কমসংখ্যক চাকরিপ্রার্থীর জন্য বেশি কোটা - দৈনিকশিক্ষা

কমসংখ্যক চাকরিপ্রার্থীর জন্য বেশি কোটা

নিজস্ব প্রতিবেদক |

সরকারি চাকরিতে প্রবেশে কোটা সংরক্ষণ পদ্ধতির সংস্কার চেয়ে আন্দোলনে নেমেছে চাকরিপ্রত্যাশী বেকাররা। তারা বলছে, কমসংখ্যক চাকরিপ্রত্যাশীর জন্য বেশি কোটা সংরক্ষণে একদিকে বেকার সমস্যা কমছে না, অন্যদিকে ৫৫ শতাংশ কোটায় নিয়োগ দেওয়ার প্রার্থী না পাওয়ায় আবার আসন খালি থেকে যাচ্ছে।

তাই বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে সারা দেশে একযোগে কর্মসূচি দিয়েছে চাকরিপ্রত্যাশী বেকাররা। আজ রবিবার সকাল ১১টায় রাজধানীর শাহবাগে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে মানববন্ধন করবে তারা। এর সঙ্গে সংগতি রেখে প্রতিটি জেলায় সুবিধাজনক জায়গা কিংবা প্রেস ক্লাবের সামনে এই কর্মসূচি পালনের কথা রয়েছে। এর আগে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি শাহবাগে মানববন্ধন করেছিল চাকরিপ্রত্যাশীদের বেকাররা।

আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বড় জমায়েতের পাশাপাশি সব কলেজে কর্মসূচি পালন করার কথা রয়েছে ওই সব প্রতিষ্ঠান থেকে পাস করার পর বেকার জীবন যাপন করা চাকরিপ্রত্যাশীরা। ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৈঠক করে বড় জমায়েতের পরিকল্পনা করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একত্রিত হয়ে নিজেদের প্রস্তুতি ও অবস্থান জানান দিচ্ছে তারা। কর্মসূচিতে অংশ নিতে রাজধানীর বাইরে থেকেও অনেকে ঢাকায় আসছে।

চাকরিপ্রত্যাশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কোটা সংস্কারের বিষয়ে তারা প্রথমে ১০ দফা দাবি জানালেও এখন দাবি পাঁচটি। দাবিগুলো হচ্ছে—কোটাব্যবস্থা সংস্কার করে ৫৫ থেকে ১০ শতাংশে নিয়ে আসা, কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদে মেধায় নিয়োগ দেওয়া, নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার না করা, কোটায় কোনো ধরনের বিশেষ নিয়োগ পরীক্ষা না নেওয়া এবং চাকরির ক্ষেত্রে সবার জন্য অভিন্ন কাটমার্ক ও বয়সসীমা নির্ধারণ করা।

২০১৩ সালে বিদ্যমান কোটাব্যবস্থা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন জেগে উঠলেও বেশি দূর এগোতে পারেনি। ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগের বছর হওয়ায় ছাত্রদল-শিবিরের সম্পৃক্ততার অভিযোগে ছাত্রলীগ পিটুনি দিলে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এবার আবার নির্বাচনের বছরে কোটা সংস্কার দাবিতে মাঠে নেমেছে তরুণ বেকাররা, যারা বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় অংশ নিলেও উত্তীর্ণ হতে পারেনি। ভালো প্রস্তুতি থাকার পরও নিয়োগ না পাওয়া বা উত্তীর্ণ হতে না পারার জন্য তারা কোটা সংরক্ষণকে দুষছে।

তবে তরুণ বেকাররা জানিয়েছে, কোটা সংস্কার দাবি যৌক্তিক মনে হওয়ায় এবার ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার অনেক নেতাও এই আন্দোলনে সমর্থন জানিয়েছেন। তাঁরাও একত্রে এই আন্দোলন করবেন বলেও সম্মতি দিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, কোটা সংরক্ষণের কারণে ২৮তম বিসিএসে ৮১৩টি, ২৯তম ৭৯২টি, ৩০তম ৭৮৪টি, ৩১তম ৭৭৩টি আর ৩৫তম বিসিএসে ৩৩৮টি পদ খালিই থেকেছে। তবে ৩৬তম বিসিএসে কোটা পূরণ না হওয়ায় ৩৭তম থেকে তা পূরণ করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, সরকারি চাকরিতে এখন ৫৫ শতাংশ কোটা সংরক্ষণ করা হয়। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার পোষ্য ছেলে-মেয়ে ও নাতি-নাতনির জন্য কোটা ৩০ শতাংশ, নারী কোটা ১০ শতাংশ, সব জেলার জন্য ১০ শতাংশ আর ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য ৫ শতাংশ কোটা রাখা হয়েছে। আর এই ৫৫ শতাংশের মধ্যে ১ শতাংশ প্রতিবন্ধী কোটা সংরক্ষণ করা হয়েছে।

চাকরিপ্রত্যাশীদের দেওয়া তথ্য মতে, দেশের জনসংখ্যার অনুপাতে ২.৬৩ শতাংশ জনগোষ্ঠীর জন্য কোটা সংরক্ষণ করা হয় ৩৬ শতাংশ। এর মধ্যে ১.১০ শতাংশ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, ১.৪০ শতাংশ প্রতিবন্ধীর জন্য ১.৪০ শতাংশ আর ০.১৩ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা পোষ্যদের জন্য ৩০ শতাংশ কোটা। ৫০ শতাংশ নারীর জন্য কোটা ১০ শতাংশ আর সব জেলার অংশগ্রহণমূলক নিয়োগের জন্য ১০ শতাংশ কোটা। তবে সংরক্ষিত কোটা ৫৫ শতাংশের মধ্য থেকেই অপশনাল ১ শতাংশ হচ্ছে প্রতিবন্ধী কোটা। বাকি ৪৪ শতাংশ কোটা হচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করা শিক্ষার্থী দ্বীন মোহাম্মদ  বলেন, ‘কোটা পদ্ধতি সংস্কার লাখো বেকারের গণদাবি। দেশের কম সংখ্যক জনগোষ্ঠীর জন্য বড় কোটা সংরক্ষিত রাখা হয়েছে। আর এর জন্যই অনেকে ভালো প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও চাকরি পাচ্ছে না। এটা আমাদের সবার দাবি, শান্তিপূর্ণভাবে অহিংস আন্দোলন চালিয়ে যাব।’

ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আবিদ আল হাসান বলেন, ‘কোটা সংস্কারের বিষয়ে আমাদের কোনো নির্দেশনা নেই। সরকারের পক্ষ থেকেও আমাদের কোনো নির্দেশনা আসেনি।’

দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার চাকরির বয়স নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর চিঠির পর সমাবেশের ডাক দিলো ৩৫ প্রত্যাশীরা - dainik shiksha চাকরির বয়স নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর চিঠির পর সমাবেশের ডাক দিলো ৩৫ প্রত্যাশীরা স্কুলে গ্রীষ্মের ছুটি কি এপ্রিলে এগিয়ে আনা দরকার? - dainik shiksha স্কুলে গ্রীষ্মের ছুটি কি এপ্রিলে এগিয়ে আনা দরকার? কলেজের শিক্ষকদের ডিজিটাল বদলির আবেদন শুরু রোববার - dainik shiksha কলেজের শিক্ষকদের ডিজিটাল বদলির আবেদন শুরু রোববার বুটেক্সের প্রথম সমাবর্তন ৭ সেপ্টেম্বর - dainik shiksha বুটেক্সের প্রথম সমাবর্তন ৭ সেপ্টেম্বর শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0035531520843506