ব্যবহারিক পরীক্ষার নামে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বোর্ড নির্ধারিত ফি’র বাইরে এই অতিরিক্ত টাকা আদায় করছেন রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকার কেন্দ্রসচিব ও প্রতিষ্ঠান প্রধানরা। অতিরিক্ত পাঁচশ টাকা দাবি করা হচ্ছে। টাকা না দিলে পরীক্ষায় কম নম্বর দেয়ার হুমকিও দেয়া হচ্ছে। ব্যবহারিক পরীক্ষায় কম নম্বর দেয়া হতে পারে এই আশঙ্কায় টাকা দিতে বাধ্য হচ্ছে পরীক্ষার্থীরা। ৪ মার্চ থেকে ব্যবহারিক পরীক্ষা শুরু। রাজধানীর মিরপুরের হযরত শাহ আলী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, সামছুল হক খান, মাইলস্টোনসহ সারাদেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। শাহ আলী কেন্দ্রে সোমবার (৪ মার্চ) পদার্থ ও রসায়নের ব্যবহারিক পরীক্ষা সকাল সাড়ে আটটায় শুরু হবে।
ব্যবহারিক পরীক্ষায় অতিরিক্ত অর্থ আদায়কারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার বিষয়ে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সিনিয়র সচিব মো. সোহরাব হোসাইন রোববার বিকেলে দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, ‘আজই বোর্ড চেয়ারম্যানদের সাথে বৈঠককালে এ বিষয়ে কড়া নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অতিরিক্ত টাকা নিলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়ে মন্ত্রণালয়কে জানাতে বলা হয়েছে।’
জানা যায়, গত ২৫ সেপ্টেম্বর এসএসসির পরীক্ষার ফরম পূরণের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। বিজ্ঞপ্তি অনুসারে পরীক্ষার্থীদের ব্যবহারিক পরীক্ষার ফি বাবদ পত্র প্রতি ৩০ টাকা করে জমা দিতে বলা হয়েছিল। বিজ্ঞান শাখা থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলে প্রতি পরীক্ষার্থীকে সর্বোচ্চ ৪টি ব্যবহারিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হয়। সে হিসেবে ৪টি ব্যবহারিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পরীক্ষার্থীকে সরকার নির্ধারিত ফি ১২০টাকা জমা দিতে হবে। কিন্তু ৫০০ টাকা জমা দিয়েও নিশ্চিন্তে থাকতে পারছেন না শিক্ষার্থীরা। ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের এসএসসি পরীক্ষায় ১৭ লাখ পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। এদের মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৫ লাখ ৪১ হাজার পরীক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে। পরিবর্তিত সূচি অনুযায়ী, আগামীকাল ৪ মার্চ থেকে ১০ মার্চের মধ্যে এসএসসির ব্যবহারিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। অনেক পরীক্ষার্থীর অভিযোগ ব্যবহারিক পরীক্ষার নামে তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের চেষ্টা করা হচ্ছে।
রাজধানীর মিরপুর ২ নাম্বারে হযরত শাহ আলী গার্লস হাইস্কুল শিক্ষকদের বিরুদ্ধে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ব্যবহারিক পরীক্ষার নামে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ কেন্দ্রে প্রায় ৯০০ পরীক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছেন। পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ নির্ধারিত ৪২৫ টাকা ব্যবহারিক পরীক্ষার ফি দেয়ার পরেও প্রতিষ্ঠান প্রধানদের কাছে অতিরিক্ত টাকা দাবি করা হচ্ছে।
পরীক্ষার্থীরা অভিযোগ করে দৈনিক শিক্ষাকে জানান, শাহ আলী গার্লস স্কুলের শিক্ষকরা প্রতি বিষয়ের ব্যবহারিক পরীক্ষা বাবদ ৫শ থেকে এক হাজার টাকা করে পৃথকভাবে আদায়ের চেষ্টা করছেন। আর ধার্যকৃত টাকা না দিলে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের ব্যবহারিক পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেয়ার হুমকিসহ ব্যবহারিক খাতায় স্বাক্ষর না করার অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের বিরুদ্ধে।
জানতে চাইলে হযরত শাহ আলী গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষক নার্গিস আক্তার দৈনিক শিক্ষার কাছে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগটি অস্বীকার করেন।