কলেজ ক্যাম্পাসে মাদক বিক্রিতে বাঁধা দেওয়ায় এক ছাত্রলীগ নেতাকে মারধর ও আরেক ছাত্রলীগ নেতাকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি বরিশালের উজিরপুর উপজেলার সরকারি শেরে বাংলা ডিগ্রি কলেজের।
শুক্রবার সকালে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি শাকিল মাহমুদ আউয়াল দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এসব অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, পূর্ব মুন্ডপাশা এলাকার আব্দুল হাইয়ের ছেলে চিহ্নিত মাদক বিক্রেতা আরিফ মীর ও তার সহযোগীরা দীর্ঘদিন থেকে কলেজ ক্যাম্পাসে গাঁজা-ইয়াবা বিক্রি ও সেবন করে। কলেজ ক্যাম্পাসে মাদক বিক্রিতে বাধা দেয়ায় সম্প্রতি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জুলমত সরদারকে মারধর ও তাকে (আউয়াল) লাঞ্ছিত করে মাদক ব্যবসায়ী আরিফ ও তার সহযোগীরা। এ ঘটনার জেরে গত ১৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে আরিফের সহযোগী মাদক বিক্রেতা মারজু ও শান্তকে মাদক সেবনরত অবস্থায় শিকারপুর লঞ্চঘাট এলাকায় লাঞ্ছিত করে কলেজ শাখা ছাত্রলীগ কর্মীরা। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওইদিন সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে মাদক ব্যবসায়ী আরিফ মীর, মারজু বিশ্বাস, জাহিদ মীর, শান্ত মৃধা ও মো. হোসেনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ নেতা আউয়ালের বড় ভাইয়ের শিকারপুর বন্দরের বধূয়া ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে হামলা চালিয়ে লুটপাট ও ভাঙচুর করে মাদক ব্যবসায়ীরা।
শিকারপুর বন্দর ব্যবসায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও বধুয়া ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের মালিক করিম খান অভিযোগ করে বলেন, কলেজ ক্যাম্পাসে মাদক বিক্রিতে বাধা দেয় আমার ছোট ভাই ছাত্রলীগ নেতা আউয়াল। এ ঘটনার জেরে এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীরা সংগঠিত হয়ে আমার দোকানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে মালামাল, নগদ টাকা লুট করে নেয়। এমনকি ভাঙচুর করা হয় মোটরসাইকেল ও মোবাইল ফোন। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও রহস্যজনক কারণে এখন পর্যন্ত মামলা রুজু না করা হয়নি। অপরদিকে মাদক ব্যবসায়ীরা থানায় অভিযোগ দিলে তাদের অভিযোগটি আমলে নিয়ে মামলা রুজু করা হয়েছে। সেই মামলায় আমাকে ও আমার ভাই ছাত্রলীগ নেতা আউয়ালকে আসামি করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, আমার দোকানে হামলার ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষিত রয়েছে। তিনি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের দাবি জানান।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে আরিফ মীরের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তার ফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেয়া যায়নি।
উজিরপুর মডেল থানার ওসি মো. কামরুল হাসান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, স্থানীয়ভাবে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দোকানে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। এ ঘটনায় মামলা রুজুর প্রস্তুতি চলছে। ওসি আরও বলেন, ভুক্তভোগীদের অভিযোগে ত্রুটি থাকায় ও তা সংশোধন করে দিতে তাদের দেরি হওয়ায় এখনও কোনো আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। তবে মামলা রুজুর পরেই আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে আরিফ মীরের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে গাঁজা গাছসহ তাকে আটক করেছিলো র্যাব-৮ এর সদস্যরা। ওই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে মামলা দায়ের করা হয়। যে মামলা এখনো চলছে।