পটুয়াখালীর গলাচিপায় করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় অসহায়, দুস্থ ও দরিদ্র মানুষের সাহায্যার্থে উপজেলা ত্রাণ তহবিলে নিজের ব্যাংকে জমানো ৩ হাজার ১৪৩ টাকা জমা দিয়েছে স্কুলছাত্রী হাসিবুন নাহার সিনহা। সোমবার (১১ মে) দুপুরে গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ্ মো. রফিকুল ইসলামের কার্যালয়ে ব্যাংকটি তাঁর হাতে তুলে দেয় সে। ব্যাংকটি হস্তান্তরের সময় সিনহার বাবা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
হাসিবুন নাহার সিনহা বাংলাদেশ তুরস্ক ফ্রেন্ডশিপ স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী। সিনহা গলাচিপা মহিলা ডিগ্রি কলেজের সমাজবিজ্ঞানের প্রভাষক ও সাংবাদিক মো. হারুন অর রশিদ ও রতনদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মোসা. লুৎফুন নাহারের মেয়ে।
সিনহা জানায়, ‘লকডাউনের সময় বাসায় পড়াশোনা করার ফাঁকে ফাঁকে টেলিভিশন দেখে সময় কাটাই। টিভিতে খবরের মাধ্যমে এবং আমার আশেপাশে গরীব মানুষদের অসহায়ভাবে দিনযাপন করতে দেখি। তারা অনেকে অর্ধাহারেও দিন কাটাচ্ছেন। তাই পায়ের নূপুর তৈরির জন্য প্রথম শ্রেণি থেকে জমানো ৩ হাজার ১৪৫ টাকা অসহায় মানুষদের জন্য দান করলাম। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় অসহায় ও দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়াতে পেরে আমি খুব খুশি।’
সে টাকা কেন জমা দিয়েছে এই প্রশ্নের জবাবে বলল, ‘এভাবে টিফিনের টাকা জমিয়ে পরে আমি নূপুর বানিয়ে নিতে পারব। কিন্তু এখন অসহায় ও দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত।’
বাংলাদেশ তুরস্ক ফ্রেন্ডশিপ স্কুলের উপাধ্যক্ষ মো. সাইফুল ইসলাম জানান, ‘আমাদের বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণির একজন ছাত্রীর এমন মহতি উদ্যোগে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সত্যিই গর্বিত ও আনন্দিত।’
এ ব্যাপারে গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ্ মো. রফিকুল ইসলাম এই কোমলমতি শিশুর মহতি উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, ‘অসহায়, দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী সিনহা অনন্য নজির স্থাপন করেছে। এই শিশুটির কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। এটি দেখে সমাজের সকল বিত্তবানদের এগিয়ে আসা উচিত।’