ক্লাস শুরুর আগেভাগেই ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে মেডিকেল শিক্ষার্থীরা - দৈনিকশিক্ষা

ক্লাস শুরুর আগেভাগেই ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে মেডিকেল শিক্ষার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক |

ক্লাস শুরু হতে আরও এক ঘণ্টা বাকি। মাহজাবীন তাবাসসুম, ফাবিহা ইশরাত, রাবেয়া সুলতানা ও সাদিয়া ইসলাম ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে আগেভাগেই চলে এসেছেন। সেই কবে এখানে পা রেখেছিলেন। তাই অনেক দিন পর এসে এদিক–সেদিক ঘুরে দেখছেন তাঁরা।

 ১৮ মাস বন্ধ থাকার পর আজ সোমবার দেশের মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোয় ক্লাস শুরু হয়েছে। সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ক্লাস শুরুর বেশ আগেই শিক্ষার্থীরা চলে এসেছেন। কারও জন্য প্রথমবার এই প্রাঙ্গণে পা দেওয়া। আবার কারও হয়তো পুরোনো স্মৃতিতে ফিরে যাওয়া।

মাহজাবীনরা চার বন্ধু এক দিন আগেই হলে উঠেছেন। তাঁরা সবাই দ্বিতীয় বর্ষের। প্রথম দিনটা গুছিয়ে নেওয়া ও গল্প করেই কেটেছে। আজ সকালেই চারজন বেরিয়েছেন ক্যাম্পাস দেখতে। সাদিয়া ইসলাম বলেন, ‘করোনার আগে মাত্র তিন মাস ক্লাস হয় আমাদের। এরপর তো সব অনলাইনে চলে গেল। আজ ক্যাম্পাসটা ঘুরে দেখার জন্য আমরা আগে বের হয়েছি।’

হলের ব্যবস্থাপনা নিয়ে এই চার বন্ধু জানান, টুকটাক যে সমস্যা ছিল, তা কর্তৃপক্ষ ঠিক করে দিয়েছে। করোনার জন্য বাড়তি সতর্কতা হলে রয়েছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের একাডেমিক ভবনের প্রবেশদ্বার বেলুন দিয়ে সাজানো হয়েছে। ভেতরেও সাজসাজ রব। বহুদিন পর ভবনে প্রাণ ফিরেছে। তাঁদের বরণ করে নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের এই ছোট্ট আয়োজন।

ফরিদপুরের মো. মোস্তফা আমীর ফয়সালও গতকাল রোববার হলে উঠেছেন। তিনি এবার দ্বিতীয় বর্ষে। মোস্তফা বলেন, অনলাইন ক্লাসে তাত্ত্বিক বিষয় পড়া হলেও ব্যবহারিকের জন্য সশরীরে ক্লাসের বিকল্প নেই। এ ছাড়া অনেক দিন পর সবাইকে দেখে ভালো লাগছে। হলের স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে মোস্তফা বলেন, হলের পরিবেশ আগেও ভালো ছিল। তবে এবার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার প্রতি নজর বেশি দেওয়া হচ্ছে।

প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের অনলাইনে ওরিয়েন্টেশন একবার হলেও এবার অল্প সময়ের জন্য একটি আলোচনার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলে জানান ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ টিটো মিঞা। তিনি বলেন, অনেক দিন পর শিক্ষার্থীরা ফেরায় সবাই খুব উচ্ছ্বসিত। সরকারি নির্দেশনা মেনে কলেজ কর্তৃপক্ষ এক মাসের একটি রুটিন সাজিয়েছে। এক মাস পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তী সময়ের জন্য রুটিন করা হবে।

ছবি : সংগ্রহীত

অধ্যক্ষ টিটো মিঞা জানান, প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের জন্য তাত্ত্বিক ক্লাসগুলো অনলাইনে এখনো চলবে। ব্যবহারিক ক্লাসগুলো কলেজে হবে। এ ছাড়া পঞ্চম বর্ষের ক্লিনিক্যাল ক্লাসগুলো শিফট অনুযায়ী চলবে। তিনি আরও জানান, তাঁদের প্রায় সব শিক্ষার্থীই হল ও ক্লাসে উপস্থিত হয়েছেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসের ভেতরে ছোট্ট একটি বাগানের মতো আছে। সেখানে কেউ বহুদিন পর বন্ধুকে পেয়ে সেলফি তুলছেন।

টিকা নিশ্চিত করে দেশের সরকারি–বেসরকারি সব মেডিকেল কলেজেই আজ থেকে সশরীরে ক্লাস চলছে। সকালে ধানমন্ডির বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ঢুকতেই দেখা গেল প্রবেশদ্বারের বাইরে মো. লতিফ তাঁর মেয়ে আইরা জামানকে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। কলেজে মেয়েকে পৌঁছে দিতে এসেছেন। আইরা অপেক্ষা করছেন তাঁর বন্ধুর জন্য। মেডিকেল–জীবনের প্রথম সশরীরের ক্লাসে বন্ধুকে নিয়েই তিনি ঢুকবেন।

পাবনা থেকে পাপিয়া মতিন মেয়েকে নিয়ে এসেছেন। মেয়ে ক্লাস করছেন। তিনি পাশেই আরও কয়েকজন অভিভাবকের সঙ্গে বসে আছেন। তিনি জানান, কলেজের হোস্টেলে মেয়ে উঠেছেন। করোনা পরিস্থিতি এবং মেয়েকে একটু গুছিয়ে দিয়ে তিনি বাড়ি ফিরবেন। তবে ক্লাস শুরু হওয়ায় তিনি সন্তুষ্ট।

বাংলাদেশ মেডিকেলের একাডেমিক ভবনের নিচে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী সেলফি তুলছেন। বহুদিন পর বন্ধুদের এক ফ্রেমে ধরে রাখার চেষ্টা। রিয়াদুল হাসান নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, কলেজের বন্ধুদের কারও কারও সঙ্গে হয়তো দেখা হতো। কিন্তু ক্লাসের আনন্দ অন্যরকম।

বাংলাদেশ মেডিকেলের অধ্যক্ষ পরিতোষ কুমার ঘোষ বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিয়েছেন। শিক্ষার্থীদেরও তা মেনে চলার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। ক্লাসের উপস্থিতি সম্পর্কে বলেন, বিদেশি শিক্ষার্থীরা এখনো আসতে পারেনি। তাঁরা অনলাইনে অংশ নিচ্ছেন। তবে অন্যদের উপস্থিতি সন্তোষজনক।

কিরগিজস্তানে বাংলাদেশি ১২শ’ শিক্ষার্থীর আতঙ্কে দিন কাটছে - dainik shiksha কিরগিজস্তানে বাংলাদেশি ১২শ’ শিক্ষার্থীর আতঙ্কে দিন কাটছে বিলেত সফরে শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha বিলেত সফরে শিক্ষামন্ত্রী ডলার সংকটে কঠিন হচ্ছে বিদেশে উচ্চশিক্ষা - dainik shiksha ডলার সংকটে কঠিন হচ্ছে বিদেশে উচ্চশিক্ষা সুপাড়ি চুরির সন্দেহে দুই ছাত্রকে নির্যা*তন - dainik shiksha সুপাড়ি চুরির সন্দেহে দুই ছাত্রকে নির্যা*তন ডক্টরেট ডিগ্রি পেলো বিড়াল - dainik shiksha ডক্টরেট ডিগ্রি পেলো বিড়াল নামী স্কুলগুলোর ফলে পিছিয়ে পড়ার নেপথ্যে - dainik shiksha নামী স্কুলগুলোর ফলে পিছিয়ে পড়ার নেপথ্যে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0056190490722656