করোনাভাইরাসের পরিস্থিতিতে শিক্ষা কার্যক্রম সচল করার লক্ষ্যে অনলাইন ক্লাস শুরু করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি)। তবে নানা সমস্যার কারণে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার অর্ধেকেরও কম। কয়েকটি বিভাগে উপস্থিতি গণনা করা হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সুনির্দিষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত না থাকায় উপস্থিতির নম্বর নিয়ে বিপাকে পড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ১৫ জুলাই থেকে চালু হয় এ অনলাইন ক্লাস। উচ্চগতি সম্পন্ন ইন্টারনেটের অভাব, ইন্টারনেট প্যাকেজের উচ্চমূল্য, প্রত্যন্ত অঞ্চলে নেটওয়ার্ক না থাকা, ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইসিসসহ নানা কারণে বিভিন্ন বিভাগের বেশির ভাগ শিক্ষার্থী উপস্থিত হতে পারছেন না ক্লাসে। অনলাইন ক্লাস শুরু হলেও উপস্থিতির হার ৫০ শতাংশেরও কম।
এদিকে প্রতিটি বিভাগেই ক্লাসে উপস্থিতির উপর কিছু মার্ক বরাদ্দ থাকে। ৪০ নাম্বারের ইনকোর্সে ক্লাসে উপস্থিতির জন্য বরাদ্দ থাকে ৫ মার্ক। কোনো কোনো বিভাগে এটি ১০ মার্ক। এ উপস্থিতির হার ৬০ শতাংশ হলে একজন শিক্ষার্থীকে সেমিস্টার ফাইনালের অনুমতি দেয়া হয়। ৬০ শতাংশের কম বা ৪০ শতাংশের বেশি হলে নির্দিষ্ট পরিমাণ জরিমানা দিয়ে একজন শিক্ষার্থী সেমিস্টার ফাইনালে বসতে পারেন। কিন্তু ৪০ শতাংশের কম হলে সেমিস্টার ফাইনাল দিতে দেয়া হয় না। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, প্রশাসন থেকে সুস্পষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেয়া হয়নি। ফলে একদিকে অনলাইন ক্লাসের কারণে বৈষম্যের পাশাপাশি নম্বরেও বৈষম্যের সৃষ্টি হচ্ছে।
নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী অর্ক গোস্বামী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, অনেক শিক্ষার্থী ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে অনলাইন ক্লাসে যুক্ত হতে পারছেন না। এক্ষেত্রে উপস্থিতির হার ৬০-৭০ শতাংশের নিচে। ফলে তারা ক্লাস লেকচার এবং অ্যাটেনডেন্স নম্বরগুলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ পরিস্থিতিতে কেউ যাতে বৈষম্যের শিকার না হয়, সেজন্য অতি দ্রুত প্রশাসনকে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।
সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মুহ. আমিনুল ইসলাম আকন্দ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, উপস্থিতির এ ৫ মার্ক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে অন্য কোনো উপায়ে নেয়া যায় কি না সেটা ভাবতে হবে। যেমন এসাইনমেন্ট, কুইজ কিংবা অন্য কোনো কিছু নিয়ে এ ৫ মার্ক নেয়া যেতে পারে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমরা একটি মিটিংয়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি। আমাদের সিদ্ধান্ত খুব শীঘ্রই বিভাগীয় প্রধানদের জানিয়ে দেব।
যারা অস্বচ্ছল শিক্ষার্থী এবং যাদের ক্লাস করার মতো প্রয়োজনীয় ডিভাইস নেই তাদের নিয়ে কি ভাবছে প্রশাসন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমরা আগামী সিন্ডিকেটে সিদ্ধান্ত নেব। সরকারেরও একটি উদ্যোগ আছে। তবে সেটি আসতে আরও মাস খানেক সময় লাগবে। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কিছু দেয়া যায় কি না সেটি সিন্ডিকেটে সিদ্ধান্ত নেব।