এইচটি ইমামকে নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য ও আমার কিছু কথা - দৈনিকশিক্ষা

এইচটি ইমামকে নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য ও আমার কিছু কথা

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

সদ্য প্রয়াত এইচটি ইমাম ১৯৬১ ব্যাচের সিএসপি অফিসার।  ১৯৬১ ব্যাচে মোট ২৩ জন  অফিসার নেয়া হয় যাঁদের মধ্যে মেধা তালিকায় তাঁর অবস্থান ছিল পঞ্চম। ব্যাচটিতে যথাক্রমে প্রথম, দ্বিতীয়  এবং তৃতীয় হয়েছিলেন পশ্চিম পাকিস্তানের   মোহামমদ আহমেদ; জাবেদ তালাত ও আবদুল হামিদ।

বাঙালিদের মধ্যে প্রথম হয়েছিলেন আ ন ম ইউসুফ। সম্মিলিত মেধা তালিকায় তাঁর অবস্থান ছিল চতুর্থ। ইউসুফ সাহেবের বাবা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের নামকরা উপাধ্যক্ষ ছিলেন। এইচটি ইমাম সাহেব সম্ভবত আগে কখনো সচিবালয়ে কাজ করেন নি। তিনি সরাসরি মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে সচিবালয়ে কাজ শুরু করেন।

তার মন্ত্রিপরিষদ সচিব হওয়ার বিষয়টি ছিল একটি ঘটনাচক্র । ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে তিনি রাঙ্গামাটির জেলা প্রশাসক ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি সৈয়দ হোসেন ছিলেন একজন এসডিও। সৈয়দ হোসেন সাহেব সাব-ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে চাকরিতে ঢোকেন। ১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দে প্রাদেশিক সার্ভিসের দু -অংশকে ( আপার এবং লোয়ার) একীভূত করা হয়। সাব-ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ছিল লোয়ার অংশের পদ। একই পরীক্ষা দিয়ে বেশি নম্বরপ্রাপ্তরা ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রট ও ডেপুটি  কালেক্টর হতেন।

এইচটি ইমাম রাঙামাটি থেকে ভারতে চলে যান। সে সুবাদে তিনি মন্ত্রি পরিষদ সচিব নিযুক্ত হন।

আমি সিভিল সার্ভিসের ওপর লেখালেখি করতে গিয়ে এইচটি ইমামের সিনিয়র বেশ কয়েকজন সিএসপির সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের কেউ কেউ এইচটি ইমামের ১০ বছরের সিনিয়র ছিলেন। তাদেরকে আমি প্রশ্ন করেছিলাম-- এইচটি ইমামের মতো জুনিয়রকে মন্ত্রি পরিষদ সচিব হিসেবে মেনে নিয়ে তারা কিভাবে কাজ করলেন?

তাঁরা বলেছেন, এতে তাদের অসুবিধা হয়নি। কারণ এইচটি ইমাম ছিলেন খুবই অ্যাকোমোডেটিং। তিনি সিনিয়রদের যথাযথ সন্মান দিতেন।  তিনি ছিলেন কম্প্রোমাইজ-এর (compromise) মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তিনি না হয়ে অন্য কেউ এ পদে আসলে সিএসপিরা হয়রানিতে পড়তেন। কেননা সিভিল সার্ভিস তখন দ্বিধা বিভক্ত ছিল। তদুপরি তিনি মেধাবী এবং স্থিতধী ছিলেন। নিজে নিজেই কাজ করতে পারতেন।

এইচটি ইমাম উপদেষ্টা পদে থাকাকালে বিসিএস অফিসারেরা যেটুকু ক্ষতির শিকার হয়েছেন এতে তার কী খুব বড় ভূমিকা ছিল? তিনি কী এতো জুনিয়রদের চিনতেন?  তার কাছে সত্যমিথ্যা তো বলেছেন সমসাময়িকরা। আবার নিজেরা ভালো মানুষ সাজার  জন্য তারাই জনাব ইমামের দুর্নাম করে বেড়িয়েছেন। একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট স্বীয় উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ করতে/মই দিয়ে আকাশে উঠতে সমসাময়িক অনেকের ক্যারিয়ার ধ্বংস করেছে। অন্যায্য পথে আকাশে ওঠা    সমসাময়িকরা কেউ কেউ যে রুঢ় আচরণ করেছে, এইচটি ইমাম সাহেব সম্ভবত এমনটি করেননি। তবে বড় পদের মালিক হিসেবে তার দায়ও ছিল না, এমনটি কিন্তু নয়।

 প্ররোচনা এবং স্বীয় ভূমিকা দুটোই হয়তো সত্য। সত্য কখনো গোপন রাখা যায় না। একদিন হয়তো  সঠিকটা জানা যাবে।

এটি কারো সমথর্নে অথবা বিরুদ্ধে লেখা নয়। একান্তই অ্যাকাডেমিক আলোচনা। 

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁকে জান্নাত দান করুন। আমিন।

লেখক : একেএম আবদুল আউয়াল মজুমদার, সাবেক সচিব। লেখাটি তাঁর ফেসবুক থেকে নেয়া।  

এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা - dainik shiksha শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0032601356506348