কওমি মাদরাসার দাওরায়ে হাদিস (তাকমিল) এবং মেশকাত জামাতের (ফজিলত) প্রশ্নফাঁস করে এক শ্রেণির কুচক্রীমহল মাদরাসাগুলোর বদনাম করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে বলে দাবি করেছেন হেফাজত ইসলামের আমির ও আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের চেয়ারম্যান শাহ আহমদ শফী।
কওমি মাদরাসাগুলোর গ্রহণযোগ্যতা নষ্ট করতে একশ্রেণির কুচক্রীমহল উঠেপড়ে লেগেছে অভিযোগ করে শফী বলেন, দাওরায়ে হাদিসের সনদের মান মাস্টার্সের সমমান সরকারিভাবে প্রদান করাকে কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না কুচক্রীরা। তাদের গাত্রদাহ শুরু হয়ে গেছে। তাই ষড়যন্ত্রমূলকভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁসের মতো জঘন্যতম ঘৃণিত কাজ করতে তারা একটুও দ্বিধাবোধ করেনি।
লাখ লাখ ছাত্রের জীবন বিনষ্ট করতে তারা একটুও কুণ্ঠিত হয়নি দাবি করে তিনি বলেন, যারা এ (প্রশ্নফাঁস) ঘৃণিত কাজের সঙ্গে জড়িত তাদের হাত যত বড়ই হোক বিচারের কাঠগড়ায় তাদেরকে দাঁড়াতে হবে। এ ব্যাপারে ৫ সদস্য বিশিষ্ট দুটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অচিরেই তারা জাতির সামনে তাদের রিপোর্ট পেশ করবেন এবং প্রকৃত দোষী মহলকে আইনের আওতায় আনা হবে।
প্রশ্নফাঁস ইস্যুতে কওমি ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের উদ্দেশ করে শাহ্ আহমদ শফী বলেছেন, হাইয়াতুল উলইয়ার অধীনে দুটি পরীক্ষা এবং বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের অধীনে ৪১টি কেন্দ্রীয় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু কোনো পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার মতো কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা আর ঘটেনি।
তিনি আরও বলেন, বাতিল যেভাবে আত্মপ্রকাশ করবে, হক তার চেয়ে উন্নত পদ্ধতিতে দাঁতভাঙা জবাব দিয়ে বাতিলকে ধূলিসাৎ করে দেবে। বাস্তবমুখী আদর্শ মানব গড়ার লক্ষ্যে যোগ্য ব্যক্তিত্ব গড়ে তুলবে।
এ প্রতিষ্ঠানগুলোর মূল উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য ছিল উম্মতের মাঝে একতা গড়ে তোলা, সর্বপ্রকার বাতিলের মোকাবেলা করা, পূর্বসূরিদের দেখানো পথে চলা, সুন্নাতে নববীর প্রচারের মাধ্যমে আমলি জিন্দেগি গড়ে তোলে মুসলিম উম্মাহকে সঠিক পথ প্রদর্শন করা।
প্রসঙ্গত, ৮ এপ্রিল থেকে সারা দেশে কওমি মাদরাসাগুলোর বোর্ড আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের অধীনে ৬টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে মোট ২৬ হাজার ৭২১ জন শিক্ষার্থী দাওরায়ে হাদিস (তাকমিল) পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। এছাড়া বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের (বেফাক) ৪২তম কেন্দ্রীয় পরীক্ষা সারা দেশে ২৯টি জোনের মাধ্যমে এক হাজার ৪৮২টি কেন্দ্রে এক লাখ ৫২ হাজার ৩৯৭ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে।
শনিবার (১২ এপ্রিল) ঢাকার মতিঝিলে আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের কার্যালয়ে কো-চেয়ারম্যান আল্লামা আশরাফ আলীর সভাপতিত্বে একটি জরুরি বৈঠক করে নেতারা প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে দাওরায়ে হাদিস (তাকমিল) এবং মেশকাত জামাত (ফজিলত) সব পরীক্ষা স্থগিত ও অনুষ্ঠিত সব পরীক্ষা বাতিল করে নতুন পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করেন।