করোনা ভাইরাসে ইতালিতে মৃত্যু ১০ হাজার ছাড়াল - দৈনিকশিক্ষা

করোনা ভাইরাসে ইতালিতে মৃত্যু ১০ হাজার ছাড়াল

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

নতুন করোনাভাইরাসে পর্যুদস্ত ইতালিতে মৃত্যুর ক্ষেত্রে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। আক্রান্তের হিসাবে বিশ্বের দ্বিতীয় এ দেশটিতে গতকাল শনিবার প্রাণহানির সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়েছে। বেশির ভাগ মানুষ বয়স্ক হওয়ায় সেখানকার বিভীষিকা কবে কাটবে, তা এখনই বলা মুশকিল। এদিকে সংক্রমণে শীর্ষ দেশ যুক্তরাষ্ট্রে এক লাখেরও বেশি মানুষের শরীরে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত মৃত্যুর লাগাম খানিকটা টানতে পেরেছে বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির দেশটি। অন্যদিকে দুই মাসের বেশি সময় অবরুদ্ধ থাকার পর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে করোনাভাইরাসের উত্পত্তিস্থল উহানের জীবনযাত্রা। আংশিকভাবে খুলে দেওয়া হয়েছে শহরটির রাস্তাঘাট।

গত শুক্রবার আক্রান্তের হিসাবে সবাইকে ছাড়িয়ে শীর্ষ অবস্থানে যায় যুক্তরাষ্ট্র। একই দিন চীনকে পেছনে ফেলে সংক্রমণে দ্বিতীয় অবস্থানে আসে ইতালি। গতকাল দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯২ হাজার ৪৭২ জনে। এর মধ্যে এক দিনেই শনাক্ত হয়েছে পাঁচ হাজার ৯৭৪ জন। মারা গেছে ৮৮৯ জন। তাতে করে ইউরোপের এ দেশে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ২৩ জন; যা মৃত্যুর হিসাবে বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ।

বিশ্লেষকরা বলছেন, করোনাভাইরাস ইতালির দেশটির স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে নাজুক পরিস্থিতিতে ফেলেছে। উত্তরাঞ্চল পেরিয়ে ভাইরাসের সংক্রমণ এখন ইতালির দক্ষিণেও বিস্তার লাভ করছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। সে রকমটা হলে মৃতের সংখ্যা আরো বাড়বে।

ইতালির উত্তরাঞ্চলের তুলনায় দক্ষিণের স্বাস্থ্যব্যবস্থা তুলনামূলক দুর্বল। জনসংখ্যায় ষাটোর্ধ্বদের সংখ্যা বেশি থাকায় দেশটিতে মৃত্যুহার অন্যদের তুলনায় বেশি। মাস্ক, পারসোনাল প্রটেক্টিভ ইকুইপমেন্টের (পিপিই) মতো সুরক্ষা উপকরণ এবং চিকিৎসা সরঞ্জামের ঘাটতিও দেশটিকে বিপাকে ফেলেছে।

গত শুক্রবার এক দিনেই যুক্তরাষ্ট্রে ১৮ হাজারের বেশি মানুষের শরীরে কভিড-১৯ ধরা পড়ে। এতে আক্রান্তে শীর্ষ অবস্থানে ওঠে দেশটি। গতকাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ ১২ হাজার ছাড়িয়েছে। মারা গেছে অন্তত এক হাজার ৯০৩ জন।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে টেনে তুলতে মার্কিন কংগ্রেসে পাস হওয়া ২ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন ডলারের প্রণোদনা বিলে স্বাক্ষর করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে বিলটি আইনে পরিণত হলো। এ প্রণোদনা করোনাভাইরাসের আতঙ্কের মধ্যেও মার্কিন শ্রমিকদের স্বস্তি দেবে বলে মন্তব্য করেছেন ট্রাম্প।

করোনার উৎসস্থল চীনে এখন পর্যন্ত ৮১ হাজার ৩৯৪ জনের শরীরে ভাইরাসটির উপস্থিতি মিলেছে। সেই হিসাবে দেশটি সংক্রমণে বর্তমানে তৃতীয় অবস্থানে আছে। যদিও চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন বলে আসছে, সম্প্রতি স্থানীয়ভাবে কেউ করোনা আক্রান্ত হয়নি। শুক্রবার যে ৫৪ জন শনাক্ত হয়েছে, তারা সবাই বিদেশফেরত। দেশটিতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ২৯৫ জনে।

বিবিসি জানিয়েছে, গতকাল চীনের উহানের রেলস্টেশনে যাত্রীদের উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। আপাতত বাইরে থেকে হুবেই প্রদেশে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হলেও বের হওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি।

বিশ্বের অন্যান্য দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ায় চীনে বিদেশিদের প্রবেশ সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছে। এমনকি ভিসা ইস্যু বা আবাসিক অনুমতি থাকলেও। একই সঙ্গে সীমিত করা হয়েছে বিমান পরিষেবা। সপ্তাহে একটি বিমান ফ্লাইট এবং তাতে ৭৫ শতাংশ যাত্রী বহনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

আক্রান্তের বিচারে চীনের পরই আছে স্পেন, সেখানে সংক্রমিত হয়েছে ৭২ হাজার ২৪৮ জন। সেখানে কভিড-১৯-এ মৃত্যুর সংখ্যা পৌঁছেছে অন্তত পাঁচ হাজার ৮১২ জনে। এর মধ্যে ৬৭৪ জনের প্রাণহানি হয় গতকাল।

সংক্রমণে স্পেনের পরের অবস্থান জার্মানি ও ইরানের। দেশ দুটিতে আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ৫৩ হাজার ৩৪০ ও ৩৫ হাজার ৪০৮। অবশ্য মৃত্যুহার জার্মানিতে বেশ কম। সেখানে এখন পর্যন্ত মারা গেছে ৪০৩ জন, যেখানে ইরানে মৃত্যু হয়েছে আড়াই হাজারেরও বেশি মানুষের।

ভারতে রেকর্ড শনাক্ত

প্রতিবেশী দেশ ভারতে এক দিনে সর্বোচ্চ কভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে শুক্রবার। সিএনএন জানায়, ওই দিন দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ১৪৯ জনের শরীরে করোনার উপস্থিতি পেয়েছে। এতে করে দেশটিতে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৭৩ জনে। যার মধ্যে ১৯ জন মারা গেছে, সুস্থ হয়েছে ৭৮ জন। ফলে দেশটিতে বর্তমানে ৭৭৫ জন কভিড-১৯ রোগী আছে।

ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, দেশটিতে সর্বোচ্চ সংক্রমিত হয়েছে পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্রে। সেখানে শনাক্ত হয়েছে ১৮০ জন। এর পরের অবস্থানে আছে দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কেরালা, সেখানে আক্রান্ত ১৭৩ জন।

সর্বোচ্চ প্রাণঝুঁকিতে ২৫ হাজার মানুষ

বৈশ্বিক পরিসংখ্যানভিত্তিক ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের হিসাব অনুযায়ী, গতকাল বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত বিশ্বের ১৯৯টি দেশ ও অঞ্চল কভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ছয় লাখ ৪২ হাজার ২৩৮ জনে। মোট মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ৯০৮ জনের। সুস্থ হয়েছে এক লাখ ৩৯ হাজার ৫৪০ জন। ফলে এ সময় পর্যন্ত কভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা দাঁড়ায় সাড়ে চার লাখে। এদের মধ্যে সোয়া চার লাখ বা ৯৫ শতাংশ রোগীর শারীরিক অবস্থা গুরুতর নয়। বাকি ২৫ হাজার মানুষের শারীরিক অবস্থা সংকটজনক। অর্থাৎ সর্বোচ্চ প্রাণঝুঁকিতে আছে এই ৫ শতাংশ রোগী।

এদিকে বৈশ্বিক মৃত্যুর হার আগের তুলনায় খানিকটা বেড়েছে। গতকাল এ হার ছিল ৪.৬ শতাংশ। সপ্তাহখানেক আগে মৃত্যুহার ছিল ৪.১৫ শতাংশ। শীর্ষ আক্রান্ত দেশগুলোর মৃত্যুহার হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে ১.৬ শতাংশ, ইতালিতে ১০.৫৬ শতাংশ, চীনে ৪.০৪ শতাংশ, স্পেনে ৭.৮৮ শতাংশ, জামার্নিতে .৭৫ শতাংশ ও ইরানে ৭.১১ শতাংশ।

 

ষষ্ঠ-নবম শ্রেণিতে ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সূচি - dainik shiksha ষষ্ঠ-নবম শ্রেণিতে ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সূচি শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ অষ্টম পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষায় সরকারকে সহযোগিতা করবে ইউএনএফপিএ - dainik shiksha অষ্টম পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষায় সরকারকে সহযোগিতা করবে ইউএনএফপিএ ইসরায়েলকে বোমা পাঠানো বন্ধ রাখছে যুক্তরাষ্ট্র - dainik shiksha ইসরায়েলকে বোমা পাঠানো বন্ধ রাখছে যুক্তরাষ্ট্র ভুইফোঁড় শিক্ষক সমিতি নেতাদের এমপিও বাতিল হতে পারে - dainik shiksha ভুইফোঁড় শিক্ষক সমিতি নেতাদের এমপিও বাতিল হতে পারে শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের জাপান টিকিট ৩০ লাখ! - dainik shiksha ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের জাপান টিকিট ৩০ লাখ! জাল সনদধারী শিক্ষকের এমপিও বাতিল - dainik shiksha জাল সনদধারী শিক্ষকের এমপিও বাতিল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0032780170440674