নাগেশ্বরী উপজেলার সাপখাওয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল গণি সরকারের বিরুদ্ধে ভুয়া নামে এ পর্যন্ত প্রায় ৮ লাখ সরকারি টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়া গেছে। অভিযোগে জানা গেছে, এমপিও শিটে সুলতান মাহমুদ নামে একই শিক্ষকের নাম দুইবার মুদ্রিত হওয়ায় প্রধান শিক্ষক আব্দুল গণি সরকার অতিরিক্ত মুদ্রিত ওই নামের বিপরীতে আসা সরকারি বেতন ভাতা ফেরত না দিয়ে বরং জাল কাগজপত্র দাখিল করে আলাদা ব্যাংক একাউন্টে নিয়মিত টাকা ওঠাচ্ছেন।
এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর ওই এলাকার সফিকুল ইসলাম গত ৬ মে বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত করে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেন।
তদন্ত করে এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। ১৭ মে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে এর তদন্ত অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রকৃত সুলতান মাহমুদ তার নিয়োগ সংক্রান্ত সকল কাগজপত্র নিয়ে উপস্থিত হলেও প্রধান শিক্ষক উপস্থিত হননি।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সাপখাওয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত কৃষি শিক্ষক সুলতান মাহমুদ ২০১৪ সালে এমপিওভুক্ত হন। যার ইনডেক্স নম্বর ১০৬৯৮০০। ওই এমপিও শিটে ভুলবশত সুলতান মাহমুদের নাম দুইবার মুদ্রিত হয়। অন্যটির ইনডেক্স নম্বর ১০৭২৬৩৯, বেতন কোড: ১০।
এদিকে অতিরিক্ত নাম আসার সুযোগে প্রধান শিক্ষক আব্দুল গণি সরকার সিরাজুল ইসলাম মণ্ডল নামের একজনের জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বর ব্যবহার করে ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করেন। পরে এমপিও শিটের অতিরিক্ত মুদ্রিত সুলতান মাহমুদের নামে সোনালী ব্যাংক, নাগেশ্বরী শাখায় একটি হিসাব নম্বর খোলেন। যার নম্বর ৫২১২৬০১০২৩৮৯৬। এই একাউন্ট ব্যবহার করে নিয়মিত মাসিক বেতন ভাতা তুলে আত্মসাৎ করছেন প্রধান শিক্ষক।
ব্যাংক স্টেটমেন্ট অনুযায়ী, প্রধান শিক্ষক এ পর্যন্ত ৭ লাখ ৬৬ হাজার ২৪০ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়াও হিসাব নম্বরের বিপরীতে তিনি ভোগ্যপণ্য ঋণ করেন ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
প্রধান শিক্ষক আব্দুল গণি সরকার টাকা উত্তোলনের ঘটনা স্বীকার করে বলেন, বুধবার (৬ জুন) ওই টাকা ফেরৎ দেয়া হবে।
উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা জহুরুল হক বলেন, প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে প্রধান শিক্ষক কাগজপত্র জাল করে সরকারি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।