সেপ্টেম্বরে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা শুরু হবে। দেশের মেডিক্যাল কলেজগুলো শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে গুচ্ছ পদ্ধতি অনুসরণ করলেও সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এখনো এ পদ্ধতির আওতায় আনতে পারেনি সরকার। এ ব্যাপারে রাষ্ট্রপতি দফায় দফায় তাগিদ দিলেও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যরা তাতে গুরুত্ব দেননি। তাই এবারও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে আগ্রহীদের এক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছুটতে হবে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে। এতে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অভিভাবকদেরও হতে হবে গলদঘর্ম।
গত ১৪ জানুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ‘স্নাতক প্রথম বর্ষে কেন্দ্রীয়ভাবে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ ও ভর্তি পদ্ধতির পলিসি গাইড লাইন প্রণয়ন’সংক্রান্ত সভায় এ বছর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়। শিক্ষা সচিব মো. সোহরাব হোসাইন বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নানসহ ইউজিসি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এতে উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে একটি কেন্দ্রীয় পরীক্ষার মধ্যে আসতে হবে। কিন্তু সবশেষে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার দিকে না গিয়ে এরই মধ্যে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষার পৃথক সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করেছে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের সংগঠন ‘বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদ’।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সম্প্রতি এ ব্যাপারে বলেন, আমরা চেষ্টা করেও সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা এ বছর শুরু করতে পারছি না। আগামীতে উপাচার্যরা এ পরীক্ষার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে আশা প্রকাশ করেন মন্ত্রী। গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা না হওয়ায় এ বছরও শিক্ষার্থীদের পোহাতে হবে অবর্ণনীয় ভোগান্তি। ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেন, ‘মহামান্য রাষ্ট্রপতি ২০১৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন। এরপর এ ব্যাপারে বেশ কয়েকবার তাগিদ দেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের নিয়ে এ ব্যাপারে বৈঠকও করেছি। কিন্তু কিছু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অসহযোগিতার কারণে এবার এ পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।’ তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সমন্বিতভাবে পরীক্ষা নিতে ইউজিসির সদিচ্ছার কমতি নেই।
বর্তমানে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে আলাদাভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়। ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে শিক্ষার্থীদেরও দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটতে হয়। টানা দেড়-দুই মাস শিক্ষার্থীদের এক দুঃসহ ভর্তিযুদ্ধে অবতীর্ণ হতে হয়। আর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষাকে পুঁজি করে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় কোচিং সেন্টারগুলো। অভিভাবকরা বলছেন, ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে কোটি কোটি টাকা আয় করে নিজেদের পকেট ভারী করেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা। গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা হলে এ টাকা থেকে বঞ্চিত হবেন তারা। তাই শিক্ষকরা গুচ্ছ পদ্ধতিতে আসছেন না।
সৌজন্যে: বাংলাদেশ প্রতিদিন