এমসি কলেজে হঠাৎ বেড়েছে শিক্ষার্থী উপস্থিতি - Dainikshiksha

এমসি কলেজে হঠাৎ বেড়েছে শিক্ষার্থী উপস্থিতি

মোশতাক আহমেদ ও সুমনকুমার দাশ |

সিলেটের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মুরারি চাঁদ (এমসি) কলেজের অন্যতম সমস্যা ক্লাসে শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতি। কিন্তু গত ১৫ দিনে চিরচেনা এই চিত্র বদলে গেছে। ১৫ দিন আগেও ক্লাসে যেখানে উপস্থিতির হার ছিল ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ, সেখানে কয়েক দিন ধরে উপস্থিতির হার ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ।

কলেজের কয়েকজন শিক্ষক-শিক্ষার্থী বললেন, রাজধানীর গুলশান ও কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার পর শিক্ষার্থীদের টানা ১০ দিন অনুপস্থিত থাকলে তা অভিভাবক ও পুলিশকে জানাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারি করা আদেশের কারণেই এই উপস্থিতি বেড়েছে। ক্লাসে অনুপস্থিত থাকার কারণে শিক্ষার্থীরা কোনো হয়রানিতে পড়তে চান না। তবে বদলে যাওয়া এ চিত্র কত দিন থাকবে, তা নিশ্চিত নন কেউ।

গত সোম ও মঙ্গলবার কলেজটিতে গিয়ে জানা গেল এসব তথ্য। ১২৪ বছরের পুরোনো (১৮৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত) এই সরকারি কলেজে এখন শিক্ষার্থী প্রায় ১৪ হাজার। উচ্চমাধ্যমিক ও ডিগ্রি (পাস) ছাড়াও ১৫টি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) ও ১৬টি বিষয়ে স্নাতকোত্তর পড়ানো হচ্ছে। তবে বাণিজ্য বিভাগ নেই।

মঙ্গলবার কলেজে দেখা গেল প্রচুর শিক্ষার্থী। তাঁদের একজন অর্থনীতি (সম্মান) দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মাহফুজুর রহমান বললেন, বিভিন্ন সময়ে পরীক্ষা থাকার কারণে কলেজে ঠিকমতো ক্লাস হতো না। এ কারণে শিক্ষার্থীরাও ঠিকমতো আসতেন না। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশের পর দুই সপ্তাহ ধরে উপস্থিতি বেড়েছে। তিনি বলেন, তাঁদের ক্লাসে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী।

কিছুদিন আগেও ক্লাসে ৫০-৬০ জন উপস্থিত থাকতেন। অথচ সোম ও মঙ্গলবার উপস্থিত ছিলেন দেড় শ।
এ কথার মিল পাওয়া গেল গণিত বিভাগে গিয়ে। এই বিভাগের প্রভাষক দিলীপ রায় উপস্থিতির খাতা দেখিয়ে বললেন, স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষে মঙ্গলবার উপস্থিত ছিলেন ৫০ জন। অথচ ১১ জুলাই একই ক্লাসে উপস্থিত ছিলেন ২৩ জন।

গণিত বিভাগের একাধিক শিক্ষক বললেন, আগে বিএসসি তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা ক্লাসে আসতেন না। কিন্তু মঙ্গলবার বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী এসে বলেছেন ক্লাস করবেন। উচ্চমাধ্যমিকসহ অন্যান্য শ্রেণিতেও শিক্ষার্থী উপস্থিতি বেড়েছে।

কলেজের অধ্যক্ষ নিতাই চন্দ্র চন্দ বলেন, মূলত জঙ্গি সন্দেহে ‘নিখোঁজ’ বিবেচিত হওয়ার ভয় থেকেই শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বেড়েছে। আগে গড়ে ৩৫ শতাংশের মতো উপস্থিত থাকতেন। এখন ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ পর্যন্ত উপস্থিত হচ্ছেন। এটা ইতিবাচক দিক। তবে এর ধারাবাহিকতা থাকলেই হয়।

ক্লাসের অন্তরায় পরীক্ষা: কলেজের কয়েকজন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী অভিযোগ করলেন, বোর্ডের পরীক্ষার পাশাপাশি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘন ঘন পরীক্ষা থাকার কারণে এই কলেজে বছরে চার-পাঁচ মাসও ঠিকমতো ক্লাস নেওয়া যায় না।

এর মধ্যে এখন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘোষিত ‘ক্র্যাশ প্রোগ্রামের (সেশনজট কমাতে ২০১৮ সাল পর্যন্ত পরীক্ষার সময় ঘোষণা)’ কারণে এমনিতেই চার মাসের বেশি ক্লাস নেওয়ার সুযোগ নেই। রসায়ন বিভাগের একজন জ্যেষ্ঠ শিক্ষক বললেন, এখন যাঁরা স্নাতক (সম্মান) তৃতীয় বর্ষে পড়ছেন, তাঁদের তৃতীয় বর্ষ পরীক্ষার ফরম পূরণ হয়ে গেছে। অথচ এই শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় বর্ষের ব্যবহারিক পরীক্ষা দিয়েছেন গত মার্চে।

তাঁর হিসাবে, এসব বর্ষের শিক্ষার্থীরা বড়জোর চার মাস ক্লাস পাচ্ছেন। অথচ তাঁদের পরীক্ষার সম্ভাব্য সময় আগামী মাস। পরীক্ষার চাপের কারণে শিক্ষার্থীরাও ক্লাসে বেশি উপস্থিত থাকেন না।

গণিত বিভাগের এক শিক্ষক বললেন, আগামী ১৩ আগস্ট থেকে বিএসসি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে, ফলে ওই সময় দুপুর ১২টার পর আর ক্লাস হবে না।

অধ্যক্ষ বললেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাগুলো এখন বিকেলে নেওয়া হয়। ফলে সকালে তাঁরা ক্লাস নেন। তবে কয়েকজন শিক্ষক বললেন, এই শিক্ষকেরাই ক্লাস নেন, আবার পরীক্ষাও নেন। ফলে বাস্তবতা কী হতে পারে তা অনুমেয়।

পরীক্ষার জন্য একটি ভবন করা হলেও সেখানেও এখন তিনটি বিভাগ স্থানান্তর করা হয়েছে। ফলে বিভিন্ন বিভাগের শ্রেণিকক্ষে পরীক্ষা নিতে হয়। বড় একটি স্বতন্ত্র পরীক্ষাকেন্দ্র করা গেলে পরীক্ষার কারণে ক্লাস না হওয়ার সমস্যা অনেকটা কেটে যেত বলে মনে করেন শিক্ষকেরা।

শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.00319504737854