এত পরীক্ষার কী দরকার? - দৈনিকশিক্ষা

এত পরীক্ষার কী দরকার?

নিজস্ব প্রতিবেদক |

পরীক্ষার ভারে ক্লান্ত শিক্ষার্থীরা। কয়েক বছর যেতে না যেতেই একজন শিক্ষার্থীকে বসতে হচ্ছে পাবলিক পরীক্ষায়। পাঁচ বছর পড়ালেখা করতেই খুদে শিক্ষার্থীদের দিতে হয় প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষা, এরপর তিন বছর পার হতে না হতেই দিতে হয় জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষা। এর দুই বছর পর এসএসসি ও তার দুই বছর পর বসতে হচ্ছে এইচএসসি পরীক্ষায়। আর বছরজুড়ে স্কুল-কলেজে সিটি পরীক্ষা, ষাণ্মাসিক পরীক্ষা, বার্ষিক পরীক্ষাসহ নানা পরীক্ষা তো রয়েছেই।

অভিযোগ আছে, যত বেশি পরীক্ষা, তত বেশি প্রশ্ন ফাঁস। অর্থাৎ প্রতিটি পরীক্ষা ঘিরেই গড়ে উঠেছে প্রশ্ন ফাঁসের নানা সিন্ডিকেট। আর এই পরীক্ষাকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে কোচিং বাণিজ্য। স্কুলগুলোতেও পরীক্ষা উপলক্ষে আবশ্যিকভাবে কোচিং করতে হয়। আর পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পাওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের নিয়মিত কোচিং-প্রাইভেট পড়তে হয়। প্রশ্ন ফাঁসেও জড়িত থাকে কোচিং সেন্টারগুলো, এমনকি শিক্ষকরাও।

তবে জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০-এ পরীক্ষা কমানোর কথা বলা হয়েছে। উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত তারা দুটি পরীক্ষার কথা বলেছে। তবে প্রথমে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা উঠিয়ে দেওয়ার কথা বলেছে। আর অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষা উন্নীতের কথাও শিক্ষানীতিতে বলা হয়েছে। কিন্তু মহাজোট সরকারের সময়েই সর্বসম্মতিক্রমে জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন হলেও তা বাস্তবায়নে তেমন একটা উদ্যোগ নেই। প্রাথমিক শিক্ষা অষ্টম শ্রেণিতে উন্নীতকরণে উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা ভেস্তে গেছে। আর পরীক্ষা কমাতেও নারাজ সরকার।

শিক্ষাবিদরা বলছেন, একজন শিক্ষার্থীর জন্য এত পরীক্ষার কী দরকার? শিশুদের পরীক্ষার ভার কমাতে হবে। পরীক্ষার চেয়ে শিশুদের সার্বিক বিকাশের দিকে নজর দেওয়া উচিত। বাংলাদেশের মতো এত পরীক্ষা বিশ্বের অন্য কোথাও নেই।

অভিভাবক সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শামীমা সুলতানা নীপা বলেন, ‘পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পাওয়ার জন্যই মূলত কোচিং-প্রাইভেটের পেছনে দৌড়ান অভিভাবকরা। এই পরীক্ষা নিয়েই নানা বাণিজ্যের সুযোগ তৈরি হয়েছে। কিন্তু বাচ্চাটা এত ভার বহন করতে পারছে কি না সে চিন্তা কারো নেই। যদি পিইসি পরীক্ষা না থাকত তাহলে প্রশ্ন ফাঁসেরও কোনো চিন্তা থাকত না। আর মন্ত্রণালয়ও অন্য পরীক্ষার ব্যাপারে ভালোভাবে সময় দিতে পারত।’

জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ প্রণয়ন কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ কাজী ফারুক আহমেদ বলেন, ‘আমাদের পরীক্ষাব্যবস্থাটা অকার্যকর হয়ে পড়েছে। প্রচলিত পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের মেধা যাচাই হয় না। যে শিক্ষক একটা বাচ্চাকে পড়ান, তিনিই হলেন তার জন্য শ্রেষ্ঠ পরীক্ষক। তাঁকেই ওই শিক্ষার্থীর মূল্যায়নের দায়িত্ব দিতে হবে। এ জন্যই আমরা শিক্ষানীতিতে পঞ্চম শ্রেণি শেষে পরীক্ষা উঠিয়ে দিতে বলেছিলাম। মালয়েশিয়ার মতো দেশে দ্বাদশ শ্রেণীর আগে কোনো পরীক্ষা নেই। অথচ আমাদের বাচ্চাদের কয়েক বছর যেতে না যেতেই পাবলিক পরীক্ষায় বসতে হয়। এখন আমাদের শিক্ষাই হয়ে গেছে পরীক্ষানির্ভর। অবিলম্বে তা বন্ধ করতে হবে।’

এই শিক্ষাবিদ আরো বলেন, ‘একটা স্কুলে যদি নিয়মিত পাঠদান হয়, আর শিক্ষার্থীরা যদি নিয়মিত আসে সেটাই তো তার বড় মূল্যায়ন। আর এত বিষয়েও পরীক্ষা নেওয়ার তো কোনো দরকার নেই। নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানেই মূল্যায়নের ব্যবস্থা থাকতে হবে। শিক্ষাব্যবস্থা সংস্কারে প্রয়োজনে এ ব্যাপারে একটি ন্যাশনাল টাস্কফোর্স করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবে সেই টাস্কফোর্স হতে হবে শিক্ষাবিদদের নিয়ে। কোনোভাবেই আমলাদের দিয়ে নয়।’

 সৌজন্যে: কালের কণ্ঠ

কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস - dainik shiksha কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি - dainik shiksha সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি - dainik shiksha বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় - dainik shiksha ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব - dainik shiksha একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0033819675445557