স্নায়ুযুদ্ধ হচ্ছে, ‘যুদ্ধ যুদ্ধ ভাব; কিন্তু যুদ্ধ না।’ স্নায়ু যুদ্ধ হচ্ছে মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ। অন্য নাম ঠাণ্ডা লড়াই।
যখন দুই ভাই পাশাপাশি বাড়িতে বা ফ্ল্যাটে বাস করে, তখন স্নায়ুযুদ্ধ দেখা যায়। হয়ত দৃশ্যমান ভালো সম্পর্ক। কিন্তু স্নায়ু যুদ্ধ চলমান। যেমন দেখা যায়, এক ভাই যে মসজিদের সভাপতি, অন্য ভাই সে মসজিদে কম যায়। যদি কাজের লোকের মাধ্যমে বা অন্য কোনোভাবে জানতে পারে, এক জা আজ পোলাও রান্না করছে; অন্য জা বাসায় বিরিয়ানি আয়োজন করে।
একজন ভাবী সন্তান নিয়ে এসেছেন জেএসসি পরীক্ষার জন্য দোয়া নিতে। অন্য ভাবী মুখে খুব দোয়া করল। সালামি দিলো! কি...ন্তু.! কিন্তু তারা চলে যেতেই নিজের সন্তানকে ধমকানো শুরু করল, যেন তার সন্তানের রেজাল্ট ‘ওর’ চেয়ে ভালো হয়। নইলে, ‘তোর খবর আছে!’
এক ভাবীর ভাই রসমালাই নিয়ে বেড়াতে এলে অন্য ভাবী তার ভাইকে ফোন করে জানিয়ে দেয়, “তুই যেদিন আসবি রসমালাইর সাথে চমচম নিয়ে আসিস। তোর দুলাভাই বলছে, তোর হাতে কেনা চমচম খুব মজা লাগে।” আসলে দুলাভাই কিছুই জানে না। এরকম হাজারটা উদাহরণ দেয়া যাবে।
১৯৯১তে রাশিয়ার সাথে আমেরিকার স্নায়ু যুদ্ধ শেষ বলে আমরা ধরে নিয়েছি। কিন্তু, আসলে কি শেষ হয়েছে?
যুক্তরাষ্ট্র চাঁদে অভিযান করবে করবে, খুব তোড়জোড় চলছে। এর মধ্যেই রাশিয়া ‘স্পুটনিক’ নবযান চাঁদে পাঠিয়ে দিলো। চাঁদের দেশে রাশিয়া হয়ে গেলো প্রথম; যুক্তরাষ্ট্র হয়ে গেলো দ্বিতীয়!
যুক্তরাষ্ট্র দ্রুত করোনার ভ্যাকসিন আবিষ্কার করতে চাচ্ছে। গুঞ্জন উঠছে, ট্রাম্প প্রশাসন নাকি দ্রুত ভ্যাকসিন আবিষ্কারের জন্য বিজ্ঞানীদের চাপও দিচ্ছে। যা একেবারে অনৈতিক। মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলার মতো।
ব্রিটেন যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন জার্নালে একের পর সফলতার খবর ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করে যাচ্ছে। প্রথম ট্রায়াল শেষ....। দ্বিতীয় ট্রায়াল শেষ...। এবার ফাইনাল বা শেষ ট্রায়াল। একটি ভ্যাকসিন আবিষ্কার করতে ৫-১০ বছর লাগলে করোনার ক্ষেত্রে মাত্র ছয় মাসেই এই কাজগুলো হয়ে গেছে।
ও দিকে রাশিয়া চুপচাপ। কোন খবর নাই। হঠাৎ ঘোষণা দিলো তারা জনমানুষের ওপর ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু করেছে। নাম দিয়েছে স্পুটনিক- ৫। ওদিকে ব্রিটেনের আমেরিকার লোকেরা বলাবলি করছে, এই ভ্যাকসিন তৃতীয় ট্রায়াল না দিয়েই মানুষের ওপর প্রয়োগ করছে। যা বিপদজনক হতে পারে! অনেকটা চাঁদের উদ্দেশ্য ছেড়ে যাওয়া রকেট প্রশান্ত মহাসাগরে বিধ্বস্ত হওয়ার মতো ঘটনা হতে পারে। রাশিয়াও কম না। রাশিয়ার বর্তমান ‘রাজ ‘ পুতিন তার মেয়েকে দিয়েই ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু করেছেন। যাতে ভ্যাকসিন নিয়ে দুনিয়ায় মানুষের কোনো ভয় বা সন্দেহ না থাকে। কী বুঝলেন, ভাই!
বাঙালি কী বুঝেছে জানি না। তারা তো খুব কৌতুহলি জাতি। এখন তারা বলছেন, রাশিয়া ভ্যাকসিন আবিষ্কার করবে, করুক। ভ্যাকসিন প্রয়োগ করবে, করুক। কিন্তু প্রশ্ন হলো ভ্যাকসিন আগে ‘নাতিনের’ মেয়েকে না দিয়ে ‘পুতিনের’ মেয়েকে দিলো কেন?
এ কথার উত্তর জানা আছে, ভাই?