কনডেম সেল ও কারাগারের অন্যান্য সেলের পার্থক্য কী? - দৈনিকশিক্ষা

কনডেম সেল ও কারাগারের অন্যান্য সেলের পার্থক্য কী?

দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক |

দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক: ফাঁসির দণ্ডাদেশ পাওয়া ব্যক্তিদের রাখা হয় কারাগারের বিশেষ সেলে, যা কনডেম সেল নামে পরিচিত। অন্যান্য বন্দিদের তুলনায় কনডেম সেলের বন্দিদের জন্য ভিন্ন আচরণবিধি রয়েছে এবং অন্যান্য বন্দিদের থাকার জায়গার সাথেও কনডেম সেলের বেশ পার্থক্য রয়েছে।  কয়েক ফুট দৈর্ঘ-প্রস্থের এই সেলকে অনেকেই বলেন, ‘মৃত্যু সেল।’  আপিল আবেদন নিষ্পত্তির মাধ্যমে সাজা চূড়ান্ত হওয়ার আগেই সর্বোচ্চ সাজার আসামিকে এই সেলে রাখা হয়।

কোনো কারাগারে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামিদের অন্যান্য অপরাধীদের চেয়ে আলাদা ধরণের কক্ষে রাখা হলেও বাংলাদেশের জেল কোড বা কারাবিধি মোতাবেক সেরকম কোনো আইন নেই বলে জানান সাবেক কারা উপ মহাপরিদর্শক শামসুল হায়দার সিদ্দিকী।

কারাবিধি অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ড পাওয়ার পর একজন বন্দীকে কারাগারে সার্বক্ষণিক পাহারায় রাখা, দর্শনার্থীদের সাথে দেখা করার বিষয়ে সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হলেও আলাদা কক্ষে রাখার বিষয়টি আইনে নির্দিষ্ট করে উল্লেখিত নেই। তবে কারা কর্তৃপক্ষ সাধারণ অপরাধীদের চেয়ে কনডেমড সেলের আসামিদের একটু ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখেন বলে মন্তব্য করেন শামসুল হায়দার সিদ্দিকী।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জেল কোড বা কারাবিধিতে ফাঁসির আসামিদের কনডেমড সেলে রাখার মত কোনো বিষয় উল্লেখ না থাকলেও তাদের আলাদা ধরণের কক্ষে রাখা হয়ে থাকে। এটিকে এক ধরণের রেওয়াজ বলা যেতে পারে।’ একটি কনডেমড সেলে সাধারণত একজন বা তিনজন বন্দী রাখা হয়ে থাকে।

শামসুল হায়দার বলেন, ‘সাধারণত ধারণা করা হয় যে দুইজন বন্দী থাকলে গোপনে পালানোর পরিকল্পনা করতে পারে, তবে তিনজন থাকলে পরিকল্পনা আর গোপন থাকে না। ওই ধারণা থেকেই দুইজন বন্দী একটি কনডেমড সেলে রাখা হয় না।’

কারাবিধি অনুযায়ী, একজন বন্দীর থাকার জন্য ন্যুনতম ৩৬ বর্গফুট (৬ফিট বাই ৬ ফিট) জায়গা বরাদ্দ থাকতে হবে। তবে বাংলাদেশের জেলগুলোতে কনডেমড সেলের ক্ষেত্রে এই আয়তন কিছুটা বেশি হয়ে থাকে বলে জানান মি. সিদ্দিকী।

একজন বন্দী থাকার কনডেমড সেল সাধারণত ১০ ফুট বাই ৬ ফুট আয়তনের হয়ে থাকলেও বাংলাদেশের অনেক জেলেই সেলের মাপ কিছুটা বড় হয়ে থাকে বলে জানান মি. সিদ্দিকী। আর তিনজন বন্দী যেসব সেলে রাখা হয় সেগুলোর আয়তন আরো বড় হয়ে থাকে।

কনডেমড সেলের ভেতরে আলো-বাতাস চলাচলের জন্য সাধারণত অন্যান্য সেলের তুলনায় অনেক ছোট আকারের জানালা থাকে। আর এসব সেলে থাকা বন্দীদের দিনে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সেলের বাইরে চলাচলের অনুমতি দেয়া হয়।

শামসুল হায়দার সিদ্দিকী বলেন, ‘একসময় কনডেমড সেলের বন্দীদের নিজেদের সেলের বাইরে যাওয়ার বাধ্যবাধকতা ছিল না। সেল থেকে বছরের পর বছর বের হননি, এমন উদাহরণও আছে। কিন্তু একটা ছোট ঘরের ভেতরে দীর্ঘ সময় থাকতে থাকতে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু ঝুঁকি তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে, তাই বর্তমানে সব বন্দিদেরই দিনের একটা নির্দিষ্ট সময় বাইরে চলাফেরা করতে দেওয়া হয়।’

কনডেমড সেলে থাকা বন্দীরা মাসে একদিন দর্শনার্থীদের সাথে দেখা করার সুযোগ পান। তিনি বলেন, ‘আগে একসময় জেলের ভেতরেই কনডেমড সেলে থাকা বন্দিদের সাথে দেখা করতে আসতে পারতো দর্শনার্থীরা। তবে এখন মাসে একদিন জেল গেটে তারা দর্শনার্থীদের সাথে দেখা করার সুযোগ পান।’

একজন বন্দি একবারে সর্বোচ্চ ৫ জন দর্শনার্থীর সাথে দেখা করতে পারেন। কারা কর্তৃপক্ষ সাধারণত কনডেমড সেলের প্রত্যেক বন্দির কাছ থেকে তার নিকটাত্মীয়দের তালিকা নেন, নির্দিষ্ট কয়েকজন ছাড়া কনডেমড সেলের বন্দির সাথে দেখা করতে অনুমতি দেয় না কারা কর্তৃপক্ষ।

শামসুল হায়দার সিদ্দিকী বলেন, ‘সাধারণত মাসে একদিন বন্দিদের সাথে দর্শনার্থীদের দেখা করার অনুমতি দেয়া হলেও বিশেষ বিবেচনায় কখনো কখনো ১৫ দিনের মধ্যেও কনডেমড সেলের আসামির সাথে দর্শনার্থীদের দেখা করতে দেয়া হয়।’
সূত্র: বিবিসি বাংলা।

দেশকে ভিক্ষুকের জাতিতে পরিণত করতে এ সহিংসতা: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha দেশকে ভিক্ষুকের জাতিতে পরিণত করতে এ সহিংসতা: প্রধানমন্ত্রী দ্রুত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে : আরেফিন সিদ্দিক - dainik shiksha দ্রুত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে : আরেফিন সিদ্দিক এইচএসসির উত্তরপত্র জমা নিচ্ছে না বোর্ড - dainik shiksha এইচএসসির উত্তরপত্র জমা নিচ্ছে না বোর্ড কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় এতো ফেল! - dainik shiksha কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় এতো ফেল! বিকল্প পদ্ধতিতে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে: ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ - dainik shiksha বিকল্প পদ্ধতিতে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে: ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের ৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ - dainik shiksha ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের ৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0030570030212402