প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন রূপালী ব্যাংকের শিওর ক্যাশের মাধ্যমে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি বিতরণে যেন কোন অনিয়ম না হয়, সেব্যাপারে সতর্ক করে বলেছেন, শিওর ক্যাশের যে কর্মীরা তারা বিভিন্ন ধরনের চিন্তা-ভাবনা করেন, মায়েদের ঠকায় বা ঘুরায়- এই জিনিসটা যেন না হয়। আপনারা এটা লক্ষ্য রাখবেন।
বুধবার (৪ সেপেটম্বর) সচিবালয়ে চলতি অর্থবছরের জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে রূপালী ব্যাংকের চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংশ্লিষ্টদের এভাবেই সতর্ক করেন গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, উপবৃত্তি বিতরণে প্রধান শিক্ষকদের দুর্নীতি বিভিন্নভাবে এসেছে। এখানে আমরা সামাজিক বিভিন্ন ধরনের চাপ লক্ষ্য করেছি। এখন রূপালী ব্যাংকের মাধ্যমে সরাসরি মায়েদের হাতে টাকা দিচ্ছি। ডিজিটাল বাংলাদেশের এটা বড় একটি দৃষ্টান্ত। এই টাকা নিয়ে আগে নানা ধরনের অপকর্মের কথা শোনা আছে, জানা আছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, যেকোনো জিনিস নতুনভাবে করতে গেলে ভুল-ত্রুটি হবে। এই ভুল-ত্রুটিগুলো আপনারা লক্ষ্য করেছেন। আমি বিভিন্ন সেমিনারে দেখেছি, মায়েরা বিভিন্ন দাবি-দাওয়া করেছেন। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে সেটা ঠিক করে দিয়েছি। এ ধরনের যেন না হয়।
অনুষ্ঠানে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক মো. বদিয়ার রহমান ও রূপালী ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এসময় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএফএম মনজুর কাদির, রূপালী ব্যাংকের এমডি মো. ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ এবং শিওর ক্যাশের প্রধান নির্বাহী শাহাদাত খান উপস্থিত ছিলেন।
উপবৃত্তির মাধ্যমে সুফল এসেছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আজ মায়েরা তাদের সন্তানদের স্কুলে দেওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছে। ঝরে পড়ার হার কমে গেছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন বলেন, এক কোটি ৪০ লাখ মায়ের হাতে উপবৃত্তির টাকা দেওয়া হয়। এখানে কোনো করাপশন যেন না হয়, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিটি স্তরে নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে লোকাল এজেন্টরা মায়েদের কাছ থেকে টাকা নেয়। এটা কোনোভাবে কাম্য নয়। রূপালী ব্যাংক ও শিওর ক্যাশ কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়গুলো ভাল করে দেখতে হবে। অবস্থার পরিরর্তন করতে হবে। মায়েদের যেন সুন্দরভাবে টাকাটা পৌঁছে দিতে পারি, তাদের যেন কোনো সমস্যায় না পড়েন।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএফএম মনজুর কাদির বলেন, মোবাইল নম্বরের গণ্ডগোলের কারণে কিছু অভিযোগ এসেছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষকও হয়রানি করছে। আমি অনুরোধ করবো এটা সমাধানের ব্যবস্থা করবেন। অনিয়মগুলো যেন না হয়।
আলাপকালে শিওর ক্যাশের মাধ্যমে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন-ভাতা প্রদানে প্রতিমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করেছেন ব্যাংকটির একজন শীর্ষ কর্মকর্তা।
ওই কর্মকর্তার অনুরোধে গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন জানিয়েছেন, আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের উপবৃত্তি প্রদানের দায়িত্ব দিয়েছেন, আমরা গর্বিত। আমরা যেন টিচারদের বেতনও দিতে (শিওর ক্যাশে) পারি।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আপনারা যে দাবি করেছেন সেটি অযৌক্তিক নয়। শিক্ষকরা বেতনের সময়…ওই সোনালী ব্যাংকে যে ভিড়টি হয়, যে কষ্ট করেন বেতনের জন্য গিয়ে, এটা আমরা লক্ষ্য করি।
‘তারপরও বললেন, আমরা মন্ত্রণালয়ে বসে এটি সিদ্ধান্ত নিতে পারি, আমরা দেখবো।’