কুবি সমাবর্তনকে ঘিরে পাহাড় কাটার উৎসব - দৈনিকশিক্ষা

কুবি সমাবর্তনকে ঘিরে পাহাড় কাটার উৎসব

কুবি প্রতিনিধি |

ভবন নির্মাণ, হলের সম্প্রসারণ, রাস্তা নির্মাণ এবং প্যান্ডেল তৈরিসহ নানা কারণে পাহাড় কাটা যেন উৎসবে পরিণত হয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি)।

চলতি বছরের ২৭ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে কেন্দ্রীয় মাঠে। সমাবর্তনকে সামনে রেখে প্যান্ডেল তৈরির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন লঙ্ঘন করে পাহাড় কাটছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

সরেজমিনে দেখা যায়, কুবির কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের উত্তর দিকের পাহাড় কেটে এর মাটি ট্রাক্টরে করে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। সেই মাটি দিয়ে কুবির কেন্দ্রীয় মাঠের বিভিন্ন জায়গা সমান করছেন তারা। এর আগেও পাহাড়টি কাটা হয়েছিল। বর্তমানে পাহাড়ের নিচের অংশ বেশি কাটার ফলে যে কোনো সময় পাহাড় ধসের সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা। তবে, এ পাহাড় কাটা কিংবা পাহাড়ের মাটি সমান করতে পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছ থেকে নেয়া হয়নি কোনো ছাড়পত্র।

লাল মাটির ক্যাম্পাস বলে খ্যাত দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের এ বিদ্যাপীঠ কুমিল্লার লালমাই পাহাড় অঞ্চলেই অবস্থিত। বিশ্ববিদ্যালয়টির বিভিন্ন ভবন দাঁড়িয়ে আছে উঁচু-নিচু পাহাড়ের ওপর কিংবা এর কোল ঘেঁষে। হরহামেসা পাহাড় কাটার ফলে পরিবেশ বিপন্নের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়টি হারাচ্ছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। এজন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা আমাদের পাহাড়ি ও ক্যাম্পাস নিয়ে গর্ব করি। প্রশাসন অপরিকল্পিতভাবে পাহাড় কেটে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করছে। 

শিক্ষার্থীরা প্রশাসনকে অনুরোধ করে বলেন, লাল পাহাড় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য। এগুলোকে রক্ষা করা প্রশাসন ও আমাদের দায়িত্ব। শুধু এবারই নয় এর আগেও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছোট-বড় টিলা ও পাহাড় কেটে সাবাড় করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সে সময়ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাংলাদেশ পরিবেশ অধিদফতর থেকে কোনো ছাড়পত্র নেয়নি। সর্বশেষ  বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের পশ্চিম পাশের পাহাড়ের বেশ অনেকটা অংশ স্কেভেটর সাহায্যে কেটে ফেলা হয়। সেই মাটি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে নির্মাণাধীন সড়কদ্বীপ ও ডরমেটরির নিচু স্থান ভরাট করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তাছাড়া বিভিন্ন সময়ে পাহাড় কেটে সেই মাটি বিক্রি করারও অভিযোগ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বিরুদ্ধে।

বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের (সংশোধন) ২০১০-এর ৬-এর ‘খ’ ধারায় বলা হয়েছে ‘কোনো পাহাড় বা টিলা কাটার যাবে না, তবে অপরিহার্য জাতীয় স্বার্থের প্রয়োজনে পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র গ্রহণক্রমে পাহাড় কাটার যাবে।’ আইনে পাহাড় বা টিলা কাটার জন্য ছাড়পত্রের বিধান থাকলেও পরিবেশ অধিদফতর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো অনুমতি নেয়নি বলে জানা যায়।

অনুমতির বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর কুমিল্লা কার্যালয়ের সদ্য সাবেক উপ-পরিচালক কামরুজ্জামান সরকার বলেন, কুবি প্রশাসন পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে পাহাড় কাটার কোনো অনুমতি নেয়নি। তবে জেলা প্রশাসন থেকে অনুমতি সাপেক্ষে করেছে কিনা সেটা জানা নেই।

কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীর বলেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পাহাড় কাটার বিষয়ে জেলা প্রশাসন থেকে কোনো অনুমতি নেয়নি।

দায়িত্বে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল লতিফ বলেন, প্রশাসনের নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করা হচ্ছে। পাহাড়ের নিচের অংশ কেটে এখানে ড্রেনের লাইন করা হবে।

পাহাড় কাটার কোনো নির্দেশনা প্রশাসন থেকে ছিল কিনা জানতে চাইলে রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আবু তাহের বলেন, সমাবর্তনের মাঠকে প্রস্তুত করার জন্য পাহাড়ের নিচে মাটির যে অংশটুকু ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে তা পরিষ্কার করতে বলা হয়েছে। তাছাড়া নিচু জায়গা ভরাট করার কথাও বলা হয়েছিল কিন্তু পাহাড় কেটে নষ্ট করতে বলা হয়নি। আমি এ বিষয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী বলেন, আমাকে জানিয়ে পাহাড় কাটা হয়নি। কোনো ধরনের পাহাড় কাটার অনুমতি আমি দেইনি।

স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের মানদণ্ড কী? - dainik shiksha শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের মানদণ্ড কী? অবসর-কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার কড়া তাগিদ - dainik shiksha অবসর-কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার কড়া তাগিদ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে সুপ্রিম কোর্টের ফতোয়ার রায় পাঠ্যপুস্তকে নিতে হবে - dainik shiksha সুপ্রিম কোর্টের ফতোয়ার রায় পাঠ্যপুস্তকে নিতে হবে সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি - dainik shiksha সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি - dainik shiksha বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.003803014755249