করোনার প্রভাবে দীর্ঘমেয়াদী সঙ্কটের মুখে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা - দৈনিকশিক্ষা

করোনার প্রভাবে দীর্ঘমেয়াদী সঙ্কটের মুখে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

করোনার প্রভাবে ইতোমধ্যেই বন্ধ হয়েছে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ক্ষতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে নিয়ে মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের জন্য টিভিতে শুরু হয়েছে ক্লাস। আগামী সপ্তাহ থেকে টেলিভিশনে শুরু হবে প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের ক্লাস। এদিকে শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো বলছে, কেবল টিভিতে ক্লাস নয়। করোনা পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি না হলে ওলটপালট হয়ে যাবে শিক্ষার পূর্বনিধারিত অনেক কার্যক্রম। পিছিয়ে যাবে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের প্রথম সাময়িক পরীক্ষা। পেছাতে হবে এসএসসির ফল প্রকাশ ও কলেজ ভর্তি। একাদশের বার্ষিক পরীক্ষা এমনকি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি পিছিয়ে নেয়া হতে পারে ঈদ-উল-ফিতর পর্যন্ত। বুধবার (১ এপ্রিল) জনকণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।  প্রতিবেদনটি লিখেছেন বিভাষ বাড়ৈ। 

প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, এখন পর্যন্ত ঘোষণা অনুসারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি আগামী ১১ এপ্রিল পর্যন্ত। এই সময়ের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কিছু জটিলতা নিয়ে হলেও রবিবার থেকে ‘আমার ঘরে আমার স্কুল’ নামে সংসদ বাংলাদেশ টেলিভিশনে শ্রেণী পাঠদান কর্মসূচী শুরু করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর পরিচালিত এ কার্যক্রমে প্রথম থেকেই সুফল না পাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে ‘ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ও সাদা বোর্ড ব্যবহারের কারণে। মফস্বলের বহু এলাকায় চ্যানেলটি দেখতে না পাওয়ায়ও বঞ্চিত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। তবে সমালোচনার কারণে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বন্ধ হলেও তৃতীয় দিন মঙ্গলবার নতুন সমস্যার মুখে পরেছে শিক্ষার্থীরা। সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের যে ক্লাস প্রচার করা হয়েছে সেই একাই ক্লাস প্রচার করা হয় আগের দিন সোমবারও।

এদিকে চলতি সপ্তাহ থেকে মাধ্যমিকের মতো প্রাথমিকেও টিভিতে ক্লাস প্রচারের ঘোষণা এসেছিল। তবে চলতি সপ্তাহে তা প্রচার করা সম্ভব হচ্ছে না। আগামী সপ্তাহ থেকে প্রচার করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক মোঃ ফসিউল্লাহ। তিনি মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বলেছেন, কাজ চলছে। তবে চলতি সপ্তাহে টিভিতে শ্রেণী শিক্ষা কার্যক্রম প্রচার করা সম্ভব হবে না। আগামী সপ্তাহে প্রচার শুরু করব।

জানা গেছে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪০ সিনিয়র শিক্ষকের মাধ্যমে ভিডিও ধারণ করে তা সংসদ টেলিভিশনে প্রতিদিন সম্প্রচার করা হবে। এটুআই প্রকল্পের মাধ্যমে গত ২৫ মার্চ থেকে ভিডিও ধারণ করা হচ্ছে। প্রথম থেকে দ্বিতীয় শ্রেণীর জন্য ভিডিও আকারে বর্ণ শেখা ও রিডিং পড়া শেখানো হবে। তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের সিলেবাস অনুযায়ী শিক্ষকদের মাধ্যমে ভিডিও ধারণ করে ক্লাস নেয়া ও বিভিন্ন প্রশ্নোত্তর শিখতে হোম ওয়ার্ক (বাসার কাজ) দেয়া হবে। পরদিন শিক্ষার্থীদের হোম ওয়ার্ক সঠিক করে দেবে শিক্ষকরা।

এদিকে পরিস্থিতির উন্নতি না হলে পিছিয়ে যাবে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের প্রথম সাময়িক পরীক্ষা। বিষয়টি মাথায় রেখেই কাজ করছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিফতর ও শিক্ষা বোর্ডগুলো। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, বন্ধ থাকায় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম সাময়িক পরীক্ষা স্থগিত হতে যাচ্ছে। আগামী ১৫ এপ্রিল থেকে ২৪ এপ্রিলের মধ্যে প্রাথমিকের প্রথম সাময়িক পরীক্ষা হওয়ার কথা থাকলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে এ পরীক্ষা নেয়া কোনভাবেই সম্ভব হবে না। কর্মকর্তারা অবশ্য জানিয়েছেন, এখনও এ পরীক্ষার বিষয় কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে ক্লাস খোলা না গেলে আরও অনেক কিছুই পেছাতে হবে।

অন্যদিকে বড় ধরনের জটিলতার মুখে পড়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষা কার্যক্রম। শিক্ষা বোর্ডগুলোতে কথা বলে জানা গেছে, ইতোমধ্যেই জটিলতার পরেছে আসন্ন এসএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশের কার্যক্রম। কারণ সারাদেশে খাতা বিতরণসহ এ সংক্রান্ত কাজ আটকে গেছে। ফলে সাভাবিকভাবেই পিছিয়ে যাবে এসএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশের কার্যক্রম। আগামী ৭ থেকে ৯ মের মধ্যে এ পাবলিক পরীক্ষার ফল প্রকাশের পরিকল্পনা থাকলেও তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না। এর ফলে পিছিয়ে যাবে একাদশ শ্রেণীর ভর্তি প্রক্রিয়াও।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সচিব অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলছিলেন, বাস্তবতা হচ্ছে যদি কোনভাবেই পরিস্থিতির উন্নতি না হয় যদি ১৫ এপ্রিলের মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা না যায় তবে বেশ কিছু পূর্ব নির্ধারিত কার্যক্রম পিছিয়ে যাবে। যেমন মাধ্যমিকের প্রথম সাময়িক পরীক্ষা ঘোষিত সময়ে নেয়া যাবে না। এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশের কাজ পেছাতে হবে। এর ফলে পেছাতে হবে একাদশ শ্রেণীর ভর্তি কার্যক্রমও। একাদশের বার্ষিক পরীক্ষা যার মাধ্যমে তা দ্বাদশ শ্রেণীতে যাবে সেটাও পিছিয়ে যাবে।

তিনি আরও বলেন, এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষাতো এমনিতেই স্থগিত করতে হয়েছে। এ পরীক্ষা শুরুর কাজও পিছিয়ে যাবে। কারণ ক্লাস শুরু হলে অন্তত এক সপ্তাহ এ পরীক্ষা নিয়ে আমাদের কাজ করে সময়সূচী তৈরি করতে হবে। তাই ক্লাস শুরুতে দেরি হলে আরও অনেক কিছই পিছিয়ে যাবে। তবে এখনও এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় আসেনি। আগে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হোক।

এছাড়া জানা গেছে, করোনাভাইরাসের কারণে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটিও বাড়ানো হতে পারে। ছুটির মেয়াদ বাড়িয়ে ঈদ-উল-ফিতর পর্যন্ত বাড়ানোর চিন্তাভাবনা করছে শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস - dainik shiksha কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি - dainik shiksha সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি - dainik shiksha বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় - dainik shiksha ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব - dainik shiksha একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0038449764251709