কারিগরি বোর্ডে চলছে লুটপাট, উপ-সচিবের ‘মাতবরি’ - দৈনিকশিক্ষা

কারিগরি বোর্ডে চলছে লুটপাট, উপ-সচিবের ‘মাতবরি’

নিজস্ব প্রতিবেদক |

chair tech boardচরম নৈরাজ্য আর লুটপাটের মধ্য দিয়ে চলছে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের কার্যক্রম। সৎ ও যোগ্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিষ্ক্রিয় করে অযোগ্য, অদক্ষ, দুর্নীতিগ্রস্ত ও তদবিরবাজদের দিয়ে বোর্ড অফিসে চলছে লুটপাটের মহোৎসব। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী এবং বেসরকারি পলিটেকনিক কলেজের মালিকরাই আছেন নিয়ন্ত্রকের আসনে।

আর বোর্ড চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। তিনি মূলত বেসরকারি পলিটেকনিক কলেজের মালিকদের তদবির বাস্তবায়নে মুখ্য ভূমিকা পালন করে থাকেন বলে অভিযোগ রয়েছে। একটি বেসরকারি পলিটেকনিক কলেজের সঙ্গে সম্পৃক্ততা এবং বোর্ডের অর্থ তছরুপের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এসব বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে অভিযোগপত্র দিয়েছেন বোর্ডের সচিব ড. মো. আবদুল হক তালুকদার। গত ৩১ ডিসেম্বরে পাঠানো ওই চিঠিতে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে অনিয়ম ও দুর্নীতির ২৭টি উদাহরণ তুলে ধরা হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, বোর্ডে অনভিপ্রেত, নিয়মবহির্ভূত, প্রশাসনিক ও আর্থিক বিশৃঙ্খলা, চরম নৈরাজ্য, দুর্নীতি, বিভাজন, দুষ্টের পালন এবং শিষ্টের দমনের মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। এই কর্মকর্তা এখন অবসরে।
চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন, বোর্ড চেয়ারম্যান পদে মোস্তাফিজুর রহমানের যোগদানের আদেশের কপি বোর্ড অফিসে নিয়ে আসেন বাবর আলী ও ইয়াহিয়া নামের দুই ব্যক্তি। পরে তারা প্রচার করেছেন, মোস্তাফিজুর রহমানকে ত্রিশ লাখ টাকায় চেয়ারম্যান করে আনা হয়েছে। সুতরাং তাদের কথার বাইরে বোর্ডে কোনো কাজ হবে না।
তাদের একজন সাইক ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির মালিক ইয়াহিয়া। তিনি প্রভাব খাটিয়ে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই তার ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠানকে ময়মনসিংহে স্থানান্তর করেছেন। তিনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আসন ও টেকনোলজি বৃদ্ধির তদবির বাণিজ্য করেন প্রকাশ্যেই। দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের একজন পরিচালকও আছেন তদবিরবাজের তালিকায়। তিনিও পলিটেকনিক কলেজ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।
অভিযোগে বলা হয়েছে, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পাঁচ বছর আগের ট্রান্সক্রিপ্টের ১০ লাখ টাকা বিল তুলে নিয়েছেন বোর্ড চেয়ারম্যান। তিনি কর্মচারী ইউনিয়নকে দিয়ে বোর্ড সচিবকে রাত ১০টা পর্যন্ত আটকে রেখে শতাধিক চেকের মাধ্যমে ওই টাকা হাতিয়ে নেন। তিনি বাসার চুলা, এসির গ্যাস চার্জ, বেসিন মেরামত, এনার্জি লাইট ও টিউবলাইট ক্রয়, ব্যক্তিগত মোবাইল ও বিয়েবাড়ির গিফট কেনার টাকাও তোলেন বোর্ডের তহবিল থেকে।
বোর্ডের আর্থিক ও প্রশাসনিক বিষয়গুলো দেখার কথা বোর্ড সচিব ড. মো. আবদুল হক তালুকদারের। কিন্তু চেয়ারম্যান সরকারি ক্রয়নীতির তোয়াক্কা না করে অন্যায় সুযোগ-সুবিধা নিতে তাকে পাশ কাটিয়ে ক্যাশিয়ার ও স্টোর অফিসারকে আদেশ-নির্দেশ দিয়ে তা নিয়মিতভাবে হাতিয়ে নিতেন।
এদিকে সরেজমিনে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন কক্ষে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের দাপট। কয়েকটি বেসরকারি পলিটেকনিক কলেজের মালিকরা দিনভর নানা তদবিরে ব্যস্ত রয়েছেন। কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের একজন পরিচালক ও একটি বেসরকারি পলিটেকনিক কলেজের মালিকের তদবির ছাড়া বোর্ড চেয়ারম্যান মোস্তফিজুর রহমান কোনো ফাইলে সই করছেন না।
বোর্ডের একাধিক কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে ইউনিয়ন ও বোর্ড চেয়ারম্যানের স্বেচ্ছাচারিতাই নিয়মে পরিণত হয়েছে। কোন ফাইল উপস্থাপন করা হবে, কোনটি হবে না, আর মিটিংয়ের রেজুলেশনে কী লেখা হবে, তাও নির্ধারণ করেন ইউনিয়নের সাবেক ও বর্তমান নেতারা। চেয়ারম্যানের আনুকূল্য নিয়ে সরকারি অফিস আদেশ ছাড়াই কর্মকর্তারা বিদেশ ভ্রমণ করেন। আর অভ্যন্তরীণ রুটে চেয়ারম্যানের পাশের সিটে বসে বিমান ভ্রমণ করেছেন এমন আবদারে টিকিটের টাকা বোর্ড তহবিল থেকে দাবি করেন কর্মচারী ইউনিয়নের নেতারা।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সাবেক বোর্ড সচিব তার বিরুদ্ধে শিক্ষা সচিবের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন বলে জেনেছেন। বোর্ড অফিসের কোনো অর্থ তিনি আত্মসাৎ করেননি। বেসরকারি পলিটেকনিক কলেজ মালিকদের দাপট প্রসঙ্গে বোর্ড চেয়ারম্যান বলেন, পুরো বিষয়টি তদন্তাধীন আছে।
নাম প্র্রকাশে অনিচ্ছুক বোর্ডে র তিনজন স্থায়ী কর্মচারী দৈনিকশিক্ষাডটককে বলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব সুবোধ চন্দ্র ঢালীর ‘মাতবরি’ রয়েছে বোর্ডে র প্রায় সব কাজে। ‘ঢালী মন্ত্রীর চেয়েও বড় মন্ত্রী’।
‘২০০৭ খ্রিস্টাব্দ থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চাকরি করা তথ্য ক্যাডারের এই কর্ম কর্ত ার বিরুদ্ধে কয়েকজন রয়েছে অসৎ সাংবাদিক ও ক্যামব্রিয়ান, কুইন্স, বিএসবিসহ কয়েকটি ভুইফোঁড় প্রতিষ্ঠানকে অবৈধ সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ।’
কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস - dainik shiksha কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি - dainik shiksha সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি - dainik shiksha বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় - dainik shiksha ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব - dainik shiksha একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.003262996673584