পুলিশের আন্তরিকতায় ঢাকা থেকে পালিয়ে আসার তিনদিন পর কুয়াকাটায় উদ্ধার হলো স্কুল-মাদরাসা পড়ুয়া চার শিক্ষার্থী। গত বৃহস্পতিবার রাতে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে মহিপুর থানা টহল পুলিশ তাদের উদ্ধার করে। উদ্ধার হওয়া শিশুরা হলো সুমাইয়া (১৩), তাসিব হোসেন(১৩), ইয়াসিন(১৬)ও ইব্রাহিম(১৬)। শুক্রবার (২৬ জুন) বিকালে মহিপুর থানা প্রাঙ্গনে তাদের অভিভাবকদের কাছে কিশোর-কিশোরীদের হস্তান্তর করা হয়।
এ সময় মহিপুর থানা পুলিশের সদস্যরা তাদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। পুলিশ জানায় করোনা আতংকে দীর্ঘদিন বাসায় গৃহবন্দী থাকার পর সবার অগোচরে বাসা থেকে বের হয়ে এই অ্যাডভেঞ্চারে বের হয় তারা।
পুলিশের কাছে উদ্ধার হওয়া কিশোরী সুমাইয়া দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানায়, সে ও তার প্রতিবেশী তাসিব ঢাকার কামরাঙ্গীরচর এলাকায় পরিবারের সাথে বসবাস করে। গত ২২ জুন সকাল ১০টার দিকে সুমাইয়া তার নানীর লকার থেকে টাকা নিয়ে তাসিবের সাথে বাসা থেকে বের হয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে রাতে সদরঘাট আসে। সেখান থেকে রাত ১১টায় শরীয়তপুরগামী লঞ্চে ওঠে। লঞ্চে তাদের সাথে কেরানীগঞ্জের ইয়াসিন ও ইব্রাহিমের পরিচয় হয় ও সখ্যতা গড়ে ওঠে। তারাও বাড়ি থেকে না বলে ওই লঞ্চে চড়ে বসে। ২৩ জুন ভোরে তারা নড়িয়া লঞ্চঘাটে নামে এবং সারাদিন নড়িয়া এলাকায় ঘুরে বেড়ায়। বিকালে চারজন আবার নড়িয়া থেকে ঢাকাগামী লঞ্চে ওঠে এবং রাত আটটায় সদরঘাট পৌছায়। তখন তারা বাসায় না গিয়ে বরিশাল হয়ে কুয়াকাটা যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় এবং বরিশালের লঞ্চে ওঠে।
সে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে আরও জানায়, ২৪ জুন সকালে বরিশাল পৌছে সেখান থেকে বাসে করে কুয়াকাটা আসে। দিনভর কুয়াকাটায় ঘুরে বেড়ানোর পর রাতে তারা হোটেল হানিমুনে রাত্রিযাপন করে। পরদিন ২৫ জুন সকালে সমুদ্র সৈকতে ঘুরতে বের হয়ে টাকা শেষ হয়ে গেলে সারা দিন না খেয়ে কাটায়। বাধ্য হয়ে তারা সঙ্গে থাকা মোবাইল ও ট্যাব বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেয়। এ সময় পুলিশ তাদের উদ্ধার করে।
মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, রাতেই উদ্ধার হওয়া কিশোর-কিশোরীদের পরিবারের সাথে কথা বলে তাদের নিখোঁজ হওয়ার খবর জানতে পারেন এবং তাদের নিয়ে যেতে মহিপুরে আসতে বলেন। শুক্রবার বিকালে তাদের অভিভাবকরা মহিপুর থানায় এলে কিশোর-কিশোরীদের পুলিশের পক্ষ থেকে ফুলের শুভেচ্ছা জানিয়ে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সন্তানদের ফিরে পেয়ে খুশি অভিভাবকরা পুলিশের এই আন্তরিবতায় তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।