কিন্ডারগার্টেনেও সাম্প্রদায়িক পাঠ্যক্রম শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নজর নেই - Dainikshiksha

কিন্ডারগার্টেনেও সাম্প্রদায়িক পাঠ্যক্রম শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নজর নেই

দৈনিক শিক্ষা ডেস্ক |

কিন্ডারগার্টেন নামের শিক্ষার ভিন্ন ধারার প্রতিষ্ঠানে শিশুদের সাম্প্রদায়িক বিষয়বস্তু পড়ানো হচ্ছে বলে জাতীয় নাগরিক কমিশন একটি তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করেছে। তদন্ত প্রতিবেদনে কিছু উদাহরণও তুলে ধরা হয়েছে। যেমন- ‘অ’তে অজু করে পাক হও, ‘আ’তে আজান শুনে জামাতে যাও, ‘এ’তে এক হও মুসলমান ইত্যাদি। এ নিয়ে গত মঙ্গলবার গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

বেশকিছু প্রকাশনা সংস্থা এ কাজটি করেছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। কিন্ডারগার্টেনের পাঠ্যবইয়ে যা পড়ানো হচ্ছে, সেটা শিশুমনে বিরূপ প্রভাব তৈরি করছে। বছরের প্রথম দিকে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের বই শিক্ষার্থীদের হাতে পেঁৗছানোর পর পাঠ্যপুস্তকে সাম্প্রদায়িকতা ছড়ানোর অভিযোগ ওঠে নানা মহল থেকে। একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি সরকারের কাছে এ বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করে।

সাম্প্রদায়িকীকরণের এ ধারা শুধু জাতীয় শিক্ষা পাঠ্যক্রমেই নয়, এর বাইরে কিন্ডারগার্টেনসহ বিভিন্ন ধরনের স্কুলে সাম্প্রদায়িক ও বর্ণবাদী শিক্ষা গুরুত্ব পাচ্ছে। কোমলমতি শিশুদের বর্ণশিক্ষা ও প্রাথমিক শিক্ষার বই ধর্মশিক্ষার বইয়ে পরিণত হয়েছে। শিশুদের যেভাবে শিক্ষা দেয়া হচ্ছে, তাদের মন-মানসিকতাও সেভাবে তৈরি হচ্ছে। সে ব্যাপারে কোথাও কোন আলোচনা হচ্ছে না। সরকারও এ ব্যাপারে যে সচেতন সে কথা বলা যাবে না।

অভিযোগ আছে, বর্তমান সময়ে বাজারের বেশিরভাগ বর্ণ পরিচয়ের বই বের হচ্ছে ধর্মীয় শব্দ ও বাক্য ব্যবহার করে। সীতানাথ বসাকের ‘অ’তে অলি নাচে ফুলে ফুলে এর পরিবর্তে লেখা হচ্ছে ‘অজু করে নামাজ পড়’। ‘গ’তে গান শোনা ভালো নয় বাক্য ব্যবহার করা হয়েছে। এভাবে শিশুদের কোমল মনে ধর্মীয় অনুভূতি ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে। সমাজ ও সংস্কৃতিবিরোধী করে তোলা হচ্ছে। নাগরিক কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যে শিশুকে পড়ানো হচ্ছে, ‘গান শোনা ভালো নয়’, সে শিশু স্বাভাবিকভাবেই জাতীয় সংগীত গাওয়াকে ইসলামবিরোধী মনে করবে।

কিন্ডারগার্টেনের বইতে সাম্প্রদায়িক বিষয়বস্তু ঢোকানোর ফলে শুধু মুসলমান ছাত্রছাত্রীই নয়, অমুসলিম শিশুরাও এসব পড়তে বাধ্য হচ্ছে। সংবিধানে যে মূলনীতির সঙ্গে এ ধরনের শিক্ষা সাংঘর্ষিক। মূলত এসব সাম্প্রদায়িক শিক্ষার মাধ্যমে শিশুদের মনেও মৌলবাদের বীজ বপন করা হচ্ছে।

প্রাক-প্রাথমিকে যদি জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের বাইরের বই পড়াতে হয়, তাহলে শিক্ষবিদদের নিয়ে একটি কমিটি করতে পারে মন্ত্রণালয়। এ কমিটির অনুমোদনের পরই শিশুদের জন্য বই প্রকাশের সুযোগ পাবেন প্রকাশকরা। আর কিন্ডারগার্টেনগুলোকেও অনুমোদিত বই পড়ানোর বাধ্যবাধকতা দিতে হবে। সেই সঙ্গে যেসব প্রকাশনা সংস্থা এসব সাম্প্রদায়িক বই বের করেছে তাদের কালো তালিকাভুক্ত করতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। কিন্ডারগার্টেনগুলো যেন এদের কাছ থেকে বই না কিনে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। অভিভাবকরা যেন এসব বই না কিনে এবং শিশুদের না পড়ায়, সে ব্যাপারে তাদের সচেতন করতে হবে। সব কিন্ডারগার্টেনের জন্য আধুনিক, যুগোপযোগী ও বিজ্ঞানভিত্তিক পাঠ্যক্রম নির্ধারিত করে দিতে হবে।

দেশে যতগুলো কিন্ডারগার্টেন আছে, সেগুলোর নিবন্ধনের জন্য টাস্কফোর্স গঠন করতে হবে। যেসব কিন্ডারগার্টেন নিবন্ধন করবে না সেগুলো বন্ধ করে দিতে হবে।

সুত্র: দৈনিক সংবাদ

নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল বজ্রপাতে মাদরাসার ২১ ছাত্র আহত, হাসপাতালে ১১ - dainik shiksha বজ্রপাতে মাদরাসার ২১ ছাত্র আহত, হাসপাতালে ১১ যতো লিখেছি, ছিঁড়েছি তার বেশি - dainik shiksha যতো লিখেছি, ছিঁড়েছি তার বেশি তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি - dainik shiksha তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই কবির জন্মবার্ষিকী পালনের নির্দেশ - dainik shiksha সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই কবির জন্মবার্ষিকী পালনের নির্দেশ শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেই - dainik shiksha শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেই বিদ্যালয়ের ক্লাস থামিয়ে ভোট চাইলেন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী - dainik shiksha বিদ্যালয়ের ক্লাস থামিয়ে ভোট চাইলেন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0036699771881104