এমপিওভুক্তি হলে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে ১৪ মাসের বেতনের পুরোটাই দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন লিপা রানী সরকার নামে এক শিক্ষিকা। এ তহবিল থেকে করোনায় আক্রান্তদের সহায়তা করা হয়। সম্প্রতি দৈনিক শিক্ষার ইমেইলে তিনি একটি লেখা পাঠান। সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি খোলা চিঠি।
মেইলে বলা হয়, গত ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ ডিসেম্বর বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে এমপিওভুক্ত পদে আবেদন করেন লিপা। ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ২৪ জানুয়ারি সহকারী শিক্ষক হিসেবে জাতীয় মেধা তালিকায় নির্বাচিত হন তিনি। গত ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ ফেব্রুয়ারি পীরগঞ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে হিন্দু ধর্ম শিক্ষা বিষয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন লিপা রানী সরকার। প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভুক্ত হলেও যোগদানের পর লিপা জানতে পারেন তার পদটি নন-এমপিও। এনটিআরসিএ’র কর্মকর্তাদের ভুলে শূন্যপদে এমপিওভুক্ত শিক্ষক হিসেবে নির্বাচিত হয়েও এখনও এমপিওভুক্ত হতে পারেননি তিনি। এ বিষয়টি সমাধানে একাধিকবার এনটিআরসিএ ও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে লিখিত আবেদন জানিয়েও কোনো ফল পাননি লিপা। ফলে গত ১৪ মাস ধরে বিনা বেতনে শিক্ষকতা করছেন তিনি।
বিষয়টির সমাধান চেয়ে এমপিওভুক্ত করার দাবি জানিয়ে লিপা রানী সরকার প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি খোলা চিঠি পাঠিয়েছেন। দৈনিক শিক্ষার পাঠকদের জন্য লিপা রানী সরকারের চিঠিটি তুলে ধরা হলো-
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
যথাযথ সম্মানপ্রদর্শন পূর্বক বিনীত নিবেদন এই যে, সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও মহামারি আকারে ছড়িয়ে পরেছে করোনা ভাইরাস। দেশের এই দুর্যোগ মুহূর্তে আমি আপনার ত্রাণ তহবিলে আমার বকেয়া ১৪ মাসের বেতন ভাতা দিতে আগ্রহী। তবে তার আগে আমার চাকরির বর্তমান অবস্থা নিম্নে বর্ণনা করছি।
বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) এর ১৯/১২/২০১৮ তারিখের বিজ্ঞপ্তিতে আমি এমপিওভুক্ত পদে আবেদন করি ও গত বছরের ২৪ জানুয়ারি সহকারী শিক্ষক হিসেবে জাতীয় মেধা তালিকায় নির্বাচিত হই। তার প্রেক্ষিতে আমাকে পীরগঞ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে সুপারিশ করা হলে আমি উক্ত প্রতিষ্ঠানে হিন্দু ধর্ম পদে গত বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি যোগদান করি এবং যোগদানের সময় জানতে পারি উক্ত প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভুক্ত হলেও আমার পদটি নন-এমপিও (প্রভাতী শাখা)।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ভুলের কারণে আমি শূন্যপদের এমপিওভুক্ত শিক্ষক হিসেবে নির্বাচিত হয়েও এখনও এমপিওভুক্ত হতে পারি নাই। উক্ত ভুলটি সংশোধনের জন্য আমি বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে লিখিত আকারে একাধিকবার জানালেও এখন পর্যন্ত সমাধান পাইনি। ফলে গত ১৪ মাস ধরে বিনা বেতনে আর্থিক কষ্টে শিক্ষকতা অব্যাহত রেখেছি।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আমার সমস্যার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আপনার নিকট জোর অনুরোধ করছি এবং আপনার সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করছি। সাধারণ ছুটির পরে আমাকে এমপিওভুক্ত করা হলে আমার বকেয়া ১৪ মাসের বেতন ভাতা সম্পূর্ণ জাতীয় এই দুর্দিনে আপনার ত্রাণ তহবিলে দান করবো।
আপনার দীর্ঘায়ু এবং সুস্থ জীবন কামনায়
লিপা রানী সরকার
সহকারী শিক্ষক
পীরগঞ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়
পীরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও।