গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা : কেন্দ্র পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় ভোগান্তিতে ভর্তিচ্ছুরা - দৈনিকশিক্ষা

গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা : কেন্দ্র পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় ভোগান্তিতে ভর্তিচ্ছুরা

নিজস্ব প্রতিবেদক |

বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসি পাস করা ধনঞ্জয় চন্দ্র দাসের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লায়। প্রথমবারের মতো দেশের ২০ সাধারণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে অনুষ্ঠেয় গুচ্ছ পদ্ধতির চূড়ান্ত ভর্তি পরীক্ষায় আবেদনের সময় ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্রের পছন্দক্রম দিয়েছিলেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়সহ আশপাশের পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ে। তবে পছন্দের এসব কেন্দ্রের একটিতেও না পড়ে তাঁর সিট পড়েছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এতে তাঁর ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

ধনঞ্জয় বলেন, ‘যেসব জায়গা আমার পরিচিত সেখানে আমার সিট পড়েনি। ভর্তি পরীক্ষা দিতে আমাকে এখন একা খুলনায় যেতে হবে। যেটা আমার কাছে সম্পূর্ণ অপরিচিত। খুলনায় আমি কার কাছে থাকব, সে ব্যবস্থাও নাই। এটা তো একধরনের হয়রানি। একা অপরিচিত জায়গায় যে আমি কতটা নিরাপদে থাকব, তা নিয়েও চিন্তায় আছি।’

শুধু ধনঞ্জয়ই নয়, পছন্দক্রম অনুযায়ী আসন না পড়ায় ভর্তি-ইচ্ছুকদের বড় একটি অংশ আসনবিন্যাসের পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। সাভার মডেল কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসি পাস করা দিবাকার বিনতে আলমের বাসা ঢাকায়। বাসা থেকে সামান্য দূরত্বে অবস্থিত শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রকে প্রথম পছন্দ হিসেবে মনোনীত করেন। কিন্তু এ শিক্ষার্থীর কেন্দ্র পড়েছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে। স্বপ্নিল হাসান সজীব নামে আরেক ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীর গ্রামের বাড়ি রংপুর। কিন্তু তাঁর কেন্দ্র পড়েছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে।

এসব শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, ভোগান্তি, হয়রানি এবং অর্থ খরচ কমাতে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন

করা হলেও প্রকৃতপক্ষে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি বেড়েছে। কারণ, এর আগে হঠাৎ করে চূড়ান্ত আবেদন ফি ৬০০ থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার ২০০ টাকা করা হয়েছে। এমন কেন্দ্রে আসন পড়েছে, যেখানে অনেকে আগে কখনো যায়নি। এ ছাড়া পছন্দমতো যদি আসন নাই দিতে পারে, তাহলে পছন্দক্রম পদ্ধতি রাখার মানে হয় না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা আয়োজক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, কেন্দ্র যেখানে পড়েছে সেখানেই ভর্তি-ইচ্ছুকদের পরীক্ষা দিতে হবে। এটা পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নেই। কেন্দ্র নির্বাচনের ক্ষেত্রে ১০০ নম্বরের যে মাপকাঠি নির্ধারণ করা হয়েছে সে অনুযায়ীই কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে আয়োজক কমিটির কোনো হাত ছিল না। এ ছাড়া ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা ছবি পরিবর্তনসহ অন্য কোনো সমস্যায় পড়লে তাঁদের গুচ্ছভুক্ত কাছাকাছি যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগাযোগ করতে পরামর্শ দেন তিনি।

এদিকে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এ রকম শিক্ষার্থীর সংখ্যা মোট শিক্ষার্থীর মাত্র ১০ শতাংশের মতো হবে। অধিকাংশ শিক্ষার্থী রাজধানীতে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রগুলোতে পরীক্ষা দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে একসঙ্গে ১০ হাজার ৯১৫ জনের পরীক্ষা নেওয়ার ধারণক্ষমতা আছে কিন্তু সেখানে প্রথম পছন্দের আবেদন ছিল ৩৭ হাজার ৭৪৯ জনের। আবার শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫ হাজার জনের পরীক্ষা নেওয়ার ধারণক্ষমতা থাকলেও সেখানে আবেদন করেছিলেন ২০ হাজার ৮৯৪ জন। ফলে নির্ধারিত আসনের বেশিসংখ্যক শিক্ষার্থী পছন্দ থাকায় যাঁরা স্কোরে এগিয়ে ছিলেন, তাঁরাই পরীক্ষার আসন পেয়েছেন। একই কেন্দ্রকে অনেকে পছন্দ হিসেবে দেওয়ায় স্কোরের ভিত্তিতে আসনবিন্যাস করা হয়েছে। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে বেশি শিক্ষার্থী পরীক্ষা দেওয়ায় এ সমস্যা হয়েছে।

কেন্দ্র নির্বাচনের ক্ষেত্রে ভর্তি-ইচ্ছুকদের স্কুল, কলেজের অবস্থানসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরির ওপর ভিত্তি করে ১০০ নম্বরের মাপকাঠি নির্ধারণ করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের প্রাপ্ত স্কোর ও কেন্দ্রের পছন্দক্রমের ভিত্তিতে পরীক্ষা কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে। সবকিছুই সফটওয়্যারের মাধ্যমে হয়েছে। এতে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজক কমিটির কোনো হাত ছিল না।

এর আগে ৭ অক্টোবর থেকে ভর্তি পরীক্ষার প্রবেশপত্র ডাউনলোড কার্যক্রম শুরু হয়ে শনিবার রাত ১২টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র ডাউনলোড করার সুযোগ দেওয়া হয়। ১৭ অক্টোবর বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত ‘ক’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার মধ্য দিয়ে ২০ বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ ভর্তিতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর ২৪ অক্টোবর মানবিক বিভাগ ও ১ নভেম্বর বাণিজ্য বিভাগের ভর্তি পরীক্ষার মধ্য দিয়ে এবারের ২০ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা শেষ হবে।

এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা - dainik shiksha শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0039401054382324