বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের উপসর্গ থাকার পরও মানুষজন পরীক্ষা করাতে পারছেন না -এমন অনেক অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। পরীক্ষা করানোর জন্য অনেককে সরকারের উঁচু মহলে গিয়ে তদবির করতে হচ্ছে। শুক্রবার (২৭ মার্চ) বিবিসি বাংলায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন কাদির কল্লোল।
প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে বারবার সদস্য দেশগুলোকে যত বেশি সম্ভব করোনা ভাইরাসের পরীক্ষা করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, বাস্তব পরিস্থিতি বুঝতে পরীক্ষা বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু ১৭ কোটি মানুষের দেশ বাংলাদেশে সরকারি তথ্য অনুযায়ী এপর্যন্ত মাত্র ৯২০ জনের পরীক্ষা হয়েছে যে সংখ্যা বিশেষজ্ঞদের মতে নেহাতই অপ্রতুল।
১২দিন ধরে জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে ঢাকায় কুর্মিটোলা হাসপাতালে এবং আইইডিসিআর এ ধর্ণা দিয়েও করোনার পরীক্ষা করাতে পারেননি একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কর্মী আতিকা রমা। সেই অসহায় পরিস্থিতি নিয়ে তার ভিডিও বক্তব্য এবং লেখা সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেলে পরীক্ষার জন্য তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
তবে তিনি একা নন, আরও অনেকে এমন অভিযোগ করেছেন। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একজন সিনিয়র নার্স আজিজা সুলতানা অনেক কঠিন সময় পার করে এখন কুর্মিটোলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
তিনি বলেন, ১০ দিন ধরে অনেক চেষ্টা তদ্বিরের পর পরীক্ষার জন্য তার রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। অনেক জ্বর, শ্বাসকষ্ট, গলাব্যাথা নিয়ে আমি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতারের জরুরি বিভাগে ভর্তি হয়েছিলাম। তারা আমাকে বলে এখানে চিকিৎসা দেয়া সম্ভব না। তারা আইডি হাসপাতালে রেফার করে। সেই হাসপাতাল বলে যে, আমাদের কাছে করোনা ভাইরাসের চিকিৎসা করানোর কোনো সরঞ্জাম নাই। তারা আমাকে হোম কোয়ারন্টিনে পাঠায়। কিন্তু কোনো উন্নতি হয়নি।
তিনি আরও বলেন, এরপর অনেক চেষ্টা-তদবিরের পর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ঢাকার কুর্মিটোলা হাসপাতালে পাঠান। এখানেও অনেক চেষ্টা তদবির করে ভর্তি হই। এখানেও করোনা ভাইরাসের পরীক্ষা বা কোনো চিকিৎসা হচ্ছিল না। তারপর অনেক চেষ্টা, ফোন এবং অনেক হাই লেভেল থেকে তদবির করার পর বুধবার পরীক্ষার জন্য আমার নমুনা নিয়েছে।