মো. এখলাস উদ্দিন নয়ন প্রমাণ করলেন লেখাপড়ায় বয়স কোনো বিষয় নয়। এবারের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে বাবা-ছেলে একসঙ্গে পাস করে ব্যতিক্রমী সেই দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন ৪৫ বছর বয়সের এ ব্যক্তি। তিনি ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ২ নম্বর গৌরীপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য। এর মধ্যে এখলাস উদ্দিন নয়ন পার্শ্ববর্তী কেন্দুয়া উপজেলার মগরাই আদর্শ কারিগরি ইন্সটিটিউট থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছেন। তার ছেলে মোহাম্মদ রায়হানও (১৭) পেয়েছেন জিপিএ-৫। তিনি গৌরীপুর টেনকিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থী।
এ নিয়ে অদম্য এই ইউপি সদেস্যর পরিবারে খুশির আমেজ সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার গৌরীপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সালমা আক্তার রুবি এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি এখলাস উদ্দিন নয়নকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, লেখাপড়ার কোনো বয়স নেই। এখলাস উদ্দিন নয়ন তা প্রমাণ করেছেন। এখন তিনি সুন্দর সমাজ গঠনে আরও বেশি ভূমিকা রাখতে পারবেন বলেও আশা করছি।
এখলাস উদ্দিন নয়ন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, বয়স হয়ে যাওয়ার কারণে আমার লেখাপড়া করার ইচ্ছা ছিলো না। কিন্তু স্ত্রী সমলা বেগমের কারণেই ছেলের সঙ্গে আমাকেও পরীক্ষা দিতে হয়েছে। লেখাপড়ায় আমার চেয়ে তার আগ্রহ বেশি।
তিনি আরও বলেন, পরীক্ষা দেয়ার সময় কিছুটা অস্বস্তি লাগলেও ফল পেয়ে এখন ভালো লাগছে। ছেলের সঙ্গে আমিও কলেজে ভর্তি হয়ে লেখাপড়া চালিয়ে যাবো বলে মনস্থির করেছি।
জানা গেছে, ছেলে-মেয়ে নিয়ে ৪ সদস্যের সংসার এখলাছ উদ্দিন নয়নের। এরমধ্যে মেয়ে আঁখি আক্তার ইতোমধ্যে বিএ পাস করেছে। আর ছোট ছেলে রায়হান বাবার সঙ্গে এবার এসএসসি পাস করেছেন।
নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার মগরাইল আদর্শ কারিগরি ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ আব্দুল কাইয়ুম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এখলাছ উদ্দীন নয়ন আমার প্রতিষ্ঠানের নিয়মিত শিক্ষার্থী। তিনি এ বছর আমার প্রতিষ্ঠান থেকে পরীক্ষা দিয়েছেন। এ বয়সে এসে তার এমন ফলে আমরা গর্বিত।
এ খবরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাসান মারুফ। তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, খবরটি শুনে ভালো লেগেছে। শিক্ষার কোনো বয়স নেই, শিক্ষা প্রতিটি মানুষের মৌলিক অধিকার। অদম্য এ বাবাকে দেখে সাধারণ মানুষ লেখাপড়ায় আরও অনুপ্রাণিত হবে।