নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, গত রোববার (২৬ জানুয়ারি) বিকেলে শিক্ষাবোর্ডের ১৫৭ নিয়মিত কর্মচারীর বেতন তালিকা অনুমোদনের জন্য নিয়ে যান সহকারী সচিব মোস্তফা। এসময় শিক্ষাবোর্ডের সচিব ড. মো. মোয়াজ্জেম হোসেন বেতন শিটের বামপাশে স্বাক্ষর করেন। স্বাক্ষর শেষেই তিনি আবার কেটে দিয়ে ছুঁড়ে ফেলেন। পরে সচিব মোস্তফা চলে আসেন। এ নিয়ে শিক্ষাবোর্ডে কর্মকর্তা কর্মচারীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
শিটে লেখা ছিল, ‘অত্র বোর্ডের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জানুয়ারি (২০২০) মাসের বেতন, পেনশন-পারিবারিক পেনশন, কল্যাণ ভাতা ও চিকিৎসা ভাতা প্রদানের আদেশ দেয়া যেতে পারে। বিধি মোতাবেক বেতন ও উৎসব ভাতা থেকে ১০ শতাংশ উৎস কর-আয়কর কর্তন করা যেতে পারে।’
জানা গেছে, গত বছরের ১৬ অক্টোবর রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডে সচিব হিসেবে যোগদান করেন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত সরকারি কলেজের শিক্ষক মোয়াজ্জেম হোসেন। অভিযোগ আছে, যোগদানের পর থেকেই তিনি কারও কথা শোনেন না। এমনকি শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোহা. মোকবুল হোসেনকেও থোড়াই কেয়ার করেন তিনি। সচিব মোয়াজ্জেম হোসেন নিজের ইচ্ছে মতো অফিসে আসেন, আবার চলেও যান। তিনি বোর্ড চেয়ারম্যানের সঙ্গে তেমন যোগাযোগও করেন না।
কর্মকর্তাদের অভিযোগ রয়েছে বঙ্গবন্ধুর মুরাল ও বঙ্গবন্ধু কর্নার স্থাপনের বিষয়ে সভা ডাকা হলেও তিনি আসেনি। এছাড়া অফিসের কাজের বিভিন্ন ফাইলগুলো তিনি আটকে রাখেন এমন অভিযোগও রয়েছে। এর ফলে বিভিন্ন কাজে দেরি হয়ে যায়।
জানতে চাইলে রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোহা. মোকবুল হোসেন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘সচিবের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়টি শুনেছি। লিখিত অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এ বিষয়ে সচিব ড. মো. মোয়াজ্জেম হোসেন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘বোর্ড সভার আগেই ৬ জন কর্মচারীকে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। সপ্তম থেকে সরাসরি পঞ্চম গ্রেডের এ ৬ কর্মচারীর বেতনের শিট (বেতন তালিকা) দেয়া হয়। তাই, স্বাক্ষর করিনি। এছাড়া পঞ্চম গ্রেডের এই সংশ্লিট জনবল কাঠামোতে কোনো পদ নেই। তাই সেটা সংশোধন করে আনতে বলা হয়েছে। পূর্বের মাসের মতো বেতন তালিকা থাকলে স্বাক্ষর করে দেয়া হবে।'
তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে আরও জানান, ৬ জন কর্মচারীর পদ-পদবী ও প্রমোশন নিয়ে জটিলতা থাকায় এবং প্রয়োজনীয় কাগজ না থাকায় আগের পদে ও পদবী অনুসারে বেতন দেয়ার সুপারিশের নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। নতুন পদোন্নতিপ্রাপ্তরা কিভাবে ৭ম গ্রেড থেকে ৬ষ্ঠ গ্রেড বাদ দিয়ে সরাসরি ৫ম গ্রেডে বেতন কাঠামোতে যায় এ নিয়েও প্রশ্ন আছে। বোর্ডে সভার আগেই অফিস আদেশে ৬ জনকে পদোন্নতি দেয়ায় বিস্মিত হয়েছি।