মেহেরপুরের গাংনীর বাঁশবাড়িয়া বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আনিচুজ্জামান লুইসের বিরুদ্ধে শিক্ষক নিয়োগের নামে কোটি টাকার বাণিজ্যের অভিযোগে বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ শিক্ষক কর্মচারীরা। অভিযুক্তের বিচারের দাবিতে গত ২৩ জানুয়ারি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এনিয়ে বিদ্যালয় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা নাজমুন নাহার অভিযোগ করেন, প্রতিবন্ধী শিশুর বিশেষ শিক্ষা নীতিমালা ২০১৮ অনুযায়ী ৮ জন শিক্ষক কর্মচারী নেওয়ার নিয়ম থাকলেও সভাপতির মৌখিক নির্দেশে বর্তমানে ২৩জন শিক্ষক কর্মচারী কর্মরত রয়েছেন। বিধি অনুযায়ী অনেকের শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকলেও প্রতিজনকে নিয়োগ দেওয়ার নামে ২ লাখ টাকা থেকে শুরু করে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিয়েছেন সভাপতি আনিচুজ্জামান লুইস। এখনও নতুন শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে তাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন তিনি। সব মিলিয়ে সভাপতি আনিচুজ্জামান লুইস কোটি টাকা বানিজ্য করেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, সার্বিক বিষয়ে তদন্ত করে সভাপতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত আবেদন করা হয়েছে। আর স্কুল বাঁচাতে গ্রাসবাসীর সাথে আলোচনা করে তালা লাগানো হয়েছে। যতদিন সমস্য সমাধান না হবে ততদিন বিদ্যালয় তালাবদ্ধ রাখা হবে।
সহকারী শিক্ষিকা শারমিন জানান, তাকে নিয়োগ দেওয়ার নামে ৩ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সভাপতি আনিচুজ্জামান লুইস। তিনি আরো বলেন, অন্তত ৩০ থেকে ৩৫ জন শিক্ষককে নিয়োগ দেওয়ার নামে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন সভাপতি আনিচুজ্জামান লুইস। অন্য শিক্ষক কর্মচারীরা জানান,কাউকেই এখন পর্যন্ত বিধি মোতাবেক নিয়োগ দেয়া হয়নি। নিয়োগের দাবি করলে নানা ভাবে নানা হয়রানী করা হয়।
কয়েকজন শিক্ষকের টাকা জমা দেওয়ার রশিদ যাচাই করে দেখা গেছে, গত ৮ আগষ্ট শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আনিচুজ্জামান লুইস স্বাক্ষর করে কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলার কাতলামারী গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে মো: হাসনাত রাব্বির কাছ থেকে ৩ লাখ, চৌগাছা গ্রামের সাজ্জাদ হোসেনের স্ত্রী বিউটি খাতুনের কাছ থেকে ৪ দফায় ১ লাখ, গাংনী বাজার পাড়ার সাহাদতের স্ত্রী হোজায়ফার কাছ থেকে ৬ দফায় ২ লাখ, বাঁশবাড়িয়ার লাকির কাছ থেকে ২ লাখ, রুবিনার কাছ থেকে ২ লাখ, আসাদুলের স্ত্রী শিলার কাছ থেকে ২ লাখ করে টাকা নিয়েছে। ইতোমধ্যে কয়েকজনের আংশিক টাকা ফেরতও দিয়েছেন সভাপতি আনিচুজ্জামান লুইস।
এবিষয়ে সভাপতি আনিচুজ্জামান লুইস জানান,সব কিছু নিয়ম মত করা হয়েছে। শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার নামে কোটি টাকার বাণিজ্যের অভিযোগের বিষয়ে তিনি কোন মন্তব্য না করে মোবাইল ফোন কেটে দেন।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিলারা রহমান জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়ে তদন্ত করার জন্য মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে দেয়া হয়েছে। সঠিক ভাবেই তদন্ত করার পর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।