সিলেটের এমসি কলেজে দা, রড উঁচিয়ে ছাত্রদলকে ধাওয়াকারীর ছয়জন অস্ত্রধারীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। আদালতের নির্দেশে পুলিশের দাখিল করা তদন্ত প্রতিবেদনের শুনানি শেষে আজ বুধবার (১৫ই ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সিলেটের মুখ্য মহানগর বিচারিক হাকিম মো. সাইফুজ্জামান হিরো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন।
গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়া ছয়জন হচ্ছেন মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার উত্তরবাগ গ্রামের বাসিন্দা সৌরভ আচার্য (২৬), সিলেট মহানগরের শাহপরান থানা এলাকার সাদিপুরের তারেক আহমদ (২৩), সুনামগঞ্জের দিরাইয়ের নগদীপুরের মো. রবিউল হাসান (২২), সিলেটের মোগলাবাজারের দাউদপুরের আলতাফ হোসেন মুরাদ (২৩), শাহপরান থানার মিরাপাড়ার সালমান অপু ওরফে শামছুল ইসলাম অপু (২৪) ও সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার ফকিরেরগাঁওয়ের আপন (২৩)। ছয়জনই এমসি কলেজের ছাত্র।
মহানগর আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি মাহফুজুর রহমান জানান, ২৬ ফেব্রুয়ারি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছেন আদালত। পাশাপাশি এ ঘটনায় দ্রুত বিচার আইনে মামলা নথিভুক্ত করার নির্দেশও দিয়েছেন আদালত।
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের এমসি কলেজ শাখার আহ্বায়ক কমিটি হওয়ায় গত ৩০ জানুয়ারি নবগঠিত কমিটিকে নিয়ে কলেজ ক্যাম্পাসে আনন্দ মিছিল করার সময় ছাত্রলীগের একটি পক্ষ প্রকাশ্যে দা, রডসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র উঁচিয়ে ছাত্রদলকে ধাওয়া করে ক্যাম্পাসছাড়া করে।
পরদিন বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সচিত্র প্রতিবেদন ছাপা হলে সিলেটের মুখ্য মহানগর বিচারিক হাকিম মো. সাইফুজ্জামান হিরো ফৌজধারী কার্যবিধির (কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর) ১৮৮৯-এর ২৫ ধারার ক্ষমতাবলে এক আদেশে ধাওয়াকারীদের চিহ্নিত করে তদন্ত প্রতিবেদন সাত দিনের মধ্যে দাখিল করতে মহানগর পুলিশকে নির্দেশ দেন।
আদালতের স্বতঃপ্রণোদিত ওই আদেশে ৩১ জানুয়ারি একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদের এ বিষয়ে শিরোনাম উল্লেখ করে বলা হয়, এতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সুনির্দিষ্ট বিবরণ রয়েছে। প্রকাশিত এই খবরে জনমনে এবং ঘটনাস্থল এমসি কলেজের সাধারণ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম ভীতি ও উদ্বেগজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে মর্মে প্রতীয়মান হয়।
আদেশে আরও বলা হয়, সিলেট এমসি কলেজ দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসী চক্রের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে; যা বারবার জাতীয় পত্রিকার শিরোনাম হচ্ছে। এ ঘটনা জনশৃঙ্খলা ও আইনের শাসনের প্রতি চরম হুমকিস্বরূপ।
আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী পুলিশ গত সোমবার (১৩ই ফেব্রুয়ারি) তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করলে গতকাল শুনানি শেষে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়।
আদালত সূত্র জানায়, পরোয়ানা জারির আদেশে বলা হয়, ‘গত ৩১ জানুয়ারি একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সচিত্র রিপোর্টে বর্ণিত সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের শনাক্ত ও চিহ্নিত করা হয়েছে। সিলেটের এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে প্রকাশ্য দিবালোকে অস্ত্রের মহড়া দিয়ে ত্রাস সৃষ্টিকারী অস্ত্রধারী চিহ্নিত ব্যক্তিদের নাম ও ঠিকানা তদন্ত রিপোর্টে সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, যা গুরুতর আমলযোগ্য অপরাধ।’