কী হবে জেএসসি, এসএসসি এইচএসসি ও বার্ষিক পরীক্ষার? | এইচএসসি/আলিম নিউজ

কী হবে জেএসসি, এসএসসি এইচএসসি ও বার্ষিক পরীক্ষার?

করোনা দুর্যোগে গত ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী ইঙ্গিত দিয়েছেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দীর্ঘায়িত হতে পারে। এছাড়া দেশের করোনার সংক্রমণের হারও একই ইঙ্গিত দেয়। এ অবস্থায় আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য জেএসসি, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠি

আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য জেএসসি, প্রাথমিক সমাপনী, আগামী বছরের (২০২১) ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য এসএসসি এবং আগামী এপ্রিলে অনুষ্ঠিতব্য এইচএসসি পরীক্ষার কী হবে তা নিয়ে নিয়ে নানাজনের মনে নানা প্রশ্ন।  শিক্ষা ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষাবোর্ডগুলোও এখনই কোনো সিদ্ধান্তও দিতে পারছে না সঙ্গত কারণেই। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মনে প্রশ্ন শিক্ষাবর্ষের ছয় মাস যদি পাঠদান ও অভ্যন্তরীণ পরীক্ষাই বন্ধ থাকে তাহলে কীভাবে পাবলিক পরীক্ষা দেবে লাখ লাখ শিক্ষার্থী? 

করোনার প্রাদুর্ভাবে চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত হয়েছে। এমনকি নতুন সময়সূচিও প্রকাশ করা যাচ্ছে না। এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশও অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। যদি সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হয়, তাহলে প্রাথমিকের প্রথম ও দ্বিতীয় সাময়িক এবং মাধ্যমিকের ষাণ্মাসিক পরীক্ষাও নেওয়া যাবে না। আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন পড়ালেখা বন্ধ রাখলে সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া ছাড়া ভিন্ন পথ খোলা থাকবে না। খোলার পর পাঠদান বাড়ানোর জন্য ঐচ্ছিক ছুটি কমানো এবং সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করা হতে পারে।

এ বিষযে জানতে চাইলে আন্তঃশিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান মুু. জিয়াউল হক বলেন, স্কুলের সাময়িক বা বার্ষিক পরীক্ষা কোনোভাবে নিতে পারবে স্কুলগুলো। কিন্তু পড়াশোনা না করতে পারলে, স্কুলে পাঠদান না হলে আগামী জেএসসি, ২০২১ সালের এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষা নিয়েই আশঙ্কা তৈরি হবে। তবে এ বিষয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সঙ্গে বৈঠক করে সিলেবাস কমানোর বিষয় সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তিনি জানান, যদি সেপ্টেম্বরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যায় তবে পরবর্তী মাসে চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া যাবে। এছাড়া ডিসেম্বরের মধ্যে ফল প্রকাশ করা যাবে।

সোমবার গণভবন থেকে রাজশাহী বিভাগের আট জেলার মাঠ প্রশাসনের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মতবিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানান, করোনা ভাইরাসের বর্তমান পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। তিনি বলেছেন, যখন করোনা থাকবে না, তখনই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে।

শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের একটি প্রস্তাব হলো, কোভিড-১৯-এর প্রভাব কমলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সপ্তাহের এক দিন একটি ক্লাসের শিক্ষার্থীদের ডাকা যেতে পারে। ঐদিন শুধু ঐ ক্লাসের শিক্ষার্থীরাই স্কুলে আসবে। পুরো সপ্তাহের পড়াটা ঐদিন শিক্ষার্থীদের দিয়ে দিতে হবে।

তবে, এই পরামর্শের বিপক্ষে বলেছেন শিক্ষক নেতা হাবিবুর রহমান। তিনি বলেছেন, এই শিক্ষার্থীরা কিভাবে স্কুল বা কলেজে আসবেন? স্কুল বা কলেজ তো খুলতেই হবে। এর সাথে যুক্ত অনেকেই।  

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. ফসিউল্লাহ বলেন, আগামী প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা কীভাবে নেওয়া যায় সেটা নিয়ে পরিকল্পনা তৈরি হচ্ছে।

অন্যদিকে সংকটে পড়েছে উচ্চশিক্ষাও। কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইনে তাদের সেমিস্টারের পাঠদান শেষ করেছে। ইউজিসির বাধ্যবাধকতা থাকায় অনলাইনে পরীক্ষা নিতে পারছে না। এমনকি পরবর্তী সেমিস্টারও শুরু করতে পারছে না। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, আমরা সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে মে মাসের প্রথম সপ্তাহে বসবো। একটা সেমিস্টার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এজন্য সাপ্তাহিক ও অন্যান্য ছুটির দিনে বিশ্ববিদ্যালয় খোলা রাখার বিষয়ে আমরা ভাবছি। আমরা অনলাইনে ক্লাস নিতে বলেছি। কিন্তু পরীক্ষা নিতে নিষেধ করা হয়েছে। 

এদিকে কতিপয় অর্থলোভী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে অনলাইনে পরীক্ষা ও সেমিষ্টারে প্রমোশন দিতে চায়। সরকার তাদের এই অপকর্ম বন্ধ করায় ক্ষুব্ধ হয়ে  তারা কয়েকটি অজনপ্রিয় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করিয়েছেন। এর মধ্যে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকানাধীন একটি অনলাইন পত্রিকাও রয়েছে। এছাড়া বিজ্ঞাপনের আশায় তিনটি প্রিন্ট জাতীয় পত্রিকায় অর্থলোভী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকদের একপেশে বক্তব্য প্রচার করে আসছে।