করোনা : ৩৫০০ ছাড়িয়েছে নিউ ইয়র্কের মৃতের সংখ্যা - দৈনিকশিক্ষা

করোনা : ৩৫০০ ছাড়িয়েছে নিউ ইয়র্কের মৃতের সংখ্যা

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে আরও ৬৩০ জনের করোনা ভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে। যা একদিনে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মৃত্যুর রেকর্ড। এতে মৃতের মোট সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৫৬৫ জনে। রোববার (৫ এপ্রিল) বিবিসি বাংলায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে নিউ ইয়র্ক সিটিতে। এই রাজ্যে এখন মোট আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ ১৩ হাজারের বেশি, যা পুরো ইতালিতে আক্রান্তের প্রায় সমান হিসাবে।

নিউ ইয়র্কের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমো বলেছেন যে, এই সংক্রমণ চার থেকে ১৪ দিনের মধ্যে শীর্ষ পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে। তিনি বলেন, ‘আমার মনের একটা অংশ শীর্ষে যেতে চাইছে এবং বলছে চলুন মোকাবিলা করি। আবার মনের আরেক অংশ বলছে যে, আমরা যে শীর্ষে নেই এটাই ভালো। কারণ আমরা এখনও প্রস্তুত নই। আমার রাজ্য আরও বেশি ভেন্টিলেটরের সন্ধান কাজ করে যাচ্ছে।’

শনিবার এক হাজার ভেন্টিলেটর পাঠানোর জন্য তিনি চীনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, ওরেগন রাজ্য থেকে আরও ১৪০টি ভেন্টিলেটর সরবরাহের কথা রয়েছে।

এদিকে প্রতিদিনের করোনা ভাইরাস ব্রিফিংয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মি. কুওমোকে আশ্বাস দিয়েছেন যে নিউ ইয়র্কে প্রয়োজনীয় জিনিষপত্র সরবরাহ করা হবে।

তবে মি. ট্রাম্প বলেছেন যে, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে কেন্দ্রীয় সহায়তা দেয়া হবে।

‘দুর্ভাগ্যক্রমে অনেক মানুষের মৃত্যু হবে।’ বলেন, মি. ট্রাম্প।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত তিন লাখেরও বেশি মানুষের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে এবং ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন আট হাজারেরও বেশি মানুষ। যুক্তরাষ্ট্রের জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী ষাট হাজারের বেশি মানুষ এই করোনাভাইরাসে মারা গেছেন এবং ১১ লাখেরও বেশি মানুষ সংক্রমিত হয়েছেন।

নিউ ইয়র্কের সর্বশেষ চিত্র কী?

নিউ ইয়র্ক সিটিতে ‌এক লাখ ১৩ হাজার ৭৪ জনের মধ্যে করোনা ভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে। এরমধ্যে নিউ ইয়র্কে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৩ হাজার ৩৬ জন।

মি. কুওমো বলেছেন যে, নিউ ইয়র্ক সিটিতে এখন আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যুর সংখ্যা ধীর গতিতে বাড়ছে, তবে নিকটবর্তী লং আইল্যান্ডে এই সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।

ইতোমধ্যে ম্যানহাটানের ২ হাজার ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল জাভিটস সেন্টার ইন ম্যানহাটানে অসংখ্য রোগী ভিড় করছেন। তাদের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে জনবল এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম দেয়ার কথা বলা হয়েছে।

প্রায় ৮৫ হাজার ০০০ লোক, যাদের প্রায় এক চতুর্থাংশ অন্যান্য রাজ্য থেকে আসা, তারা নিউ ইয়র্কের এই প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় সহায়তার জন্য নিজেদের নাম নিবন্ধন করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রে এটাই এ যাবৎকালের সবচেয়ে খারাপ স্বাস্থ্য পরিস্থিতি।

নিউ ইয়র্ক সিটির মেয়র তার ৮০ লাখ বাসিন্দার কাছে একটি বার্তা পাঠিয়ে আহ্বান জানিয়েছেন যে, তাদের মধ্যে যারা যোগ্য স্বাস্থ্যসেবাকর্মী তারা যেন স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করেন।

বিল দে ব্লাসিও সাহায্যের আবেদন জানিয়ে বলেছেন, ‘আপনাদের মধ্যে যারা এখনও এই লড়াইয়ে শামিল হননি, তাদের বলতে চাই যে আপনাকে আমাদের প্রয়োজন, যে কোনও পেশাদার স্বাস্থ্যকর্মী - ডাক্তার, নার্স, রেসপিরেটরি থেরাপিস্ট, আপনি শুধু নাম দিন।’

মি. ডি ব্লাসিও অনুমান করছেন যে, এপ্রিল ও মে মাসে এই মহামারি মোকাবেলায় রাজ্যটিকে আরও ৪৫ হাজার মেডিকেল কর্মীর প্রয়োজন।

এর আগে তিনি সকল বাসিন্দাদের বাইরে যাওয়ার সময় মাস্ক পরার আহ্বান জানিয়েছিলেন - ‘বাইরে বের হওয়ার সময় নাক মুখ ঢেকে রাখুন। এজন্য আপনি স্কার্ফ বা আপনার নিজেকে তৈরি করা কিছু, এমনকি একটি ব্যান্ডানাও ব্যবহার করতে পারেন।’

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ব্রিফিং

শনিবার হোয়াইট হাউসে বক্তব্য রাখার সময় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামনের কয়েক সপ্তাহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কী অপেক্ষা করছে সেটার একটি মূল্যায়ন দিয়েছেন।

মি. ট্রাম্প বলেন, ‘পরের সপ্তাহ, সম্ভবত সবচেয়ে কঠিন সময় হবে।’

‘অনেক মৃত্যুর’ জন্য অপেক্ষা করতে তিনি আমেরিকানদের সতর্ক করেছেন।

কোভিড -১৯ এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি রাজ্যের পাশে দাঁড়াতে মি. ট্রাম্প বলেছেন যে, তার প্রশাসন ‘প্রচুর সামরিক কর্মকর্তা, হাজার হাজার সৈন্য, চিকিৎসা কর্মী, পেশাদারদের’ মোতায়েন করবে।

তিনি বলেন, সামরিক বাহিনীকে ‘শিগগিরই’ তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে অবহিত করা হবে, নিউইয়র্ক সিটিতে ১০০০ সেনা সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নির্দেশ জারি করেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি মেডিক্যাল প্রোডাক্ট অন্য দেশে রফতানি করা যাবে না।

কোরিয়ান যুদ্ধের সময়ে একটি আইনের বলে তিনি এই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। প্রতিরক্ষা উৎপাদন আইনে যুক্তরাষ্ট্রের মেডিকেল পণ্যের উৎপাদন ও সরবরাহ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।

হোয়াইট হাউসে করোনা ভাইরাস টাস্কফোর্সের ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ‘স্থানীয় চাহিদা মেটাতে আমাদের এখনই এসব সামগ্রী দরকার। আমাদের অবশ্যই এগুলো পেতে হবে।’

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, থ্রিএম নামে যুক্তরাষ্ট্রের একটি মাস্ক তৈরির কোম্পানির ওপর ভীষণ নিরাশ হয়েছেন এবং বলেছেন যে প্রতিষ্ঠানটির উচিত ছিল এমন পরিস্থিতিতে অন্যদের কাছে মাস্ক বিক্রি করার পরিবর্তে নিজ দেশের কথা ভাবা।

তবে জার্মানিতে যাচ্ছিল এমন দুই লাখ মাস্ক যুক্তরাষ্ট্র মাঝপথে নিজেদের ব্যবহারের জন্য নিয়ে নিয়েছে, এমন ‘আধুনিক দস্যুতার’ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন তিনি।

সামাজিক-দূরত্বের বিষয়ে কড়াকড়ি শিথিল করে আনার প্রশ্নে মি. ট্রাম্প একটি পুরোনো কথাই পুনরাবৃত্তি করেন।

মি. ট্রাম্প নির্দিষ্ট কোন সময় বা তারিখ উল্লেখ না করেই বলেছেন যে, ‘আমাদের দেশটি খুলে দেয়া দরকার। সমস্যার চাইতে এর নিরাময় খারাপ হতে পারে না।’

শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0038812160491943