কলেজ থেকে বাসায় ফেরার পথে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয় সাফায়াত আল হোসাইন। এই ঘটনার পর এক মাস হয়ে গেলেও কোনও খোঁজ নেই তার। সাফায়েতের সন্ধান দাবিতে পরিবারের সদস্যরা স্থানীয় প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। এতদিনে সাফায়াতের ভাগ্যে কী ঘটেছে-এ নিয়ে উদ্বিগ্ন ও শঙ্কিত পরিবারের সদস্যসহ স্বজন ও এলাকাবাসী।
গত ২৫ জুন ময়মনসিংহের নটরডেম কলেজ থেকে নগরীর বাউন্ডারি রোডের বাসায় ফেরার পথে নিখোঁজ হয় উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সাফায়াত আল হোসাইন(১৯)। পারিবারিক সূত্র জানায়, নিখোঁজ হওয়ার আগে ক্লাস শেষে বেলা ১২টা ৫০ মিনিটে কলেজ থেকে বের হয় সাফায়াত। এরপর থেকেই সে নিখোঁজ হয়।
এ ব্যাপারে ওইদিন রাতে কোতোয়ালি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন সাফায়াতের বাবা আফজাল হোসেন। এই ঘটনায় ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার শাহ আবিদ হোসেনসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা সাফায়াতের বাউন্ডারি রোডের বাসায় যান এবং তল্লাশির পর সাফায়াতের ব্যবহৃত কম্পিটার জব্ধ করে নিয়ে আসেন। ইতোমধ্যে পার হয়েছে এক মাস।
এ সময়ে সাফায়াতের কোনও খবর মেলেনি। এ নিয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন সাফায়াতের বাবা-মাসহ স্বজনরা। তারা এখনও ধরনা দিয়ে যাচ্ছেন স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ নানা মহলের কাছে। সাফায়াতের গ্রামের বাড়ি ত্রিশাল উপজেলার বালিপাড়া গ্রামে এলাকাবাসী একই দাবিতে মানববন্ধনসহ সমাবেশ করেছেন।
সাফায়াতের বাবা আফজাল হোসেন জানান, মেধাবী সাফায়াত ময়মনসিংহ জিলা স্কুল থেকে এসএসসি পাস করার পর নটরডেম কলেজে ভর্তি হয়। পড়াশুনা আর নামাজ ছাড়া কোনও নেশা ছিল না তার। আইটিতে দক্ষ সাফায়াত বাসায় সময় পেলে ক্যাডেটপড়ুয়া ছোট ভাইকে নিয়ে কম্পিউটারে গেম খেলতো। পাড়ায় তার তেমন কোনও বন্ধু-বান্ধবও ছিল না।
কলেজের সহপাঠীরা জানায়, সাফায়াত তার সহপাঠীদের সঙ্গে কম মিশতো। পড়ালেখা ছাড়া তার কোনও কথাবার্তাও ছিল না। কোনও আড্ডায় যোগ দিত না।
নটরডেম কলেজের অধ্যক্ষ কমল রোজারিও বলেন, ‘সাফায়াত খুবই মেধাবী শিক্ষার্থী। বিষেশ করে কম্পিউটারে সে দারুণ পারদর্শী। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তার সন্ধানে কাজ করছে। আমরা আশা করবো দ্রুতই তার খোঁজ মিলবে।’
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার শাহ আবিদ হোসেন বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কোনও খোঁজ নেই। তবে সাফায়াতের সন্ধানে আমরা কাজ করে চলেছি।’ সাফায়াতের নিখোঁজ হওয়ার সঙ্গে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা বা কোনও অপরাধী গোষ্ঠীর হাত আছে কিনা সে ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে পুলিশ সুপার বিষয়টি এড়িয়ে যান।