গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) প্রায় ১১ হাজার শিক্ষার্থী লেখাপড়া করেন। জাতীয় মহাদুর্যোগে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যায় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়টিও। শিক্ষার্থীরা অধিকাংশই শহর ও হল ছেড়ে নাড়ির টানে পরিবারের কাছে চলে গেছেন। কেউ কেউ গোপালগঞ্জে আটকে পড়েছে লকডাউনসহ নানাবিধ ব্যক্তিগত সমস্যায়।
সবাই যখন গভীর সংকটের সময়ে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু হতে বসেছে তখনও গোপালগঞ্জের বাড়ির মালিকরা ভাড়াটে শিক্ষার্থীদের বাড়ি ভাড়া দিতে চাপ প্রয়োগ শুরু করেন। এতে অর্থনৈতিকভাবে মারাত্মক হিমসিম খেতে হয় ওই সকল শিক্ষার্থীদের। বিষয়টা গুরুত্বের সঙ্গে নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনসহ অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। দুস্থ, অসহায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতি বিভাগে গঠিত হয় জরুরি সহায়তা ফান্ড। তবুও যেন সব কিছু সামাল দিতে নুয়ে পড়ছে ওই সকল শিক্ষার্থীরা।
সকল দিক বিবেচনা করে অবশেষে গোপালগঞ্জ জেলার বাড়ির মালিকদের প্রতি এক মানবিক আবেদন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. রাজিউর রহমান।
মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) প্রক্টর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনটি করা হয়। আবেদনে বলা হয়েছে, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পূণ্যভূমি গোপালগঞ্জ জেলার বাড়ির মালিকদের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যে, আপনারা সকলে অবগত আছেন কোভিড ১৯ এর ভয়াবহতার কারণে বৈশ্বিক ব্যবস্থাপনা স্থবির হয়ে পড়েছে।
প্রসঙ্গত, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও বিশ্ববিদ্যালয় বিগত ১৯ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে।
আপনাদের বাড়ি, ঘরে আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বসবাস করে। যাদের একটি বৃহৎ অংশ প্রাইভেট টিউশনি করে মেসের ভাড়া প্রদান করে থাকে। যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ এবং গোপালগঞ্জ জেলায় লকডাউন চলছে। সেহেতু ছাত্র-ছাত্রীরা প্রাইভেট টিউশনি করাতে পারছে না। বিধায় তাদের পক্ষে মেসের ভাড়া পরিশোধ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। অধিকাংশ শিক্ষার্থীর পরিবারের এই ভাড়া প্রদানের কোনো সক্ষমতাও নেই। এহেন পরিস্থিতিতে বিষয়টি মানবিক বিবেচনা করে শিক্ষার্থীদের সার্বিক সহযোগিতার জন্য বিশেষ অনুরোধও তিনি করেন।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্থ শিক্ষার্থীদের অর্থিক দূরাবস্থার প্রেক্ষিতে সাহায্যে করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শাহজাহান বলেন, করোনায় অসহায় শিক্ষার্থীদের বিভাগের চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করার আহ্বান করছি। বিশ্ববিদ্যালয় খুললে করোনায় অসহায় শিক্ষার্থীদের সহায়তার জন্য মিটিং করা হবে। নোটিশ দিয়ে ও বিভাগের চেয়ারম্যানের সাথে পরামর্শ করে দুস্থদের টিউশন, পরীক্ষা ফি মওকুফসহ সীমিত সহায়তা করার চেষ্টাও করবো।