এসিটিদের নিয়ে মন্ত্রণালয় যা ভাবছে - দৈনিকশিক্ষা

এসিটিদের নিয়ে মন্ত্রণালয় যা ভাবছে

নিজস্ব প্রতিবেদক |

বিলুপ্ত সেকায়েপ প্রকল্পের সাবেক অতিরিক্ত শ্রেণি শিক্ষকরা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে চারদিন ধরে আন্দোলন করছেন। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রচলিত জনবল কাঠামোর বাইরে তাদেরকে প্রকল্প থেকে বেতন দেয়ার শর্তে নিয়োগ দেয়া হয়েছিলো। তারা বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অর্গানোগ্রাম বা স্ট্যাফিং প্যাটার্নভুক্ত নন তাই তাদের নাম দেয়া হয় additional classroom teacher বা অতিরিক্ত শ্রেণি শিক্ষক (এসিটি)। তারা সারাদেশের দুই হাজার প্রতিষ্ঠানে ইংরেজি, গণিত ও বিজ্ঞান পড়াতেন। তিন বছর চাকরি করার পর ২০১৭ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বরে সেকায়েপ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ায় তাদের চাকরিও শেষ।  তাই তারা ক্লাসও নিচ্ছেন না। চাকরি স্থায়ীকরণ অথবা বিনাশর্তে নতুন এসইডিপি প্রকল্পে অন্তর্ভুক্তকরণই তাদের বর্তমান দাবি। এই দাবিতে তারা অবস্থান কর্মসূচি ও প্রতীকী অনশন পালন করেছেন চারদিন যাবত।  দাবি আদায়ে বৃহস্পতিবার (৭ ফেব্রুয়ারি) থেকে তারা অনশন শুরু করবেন।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে প্রতীকী অনশন পালন করছেন এসিটিরা

এর আগে এমপিওভুক্তির দাবিতে গত বছর তারা কয়েকদফা অবস্থান কর্মসূচি, মানবন্ধন ও শিক্ষা ভবন ঘেরাও করেছেন। বিলুপ্ত সেকায়েপের প্রকল্প পরিচালক মাহমুদুল হকসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা তাদেরকে এমপিওভুক্তির আশ্বাস দিয়েছেন বারবার। সেকায়েপেয় এসিটি ম্যানুয়েলে এমপিওভুক্তির ইঙ্গিতও ছিলো। কিন্তু এমপিওভুক্তির প্রচলিত বিধি অনুযায়ী তাদের নিয়োগ না হওয়ায় তাদেরকে এমপিওভুক্ত করেনি মন্ত্রণালয়। হতাশ হয়ে তারা ফের আন্দোলনে নেমেছেন। ২০১৫ খ্রিস্টাব্দে সেকায়েপের শিক্ষক হিসেবে ৫ হাজার দুইশ জন চাকরি শুরু করলেও গত তিন বছরে অনেকেই ভালো চাকরি পেয়ে অন্যত্র চলে গেছেন। বর্তমানে কয়েকশ শিক্ষক আন্দোলনে রয়েছেন।

এসিটিরা কখনো কখনো সাংবাদিকদের কাছে দাবি করছেন ‘প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় তাদেরকে এমপিওভুক্ত/চাকরি স্থায়ী করার নির্দেশ দিয়েছে’। আবার কখনো বলছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশ মানছে না শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা’। কিন্তু এই শিক্ষকদের এমপিওভুক্তকরণ অথবা চাকরি স্থায়ীকরণ সংক্রান্তে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে কোনও নির্দেশ কিংবা আদেশ কিংবা অনুশাসন কিংবা সদয় সম্মতি পাননি বলে দৈনিক শিক্ষাকে নিশ্চিত করেছেন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কোনও নির্দেশনা বা সুপারিশ পাননি তারা।

জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো: সোহরাব হোসাইন মঙ্গলবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, ‘বিলুপ্ত সেকায়েপের সাবেক অতিরিক্ত শ্রেণি শিক্ষকরা খুব ভালো সার্ভিস দিয়েছেন। তারা মেধাবী। শ্রেণিকক্ষে তাদের দক্ষতার জন্য পাবলিক পরীক্ষার ফলাফলেও ভালো প্রভাব পড়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সবাই তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল। কিন্তু বিধান অনুযায়ী ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দের পরে নিয়োগ পাওয়া প্রকল্পের জনবল রাজস্বখাতে অন্তর্ভূক্তির সুযোগ নেই। আজ শিক্ষামন্ত্রী মহোদয়কে সার্বিক বিষয় অবহিত করা হয়েছে।’

 ‘এমপিওভুক্তির প্রচলিত বিধান অনুযায়ী এসিটিদের নিয়োগ হয়নি, তাই এমপিওভুক্ত করা যাচ্ছে না। এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জনবল কাঠামো বা স্ট্যাফিং প্যাটার্নের প্রচলিত বিধান ভেঙ্গে তাদেরকে এমপিওভুক্ত করা হলে অন্য জটিলতা সৃষ্টি হবে ভবিষ্যতে,’ তিনি বলেন।

আন্দোলনরত শিক্ষকরা কতিপয় সাংবাদিকের কাছে দাবি করছেন তাদের চাকরি এমপিওভুক্ত কিংবা স্থায়ীকরণে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করেনি মন্ত্রণালয়, দৈনিক শিক্ষার এমন প্রশ্নের জবাবে সিনিয়র সচিব বলেন, ‘এসিটিদের বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদেরকে কোনও অনুশাসন, সদয় সম্মতি কিংবা আদেশ-নির্দেশ বা সুপারিশ দেননি। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকেও কোনো সুপারিশ বা নির্দেশ আসেনি।’

দৈনিক শিক্ষার অপর এক প্রশ্নের জবাবে সিনিয়র সচিব বলেন, ‘শিক্ষামন্ত্রী মহোদয়কে সামগ্রিক বিষয় অবহিত করা হয়েছে। এসিটিদের যোগ্যতা, অভিজ্ঞতার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের সবাই পজেটিভ।’

সিনিয়র সচিব সোহরাব হোসাইন আরও বলেন, ‘এসিটিদের বিষয়ে অনেক কথা হয়েছে। বিকল্প চিন্তা করা হচ্ছে। সরকার থেকে প্রতিষ্ঠানে থোক বরাদ্দ দেয়ার একটি চিন্তা প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। থোক থেকে প্রতিমাসে এসিটিদের বেতন-ভাতা দেয়া হবে ।’  

এদিকে ২০১৮ খ্রিস্টাব্দের ১৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত সেকায়েপ ও সেসিপের আওতাভুক্ত শিক্ষকদের চাকরি ও বেতন-ভাতা বিষয়ে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার কার্যবিবরণীর ভুল ব্যাখ্যা করছেন কেউ কেউ। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জাবেদ আহমেদ স্বাক্ষরিত ওই কার্যবিবরণীর বরাতে প্রচার করা হচ্ছে ‘এসিটিদের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশ উপেক্ষা করেছেন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।’ ফেসবুক, ইউটিউবসহ বিভিন্ন মাধ্যমে এ তথ্য প্রচার করা হচ্ছে দুইদিন ধরে।  

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন এসিটি শিক্ষক বলেন, বাস্তবে, ওই কার্যবিবরণীতে উল্লেখ করা সুপারিশ একটি গোপনীয় প্রতিবেদনের। সচেতন সাংবাদিকমাত্রই গোপনীয় প্রতিবেদনের মানে জানা উচিত। যদি কেউ বাহবা নেয়ার জন্য বা ভুল ব্যাখ্যা করার জন্য নিজ নিজ মাধ্যমে ভুল তথ্য প্রচার করেন বা মন্ত্রণালয়ের সচিবকে অযথা দায়ী করেন, তার দায় শিক্ষকদের না। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অগ্রায়ন করা একটি ‘গোপনীয় প্রতিবেদনের সুপারিশ’ আর প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশ বা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সুপারিশ এক নয়।’ নীচে দেখুন সেই কার্যবিবরণীর অংশবিশেষ: 

 

শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা - dainik shiksha মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0032219886779785