একাই স্কুল চালাচ্ছেন প্রধান শিক্ষক - দৈনিকশিক্ষা

একাই স্কুল চালাচ্ছেন প্রধান শিক্ষক

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

বিদ্যালয় চত্বরে সুনসান নীরবতা। শ্রেণিকক্ষগুলোর দরজায় তালা ঝুলছে; তবে একটি শ্রেণিকক্ষ খোলা রয়েছে। তার ভেতরে ১০ শিক্ষার্থীকে একা পাঠদান করাচ্ছেন প্রধান শিক্ষক মো. শাহজামাল।  

জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার ৫নং চর উত্তর রুস্তম আলী মাস্টার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চিত্র এটি। শিক্ষক না থাকায় বিদ্যালয়টিতে ঠিকমতো ক্লাস হয় না। তাই শিক্ষার্থীরাও স্কুলে আসতে চায় না। শিক্ষক–সংকটের কারণে বিদ্যালয়টিতে প্রতিবছর শিক্ষার্থী কমে যাচ্ছে। 

২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে সরকারিকরণ করা হয় বিদ্যালয়টি; সেখানে দেখা যায়, প্রধান শিক্ষক ও একজন সহকারী শিক্ষক দিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম চলতে থাকেন। ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বরে একমাত্র সহকারী শিক্ষকও বদলী হয়ে যান। এরপর থেকেই বিদ্যালয়ের ছয়টি শ্রেণির বোঝা পড়ে প্রধান শিক্ষক মো. শাহজামালের কাঁধে। যদিও বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের চারটি পদ শূন্য রয়েছে। তবে  বিদ্যালয়টি দুর্গম চরাঞ্চলে হওয়ায় আসতে চান না কোনো শিক্ষক বলে জানান স্থানীয়রা।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয় চত্বর নিস্তব্ধ।  ১০ শিক্ষার্থীকে একজন শিক্ষক পাঠদান করাচ্ছেন। তার মধ্যে তৃতীয় শ্রেণির চারজন, চতুর্থ শ্রেণির দুজন ও পঞ্চম শ্রেণির চারজন শিক্ষার্থী রয়েছে। তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে একটি রুমেই নেয়া হচ্ছে সব গুলো ক্লাস।

প্রধান শিক্ষক মো. শাহজামাল জানান, ‘গত ১ বছর ধরে বিদ্যালয়ের ছয়টি শ্রেণির পাঠদানসহ সকল কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন তিনি। শিক্ষক না থাকায় শিক্ষার্থীও কমে যাচ্ছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ হওয়ায় এখানে আসতে চান না কোনো শিক্ষক।’

পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. শরিফুল ইসলাম জানান, ‘একজন শিক্ষক দিয়েই চলছে আমাদের বিদ্যালয়। শিক্ষক না থাকায় ছাত্র-ছাত্রীরা অন্য স্কুলে চলে যাচ্ছে।’

চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী আল সাফি বলেন, ‘আমরা পঞ্চম শ্রেণির মাত্র দুজন আছি। এখানে সবার ক্লাস একত্রে নেয়া হয়।’

স্থানীয়রা জানান, ‘বিদ্যালয়টি দুর্গম চরাঞ্চলে হওয়ায় আসতে চান না কোনো শিক্ষক। বিদ্যালয়ের ছয়টি শ্রেণির পাঠদানসহ সব কার্যক্রম করতে হয় প্রধান শিক্ষককে।’

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুল মালেক জানান, ‘বর্ষাকালে যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই খারাপ থাকার কারণে শিক্ষক শূন্যতায় পড়েছে বিদ্যালয়টি। বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও স্থানীয় সংসদ সদস্যকে অবহিত করেছি কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।’

মেলান্দহ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী চকদার বলেন, ‘এই উপজেলায় আমি নতুন যোগদান করেছি। বিদ্যালয়ে শিক্ষক না থাকার বিষয়টি জেনেছি। যত দ্রুত সম্ভব বিদ্যালয়ে ডেপুটেশনে শিক্ষক দেয়া হবে।’

এ বিদ্যালয়ের খাতা কলমে ছয়টি শ্রেণিতে ৭২ শিক্ষার্থী রয়েছে। তার মধ্যে প্রাক-প্রাথমিকে ১০ জন, প্রথম শ্রেণিতে ১০ জন, দ্বিতীয় শ্রেণিতে ১২ , তৃতীয় শ্রেণিতে ১২, চতুর্থ শ্রেণিতে ১৩ ও পঞ্চম শ্রেণিতে ১২ জন শিক্ষার্থী রয়েছে।

শিক্ষার্থীদের রাজাকার বলিনি, বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের রাজাকার বলিনি, বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী তীব্র সেশনজটের মহাশঙ্কা - dainik shiksha তীব্র সেশনজটের মহাশঙ্কা কলেজে ভর্তি : অতি চালাকদের শিক্ষাবোর্ডে ধরনা! - dainik shiksha কলেজে ভর্তি : অতি চালাকদের শিক্ষাবোর্ডে ধরনা! ক্যাম্পাস খুললে শিক্ষকরা কর্মসূচি চালু রাখবেন - dainik shiksha ক্যাম্পাস খুললে শিক্ষকরা কর্মসূচি চালু রাখবেন প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে কোটা, যা জানালেন সচিব - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে কোটা, যা জানালেন সচিব কলেজে ভর্তির সময় বাড়লো, ক্লাস শুরু ৬ আগস্ট - dainik shiksha কলেজে ভর্তির সময় বাড়লো, ক্লাস শুরু ৬ আগস্ট স্থগিত এইচএসসি পরীক্ষা ১১ আগস্টের পর - dainik shiksha স্থগিত এইচএসসি পরীক্ষা ১১ আগস্টের পর দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0049080848693848