-ঘ-১১-০২৮৯) থেকে ৫০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধারের পর পুলিশের অনুসন্ধানে এসব তথ্য উঠে এসেছে। গাড়ি আটকের সময় চালক জসিম উদ্দিনের (২০) স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পাজেরোটি ফরিদুলের। পুলিশের তদন্তেও এর সত্যতা উঠে আসে।

ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনায় কর্ণফুলী থানায় করা মামলার তদন্ত করেন ইন্সপেক্টর মো. কামরুজ্জামান। বর্তমানে কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কামরুজ্জামান সাতজনকে আসামি করে এ মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এতে টেকনাফের সিদ্দিক আহমেদ (৫৫), তার ছেলে ফরিদুল আলম (৩৫) ও রবিউল আলম (২৪), একই এলাকার জালাল আহমেদের ছেলে মো. জসিম উদ্দিন (২০), দিলদার আলমের ছেলে সামসুল আলম ওরফে শফিকুল ইসলাম (২৫), টেকনাফের মৌলভীপাড়ার জাকির আহমেদের ছেলে সৈয়দ আহাম্মদ (৩৫) এবং আবদুল মালেককে (৩০) অভিযুক্ত করা হয়।

নগর গোয়েন্দা পুলিশ সূত্র জানায়, আসামিদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি দেয়া হয়। এতে জানা যায়, আল আরাফা ইসলামী ব্যাংকের টেকনাফ শাখায় ২০১৫ সালের ২৮ মে তিনি একটি অ্যাকাউন্ট খোলেন। ২০১৮ সালের ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত তার এ অ্যাকাউন্টে ৫৩ লাখ ২৭ হাজার ১৮৭ টাকা জমা পড়ে। একই শাখায় ২০১৮ সালের ২৭ মার্চ তিনি একটি মুদারাবা মেয়াদি জমা হিসাব খোলেন। এতে ৩০ লাখ টাকা জমা রাখা হয়। গাড়ির ব্যবসা থেকে এ টাকা আয় হয়েছে বলে উল্লেখ করা হলেও ট্রেড লাইসেন্স ও টিআইএন নম্বর দেয়া হয়নি।

রবিউলের ভাই ফরিদুলের ব্যাংক অ্যাকাউন্টেও মিলেছে অস্বাভাবিক লেনদেন। ২০০৯ সালের ১৫ জানুয়ারি ইসলামী ব্যাংক টেকনাফ শাখায় তিনি একটি হিসাব খোলেন। ২০১৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এ ব্যাংক হিসাবে ৮৬ লাখ ৬৩ হাজার ৫৬৮ টাকা জমা হয়। এ হিসাবে অধিকাংশ টাকা ঢাকা নবাবপুর শাখা, রমনা শাখা, ইসলামপুর শাখা, গাজীপুর চৌরাস্তা শাখা ও নারায়ণগঞ্জ শাখা থেকে জমা হয়। এছাড়া একই ব্যাংকে তিনি ২০১১ সালের ২২ নভেম্বর বিশেষ সঞ্চয়ী (পেনশন) হিসাব খোলেন। এতে ২০১৭ সালের ২ মে পর্যন্ত ১ লাখ ৭৩ হাজার ৯৯২ টাকা জমা হয়। এছাড়া ফরিদুল ২০১২ সালের ২৭ ডিসেম্বর আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক টেকনাফ শাখায় একটি অ্যাকাউন্ট খোলেন। ২০১৭ সালের ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ অ্যাকাউন্টে ৫৫ লাখ ৫৭ হাজার ৫৯১ টাকা জমা পড়ে। একই ব্যাংকে ২০১৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি তিনি আরেকটি অ্যাকাউন্ট খোলেন। এতে ২০১৮ সালের ১৭ মার্চ পর্যন্ত ৪৬ লাখ ১৮ হাজার টাকা জমা হয়।

বরিউলের বাবা সিদ্দিক আহাম্মদ ২০১২ সালের ২৭ ডিসেম্বর আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের টেকনাফ শাখায় একটি অ্যাকাউন্ট খোলেন। এতে পেশা হিসেবে মুদির দোকান ও লবণ ব্যবসায়ী উল্লেখ করা হয়। ২০১৮ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত এ ব্যাংক হিসাবে ২ কোটি ৯৫ লাখ ৮৭ হাজার ৩৭২ টাকা জমা হয়। টেকনাফে জনতা ব্যাংক শাখায় ১৯৯৫ সালের ২৯ আগস্ট তিনি একটি হিসাব খোলেন। এ হিসাবে ২০১৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫০ লাখ ৮১ হাজার ৫৭৫ টাকা জমা হয়।

ফরিদুলের স্ত্রী রায়হানা আক্তারের ব্যাংক হিসাবে মিলেছে অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য। এর মধ্যে আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক টেকনাফ শাখায় ২০১৭ সালের ২৯ আগস্ট তিনি একটি হিসাব খোলেন। এতে পেশা হিসেবে গৃহিণী ও আয়ের উৎস হিসেবে স্বামীর ব্যবসা দেখানো হয়েছে। ২০১৮ সালের ৩ মে পর্যন্ত ওই ব্যাংক হিসেবে ১৮ লাখ ১৮ হাজার ৪৮৪ টাকা জমা হয়। স্কুল ব্যাংকিং হিসাবে অ্যাকাউন্টটি খোলা হলেও অধিকাংশ টাকা টিটির মাধ্যমে জমা হয়। এ প্রসঙ্গে কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামরুজ্জামান যুগান্তরকে বলেন, আসামিরা পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী। মাদক ব্যবসার মাধ্যমে তারা অবৈধ সম্পদের মালিক বনেছেন। তাদের অবৈধ সম্পদের বিষয়ে অধিকতর তদন্ত করে মানি লন্ডারিং আইনে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ফাইল সিআইডিতে পাঠানো হয়েছে।

কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় - dainik shiksha কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির - dainik shiksha বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ - dainik shiksha ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ - dainik shiksha সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ - dainik shiksha নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0041320323944092