কাজ করে কলেজে পড়ছে গৌতম - Dainikshiksha

কাজ করে কলেজে পড়ছে গৌতম

মশিউর রহমান, গাইবান্ধা |

রাজমিস্ত্রির সহযোগী শ্রমিক হিসেবে প্রায়ই কাজ করে গৌতম। অভাবের সংসারে দিনমজুর বাবা চৈতন্য চন্দ্র বর্মনকে সাহায্য করে সে। কারণ তার পড়ালেখার খরচ জোগাতে হবে। 

সাদুল্লাপুর ভাতগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজে এইচএসসি মানবিক বিভাগের ১ম বর্ষের ছাত্র গৌতম কুমার বর্মন। স্বপ্ন তার পড়ালেখা শেষ করে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার। কিন্তু অর্থের অভাব তার স্বপ্ন পূরণের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। 

উপজেলার ৮ নং ভাতগ্রাম ইউনিয়নের দিনমজুর বাবা-মা’র সংসারে দুই ভাই বোনের মধ্যে গৌতম বড়। ছোট বোন ভাতগ্রাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী। টাকার অভাবে শেষ পর্যন্ত উচ্চ শিক্ষার দ্বারপ্রান্ত থেকেই তাকে ফিরে আসতে হয় কিনা সেই শঙ্কা জেঁকে বসেছে গৌতমের মনে।

দৈনিক শিক্ষার সাথে আলাপকালে কাঁদো কাঁদো কণ্ঠে সেই শঙ্কার কথা জানাচ্ছিলেন গৌতমের মা বাসন্তি রানী বর্মন । তিনি বলেন, ৮ শতক জমি ছাড়া আর কিছু নেই। কষ্টের সংসারে বহুবার তার পড়াশোনা বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আমি নিজেও অন্যের বাসায় কাজ করি। কিন্ত এসএসসি পাসের পর ছেলের কান্নাকাটির কারণে বাধ্য হয়ে এখনও তার পড়াশোনা চালু রেখেছি। অভাবের সংসারে তার ইচ্ছা পূরণ করতে গিয়ে মাঝে মাঝে রাজমিস্ত্রির সহযোগী হিসেবে কাজ করে গৌতম। সংসার চালানো ও প্রতিমাসে ছেলে মেয়ের পড়ালেখার খরচ যোগাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। 

গৌতম কুমার বর্মন বলের, ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে পৃথিবীতে জন্মেছি। তাই পড়াশুনার পাশাপাশি রাজমিস্ত্রীর লেবার হয়ে, আবার কখনও অন্যের জমিতে কাজ করে অর্থ উপার্জন করে পরিবারকে সহযোগিতা করি। আমার নিজের এবং ছোট বোনের পড়াশুনার খরচসহ সংসার চালানোই কষ্টকর। তাই নিয়মিত কলেজ যাওয়া হয় না।

গৌতমের বাবা চৈতন্য চন্দ্র বর্মন দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে বলেন, তার ছেলে পড়াশুনা শেষ করে প্রতিষ্ঠিত হতে চায়। কিন্তু ছেলেকে পড়ানোর সামর্থ্য তার নেই। এ নিয়ে বড় দুশ্চিন্তায় আছি। ছেলে মেয়ের পোশাক ও লেখাপড়ার খরচ চালাতে যখন টাকা চায় তখন বুক ফেটে কান্না চলে আসে। ছেলে মেয়ে জন্ম দিয়ে তাদের পড়াশুনার খরচ চালাতে পারছি না। এক হতভাগা বাবা আমি।

গৌতম ছোট বেলা থেকেই পড়াশোনায় খুব মনোযোগী। ২০১৮ খ্রিস্টাব্দে ভাতগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজ থেকে  এসএসসিতে মানবিক বিভাগ থেকে পাস করে।

ভাতগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. সোলায়মান আজিজ দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, গৌতম একজন মেধাবী ছাত্র। বলা যায় নিজের চেষ্টায় সে এত দূর এসেছে। গৌতমের মতো অনেক মেধাবী ছাত্রদেরকে কলেজের পক্ষ থেকে যতটা সম্ভব সহযোগিতা করা হয়, যেন তারা লেখাপড়া চালাতে পারে। সবার সহযোগিতা পেলে গৌতম নিশ্চয়ই জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে পারবে।

শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.020416975021362